জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তির উত্থানের পর গোটা বিশ্বেই চিপের চাহিদা বেড়েছে, যেখানে আরও টেকসইভাবে বিস্তৃত হওয়ার সম্ভাবনা দেখাচ্ছে এ খাত।
Published : 09 Jul 2024, 03:58 PM
বিশ্বের সবচেয়ে দামী কোম্পানির এলিট ক্লাবে এবার প্রবেশ ঘটেছে তাইওয়ানের চিপ জায়ান্ট টিএসএমসি’র। এর থেকে প্রমাণ মেলে, জেনারেটিভ এআই খাতে বিপ্লব গোটা ওয়াল স্ট্রিটকেই নাড়িয়ে দিয়েছে।
গেল সোমবার কিছু সময়ের জন্য ট্রিলিয়ন ডলারের বাজারমূল্য স্পর্শ করে নিউ ইয়র্ক ও তাইওয়ান উভয় অঞ্চলের শেয়ারবাজার তালিকায় থাকা টিএসএমসি। এমনকি টেসলাকে ছাড়িয়ে বিশ্বের সবচেয়ে দামী প্রযুক্তি কোম্পানির তালিকায় সপ্তম অবস্থানে উঠে এসেছে কোম্পানিটি।
একই দিনে গুগল, অ্যাপল ও মেটার মতো প্রযুক্তি জায়ান্টরাও নিজেদের সর্বোচ্চ শেয়ারমূল্য দেখেছে।
এ মুহুর্তে বিশ্বের সবচেয়ে দামী ১০টি কোম্পানির তালিকায় নেতৃত্ব দিচ্ছে মাইক্রোসফট ও অ্যাপল। আর তাদের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে এআই চিপ জায়ান্ট এনভিডিয়া, যেখানে ওয়াল স্ট্রিটে আবারও তিন ট্রিলিয়ন ডলারের বৈশ্বিক বাজারমূল্য ছাড়িয়েছে কোম্পানিটি।
এ তালিকায় পরবর্তী অবস্থান যথাক্রমে গুগল ও অ্যামাজনের, যারা সম্প্রতি দুই ট্রিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে।
তালিকায় ষষ্ঠ অবস্থানে নেমে গেছে সৌদি তেল জায়ান্ট ‘আরামকো’, যেখানে পরবর্তী অবস্থান যথাক্রমে টিএসএমসি ও টেসলার।
“এসঅ্যান্ডপি ৫০০’ সূচকে সেমিকন্ডাক্টর শিল্প এখন নেতৃস্থানীয় খাত,” সম্প্রতি বলেন বাজার গবেষণা কোম্পানি ‘সিএফআরএ’র বিশ্লেষক অ্যাঞ্জেলো জিনো।
“এমনটা ঘটেছে গত ১৫ বা ১৮ মাসে। এর থেকে আপনি বুঝতে পারেন, পৃথিবী কতোটা বদলে গেছে।”
জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তির উত্থানের পর গোটা বিশ্বেই চিপের চাহিদা বেড়েছে, যেখানে আরও টেকসইভাবে বিস্তৃত হওয়ার সম্ভাবনা দেখাচ্ছে এ খাত।
চিপ নির্মাতা কোম্পানিগুলো শুধু বিনিয়োগকারীদেরই আকৃষ্ট করছে না, বরং তারা সরকারিভাবেও ভর্তুকি পাচ্ছে।
উদাহরণ হিসেবে ধরা যায় বাইডেন প্রশাসনকে, যারা সামনের কয়েক বছর যুক্তরাষ্ট্রে চিপ কারখানা নির্মাণে সহায়তার লক্ষ্যে শত শত কোটি ডলারের আর্থিক অনুদানে অনুমোদন দিয়েছে।
সেমিকন্ডাক্টর ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুসারে, ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট, মাইক্রোপ্রসেসর ও মেমরি চিপ’সহ গোটা বিশ্বের সেমিকন্ডাক্টর খাতে বিক্রি বেড়ে গিয়ে পৌঁছাতে পারে ৬১ হাজার ১২০ কোটি ডলারে, যা এ খাতের পণ্য বিক্রিতে নতুন রেকর্ড তৈরির সম্ভাবনা দেখাচ্ছে।
সংস্থাটি বলছে, ২০২৪ সালে এ খাতে বিক্রি বাড়তে পারে ১৬ শতাংশ পর্যন্ত। এমনকি ২০২৫ সালে আরও সাড়ে ১২ শতাংশ বিক্রি বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
এর সুফল ভোগ করার ক্ষেত্রে ভালো অবস্থানেই আছে টিএসএমসি, যেখানে তাদের বেশিরভাগ কারখানাই তাইওয়ানভিত্তিক।
এদিকে, এনভিডিয়া চিপ নকশা করলেও তারা উৎপাদন করে না। তবে, এর পরও নিজস্ব সরবরাহ চেইনে শক্ত অবস্থান ধরে রেখেছে কোম্পানিটি। প্রচলিত ধারণা হচ্ছে, তাদের পণ্যের বড় অংশের উৎপাদক হিসেবে কাজ করে টিএসএমসি।
বৈশ্বিক সেমিকন্ডাক্টর চাহিদার অর্ধেকই এ তাইওয়ানীয় জায়ান্ট কোম্পানিটির নিয়ন্ত্রণে, যারা বছরের প্রথম প্রান্তিকে এক হাজার ৮৮৭ কোটি ডলারের পণ্য বিক্রি করেছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এটি ১৩ শতাংশ বেশি, যার ফলে তাদের নেট আয় নয় শতাংশ বেড়ে পৌঁছেছে ৬৯৭ কোটি ডলারে।
অন্যদিকে, প্রথম প্রান্তিকে এনভিডিয়ার আয় এক হাজার ৪৯০ কোটি ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় সাত গুণ বেশি।