স্ন্যাপচ্যাটের ওপর গুপ্তচরবৃত্তির প্রকল্প চালু করেছিলেন জাকারবার্গ

এ প্রকল্পের ‘ওয়্যারট্যাপিং টুল’ হিসেবে কাজ করেছে কোম্পানির নিজস্ব ভিপিএন ‘ওনাভো’, যা ২০১৩ সালে এক ইসরায়েলি কোম্পানির কাছ থেকে কিনেছিল ফেইসবুক।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 March 2024, 02:09 PM
Updated : 28 March 2024, 02:09 PM

মেসেজিং সেবা স্ন্যাপচ্যাট ব্যবহারকারীদের ডেটায় গোপনে গুপ্তচরবৃত্তি চালিয়েছে ফেইসবুক, এমনই উঠে এসেছে নতুন এক নথিতে।

প্রকল্পটির অভ্যন্তরীণ নাম ছিল ‘প্রজেক্ট গোস্টবাস্টার্স’, যা ২০১৬ সালে চালু করেছিলেন মেটার সিইও মার্ক জাকারবার্গ। এর আগে প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানিটির প্রাইভেসি ব্যবস্থা নিয়ে তিনি বিরক্ত ছিলেন বলে উঠে এসেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্টের প্রতিবেদনে।

“যখনই কেউ স্ন্যাপচ্যাট নিয়ে প্রশ্ন করেন, তখন এর প্রচলিত জবাব হয়ে থাকে যেহেতু এর ট্রাফিকিং ব্যবস্থা এনক্রিপ্ট করা, তাই তাদের নিয়ে বিশ্লেষণ করার কোনও উপায় নেই,” ২০১৬ সালের ৯ জুন কোম্পানির নির্বাহী কর্মকর্তাদের পাঠানো ইমেইল বার্তায় লেখেন জাকারবার্গ।

“তারা যত দ্রুত এগোচ্ছে, তা দেখে তাদের সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়ার নতুন উপায় খোঁজা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য আমাদের সম্ভবত বিভিন্ন প্যানেল তৈরি করতে হবে বা কোনও কাস্টমাইজ করা সফটওয়্যার বানাতে হবে। আর সেটা কীভাবে করা যায়, তা আপনাদের খুঁজে বের করা উচিৎ।”

আদালতের নথিতে দেখা যায়, বর্তমানে ফেইসবুকের সিওও পদে দায়িত্বরত হাভিয়ের অলিভান ইমেইল বার্তার জবাবে লিখেছিলেন, “এটা যে বাজার বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন, যার জবাব আমাদেরকেই দিতে হবে, তার সঙ্গে পুরোপুরি একমত আমি।”

এ প্রকল্পের ‘ওয়্যারট্যাপিং টুল’ হিসেবে কাজ করেছে কোম্পানির নিজস্ব ভিপিএন ‘ওনাভো’, যা ২০১৩ সালে এক ইসরায়েলি কোম্পানির কাছ থেকে কিনেছিল ফেইসবুক। তবে, এখন এর ব্যবহার বন্ধ হয়ে গেছে।

আদালতের নথি অনুসারে, ওনাভোর মালিকানা হাতে পেয়ে বিভিন্ন প্রতিদ্বন্দ্বী সোশাল মিডিয়া অ্যাপে নজরদারি চালানোর সুযোগ পেয়েছিল ফেইসবুক, যেখানে অ্যাপগুলো ও এর সার্ভারগুলোর মধ্যে বিভিন্ন ‘ব্যাঘাত ঘটানো ও ডেক্রিপ্ট করতে সক্ষম’ ট্রাফিকিং নেটওয়ার্ক পাঠিয়েছিল কোম্পানিটি।

২০১৬ সালে জাকারবার্গের পাঠানো ইমেইল বার্তার পর ওনাভোর প্রকৌশলীরা ‘তৃতীয় পক্ষ হিসেবে’ নজরদারি চালাতে বিভিন্ন এমন টুল তৈরি করেন, যার মাধ্যমে তারা বিভিন্ন এমন তথ্য পড়ার সুযোগ পেয়েছেন, যেগুলো অন্যথায় এনক্রিপ্ট করা ছিল।

এ নজরদারির কৌশল, যেখানে অ্যাপের অভ্যন্তরীণ কার্যক্রমের বিস্তারিত তথ্য হাতে পাওয়ার সক্ষমতা আছে, তা পরবর্তীতে অ্যামাজন ও ইউটিউবেও ব্যবহার করেছিল কোম্পানিটি।

এ নতুন প্রকাশিত আদালতের নথিটি এসেছে ক্যালিফোর্নিয়ায় ফেইসবুকের মালিক কোম্পানি মেটার বিরুদ্ধে গ্রাহকদের দায়ের করা ক্লাস অ্যাকশন মামলা থেকে।

বাদীপক্ষের আইনজীবিদের তথ্য অনুসারে, “এ প্রকল্পের মূল লক্ষ্যমাত্রা ছিল প্রতিযোগীদের ক্ষতি সাধন করা, যার মধ্যে রয়েছে ফেইসবুকের তৎকালীন প্রতিদ্বন্দ্বী স্ন্যাপচ্যাটও।”

এ প্রসঙ্গে মেটা ও স্ন্যাপচ্যাটের মালিক কোম্পানি স্ন্যাপের মন্তব্য জানতে চেয়েছিল ইন্ডিপেন্ডেন্ট।