চীনের ভ্যাক্সিন’কে ‘হারাম’ বা ইসলামী আইনে নিষিদ্ধ বলেও ব্যাখ্যা করা হয়েছে, যেখানে কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে এর মধ্যে শূকরের বিভিন্ন উপাদান ব্যবহারের বিষয়টিকে।
Published : 17 Jun 2024, 01:35 PM
মহামারী চলাকালীন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ভুয়া অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে ফিলিপিন্সে চীনের কোভিড ভ্যাক্সিন’কে উদ্দেশ্য করে গুজব ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে মার্কিন সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে।
এই ‘অ্যান্টি-ভ্যাক্স’ প্রচারণার স্থায়িত্ব ছিল ২০২০ সালের বসন্ত থেকে ২০২১ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত। আর ‘পেন্টাগনের বিবেচনায়, ফিলিপিন্সে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ঠেকানোই’ এর মূল উদ্দেশ্য ছিল বলে উঠে এসেছে রয়টার্সের তদন্ত প্রতিবেদনে।
২০২১ সালে ফিলিপিন্সে ভ্যাক্সিন নেওয়ার মাত্রা কমতে দেখা গিয়েছিল, যদিও বেশ কয়েক মাস আগেই চীনের সিনোভ্যাক ভ্যাক্সিন চলে এসেছিল দেশটিতে। আর সে বছরের নভেম্বর পর্যন্ত কোভিডে আক্রান্ত হয়ে নথিভূক্ত মৃত্যুর সংখ্যা ছিল প্রায় ৫০ হাজার।
এদিকে, ২০২০ সালের এক টুইটকে মার্কিন অ্যান্টি-ভ্যাক্স প্রচারণার উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেছে রয়টার্স। এতে বলা হয়, “কোভিড এসেছে চীন থেকে, আর এর ভ্যাক্সিনও এল চীন থেকেই, তাই চীনকে বিশ্বাস করা যাবে না!”
এমনকি প্রচারণায় চীনের ভ্যাক্সিন’কে ‘হারাম’ বা ইসলামী আইনে নিষিদ্ধ বলেও ব্যাখ্যা করা হয়েছে, যেখানে কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে এর মধ্যে শূকরের বিভিন্ন উপাদান ব্যবহারের বিষয়টিকে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, সামাজিক মাধ্যম এক্স, ফেইসবুক ও ইনস্টাগ্রামে পেন্টাগনের গুজবভিত্তিক অ্যাকাউন্ট থাকলেও ২০২০ সালের শেষে ফেইসবুকের নির্বাহীরা সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন, তারা অ্যাকাউন্টগুলো শনাক্ত করেছেন ও সেগুলো প্ল্যাটফর্মের নীতিমালা লঙ্ঘন করছে।
তবে পেন্টাগন সেইসব অ্যাকাউন্ট থেকে নিজেদের ভ্যাক্সিনবিরোধী প্রচারণা বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর এর মধ্যে কয়েকটি অ্যাকাউন্ট পরবর্তীতে আর সরানো হয়নি। রয়টার্স বলছে, তাদের তদন্তে সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ অন্তত এমন তিনশটি অ্যাকাউন্টের খোঁজ মিলেছে, যেগুলো এইসব প্রচারণার অংশ ছিল। আর এদেরকে বট অ্যাকাউন্ট হিসেবে চিহ্নিত করে সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোভিড-১৯ ছড়ানোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যোগসূত্র আছে, চীনা সরকার এমন অবান্তর দাবি তোলার পরপরই এ প্রচারণার সূত্রপাত ঘটেছে। চীনের ভুল তথ্য ছড়ানোর প্রচারণার বিষয়টি উল্লেখ করে এক বিবৃতিতে পেন্টাগনের এক মুখ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্র দেশগুলোকে লক্ষ্য করে পরিচালিত আক্রমণ ঠেকাতে বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে থাকে মার্কিন সামরিক বাহিনী, যার মধ্যে রয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও।