কোরিয়ার ‘ক্রিপ্টো বসের’ বিরুদ্ধে জালিয়াতির মামলা যুক্তরাষ্ট্রে

গত বছর ব্যপক ধসের মুখে পড়া এই সিঙ্গাপুর ভিত্তিক কোম্পানিটি ‘টেরা লুনা’ ও ‘টেরাইউএসডি’ নামের ক্রিপ্টো টোকেন তৈরি করত।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Feb 2023, 09:16 AM
Updated : 18 Feb 2023, 09:16 AM

দক্ষিণ কোরিয়ার ব্যর্থ ক্রিপ্টোমুদ্রার উদ্যোক্তা ডো কুওন ও তার কোম্পানি ‘টেরাফর্ম ল্যাবস’-এর বিরুদ্ধে ‘শত শত কোটি ডলারের বেশি ক্রিপ্টো সম্পদ জালিয়াতির’ অভিযোগ তুলেছে যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

গত বছর ব্যপক ধসের মুখে পড়া এই সিঙ্গাপুর ভিত্তিক কোম্পানিটি ‘টেরা লুনা’ ও ‘টেরাইউএসডি’ নামের ক্রিপ্টো টোকেন তৈরি করত।

বিবিসি’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই ধসের কারণে বিনিয়োগকারীদের চার হাজার কোটি ডলারের বেশি লোকসান গুনতে হয়েছে।

এই প্রসঙ্গে বিবিসি কুওন ও তার কোম্পানি টেরাফর্ম ল্যাবসের মন্তব্য জানতে চাইলে তারা মুখ খোলেননি।

“আমাদের অভিযোগ, টেরাফর্ম ও ডো কুওন জনসাধারণকে ন্যায্য ও পূর্ণাঙ্গ সত্যি তথ্য প্রকাশের পাশাপাশি ক্রিপ্টো সম্পদের নিরাপত্তা, বিশেষ করে ‘লুনা’ ও টেরাইউএসডি’ সম্পর্কে দরকারি বিষয়গুলো জানাতে ব্যর্থ হয়েছে।” --এক বিবৃতিতে বলেন যুক্তরাষ্ট্রের ‘সিকিউরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)’র চেয়ারম্যান গ্যারি গেনসলার।

“আমরা আরও অভিযোগ করছি, তারা ভুল বিশ্বাস তৈরি করে ও ক্রমাগত বিভ্রান্তিকর বিবৃতি দিয়ে বিনিয়োগকারীদের ব্যপক ক্ষতির মুখে ফেলেছে।”

‘এসইসি’র তথ্য অনুসারে, কুওন ও তার কোম্পানি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে শত শত কোটি ডলার তুলে তাদের ‘ক্রিপ্টো সম্পদ স্যুট’ বিক্রি করেছে, যেখানে অনেক লেনদেনই অনিবন্ধিত।

সংস্থাটির অভিযোগে আরও উঠে এসেছে, কুওন ও টেরাফর্ম ক্রমাগত দাবি করে এসেছে, এইসব টোকেনের মূল্য বাড়বে। পাশাপাশি, টেরাইউএসডি’র স্থিতিশীলতা নিয়েও তারা বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত করেছে।

গত বছরের মে মাসে এই টোকেন ও সম্পৃক্ত ক্রিপ্টোমুদ্রা লুনা’র মূল্য কমে দাঁড়িয়েছে শূন্যের কাছাকাছি।

ব্লকচেইন বিশ্লেষক কোম্পানি ‘এলিপটিকের’ তথ্য অনুযায়ী, বৈশ্বিকভাবে টেরাইউএসডি ও লুনা’র বিনিয়োগকারীরা খুইয়েছেন আনুমানিক চার হাজার দুইশ কোটি ডলার।

এর পতনের ফলে বিটকয়েন, ইথেরিয়াম ও টিথারের মতো শীর্ষস্থানীয় ক্রিপ্টোর বিক্রিও বন্ধ হয়েছে। এক পর্যায়ে, ‘ক্রিপ্টোক্র্যাশ’ শব্দটিও অনলাইনে ‘ট্রেন্ড’ হয়েছে।

“আমার উদ্ভাবন আপনাদের সকলের জন্য যে যন্ত্রণা বয়ে এনেছে তাতে আমার হৃদয় ভেঙে গেছে।” --সে সময় বলেন কুওন।

এসইসি’র অভিযোগে অন্যান্য বিষয় থাকলেও, কুওনের অবস্থান সম্পর্কে এতে কিছু উল্লেখ নেই।

ডিসেম্বরে দক্ষিণ কোরিয়ার কর্তৃপক্ষ কুওনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলেও তাদের অনুমান বলছে, তিনি সম্ভবত সার্বিয়ায় অবস্থান করছেন।

এর আগে পলাতক থাকার বিষয়টি কুওন অস্বীকার করলেও তিনি নিজের অবস্থান প্রকাশ করেননি।

“যোগাযোগে আগ্রহী যে কোনো সরকারী সংস্থাকে আমরা পুরোপুরি সহযোগিতা করবো। আর আমাদের লুকানোর কিছু নেই।” --টুইটে বলেন তিনি।

এদিকে, নিজ দেশ দক্ষিণ কোরিয়ায় জালিয়াতি ও পুজিবাজার আইন লঙ্ঘনের অভিযোগও আছে কুওনের বিরুদ্ধে।