“পুঁজিবাজারে আমার কিছুই পাইনি। স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য পুঁজিবাজারকে সঙ্গে রাখতে হবে,” বলেন ডিএসই চেয়ারম্যান।
Published : 06 Jun 2023, 03:54 PM
অর্থমন্ত্রী ‘স্মার্ট বাংলাদেশে’ পৌঁছানোর প্রত্যাশা রেখে যে বাজেট সংসদে দিয়েছেন, তাতে পুঁজিবাজারের জন্য ‘কিছু নেই’ মন্তব্য করে হতাশা প্রকাশ করেছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান হাফিজ মো. হাসান বাবু।
তিনি বলেছেন, পুঁজিবাজারের এই ‘ব্যথার’ কথা তারা সরকারের কাছে তুলে ধরবেন। পুঁজিবাজারের জন্য ছয়টি বিষয় বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি থাকবে সেখানে।
প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে ডিএসইর প্রতিক্রিয়া জানাতে মঙ্গলবার ঢাকার পল্টনের একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে আসেন হাফিজ মো. হাসান বাবু।
তিনি বলেন, “পুঁজিবাজারে আমার কিছুই পাইনি। স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য পুঁজিবাজারকে সঙ্গে রাখতে হবে।”
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল গত ১ জুন জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য সাত লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকার এই বাজেট উত্থাপন করেন। সেখানে পুঁজিবাজার নিয়ে নতুন কোনো উদ্যোগ না থাকায় এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ।
ডিএসই চেয়ারমান বলেন, “পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সবচেয়ে বড় যে কাজটি হয়নি– তা হচ্ছে, সকলে মিলে একত্রে চাইনি বলেই হয়নি। পুঁজিবাজার উন্নয়নে সকলের সহযোগিতা চাই।”
বিনিয়োগকারীদের ‘আস্থাহীনতাকে’ পুঁজিবাজারের অন্যতম বড় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেন হাফিজ। তিনি বলেন, “ছোট্ট হাত বাড়িয়ে দিলে ঘুরে দাঁড়াবে এই বাজার। পুঁজিবাজারের বিষয়টি বাজেটে আনতে পারলে সরকারের বাজেট জনগণের বাজেটে পরিণত হবে।”
ছয়টি দাবি চলতি বাজেট আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত করতে অর্থমন্ত্রী, পরিকল্পনা মন্ত্রী ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে চিঠি দেওয়ার কথা জানান তিনি।
বিদেশি কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত করতে সরকারে পক্ষ থেকে সহযোগিতা করার পাশাপাশি তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে কর হারের ব্যবধান ১০ শতাংশ করার দাবি রয়েছে এর মধ্যে।
বর্তমানে তালিকাভুক্ত কোম্পানি অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির চেয়ে ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ পয়েন্ট কম কর দেয়। তবে ব্যাংক, বীমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, টেলিকম, টোবাকো খাত এর বাহিরে। কর হারের এই ব্যবধান বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হলে কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্ত হতে আগ্রহী হবে বলে মনে করেন ডিএসই চেয়ারমান।
তাদের অন্য দাবিগুলো হল–বিনিয়োগকারীদের দেওয়া লভ্যাংশের ওপর দ্বৈত কর প্রত্যাহার করে বন্ডের ওপর কেটে রাখা অগ্রিম করকে চূড়ান্ত কর হিসেবে বিবেচনা করা; শেয়ার লেনদেন কর শূন্য দশমিক ০৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক ০১৫ শতাংশ করা; এসএমই বোর্ডে তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে কর ব্যবধান ১০ শতাংশ করা এবং তালিকাভুক্ত কোম্পানির ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে নামিয়ে ১০ শতাংশ করা।
বাংলাদেশে এসএমই মার্কেটের মূলধনের আকার ১২ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন টাকা, অথচ এ খাতের মাত্র ১৬টি কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত। পাশের দেশ ভারতে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ৯৭ শতাংশই এসএমই খাতের।
ডিএসই চেয়ারম্যান বলেন, এসএমই বোর্ডে তালিকাভুক্ত কোম্পানি বাড়াতে পারলে অর্থায়নে ব্যাংক নির্ভরতা যেমন কমবে, তেমনি খেলাপি ঋণের পরিমাণও কমে আসবে।
ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাত্তিক আহমেদ শাহর সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে ডিএসইর পরিচালক রুবাবা দৌলা ও আব্দুল্লাহ আল মামুন উপস্থিত ছিলেন।