পুঁজিবাজারে দুর্দশার কারণ গুজব: অর্থমন্ত্রী

পুঁজিবাজারের এখনকার দরপতনের কারণ হিসেবে গুজবকে চিহ্নিত করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Jan 2020, 03:07 PM
Updated : 2 Jan 2020, 03:13 PM

তিনি বলেছেন, গুজবের কারণেই পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না।

২০১০ সালে বড় ধসের পর এখনই সবচেয়ে বেশি মন্দা চলছে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে।

২০১৬ সালের শেষ দিকে বাজার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করলেও ২০১৮ সাল থেকে আবার পতনের ধারা শুরু হয়। ২০১৯ সালে বাজার আরও খারাপ হয়ে সূচক ফিরে গেছে সাড়ে তিন বছরের আগের অবস্থানে।

এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালনা পর্ষদ ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সদস্যরা ইআরডিতে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান।

তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর মুস্তফা কামাল বলেন, “এই যে রিউমার ছড়িয়ে যে সমস্ত কাজগুলো করা হয়… এখন পুঁজিবাজার চালাচ্ছে রিউমার। এই রিউমারের কারণেই পুঁজিবাজারটি ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না।”

পুঁজিবাজারে দরপতনে বিক্ষোভও হচ্ছে।

গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন অর্থমন্ত্রী।

“এই রিউমারগুলো বন্ধ করার জন্য যে প্রচলিত আইন আছে, তা যেন স্ট্রিকলি কমপ্লায়েন্স হয়। বিদ্যমান আইনগুলোকে আমরা ফুললি এনফোর্স করব।”

বৈঠকে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা অগ্রিম আয়কর শিথিলের পাশাপাশি কিছুটা কমানোসহ বেশ কয়েকটি দাবি জানায়।

“আমরা তাদের জানিয়েছি, আমরা যতদূর পারি, সেটা বিবেচনা করব,” বলেন অর্থমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “তাদের আরেকটা দাবি ছিল, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের জন্য ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করা।

“আমি বলেছি, দেশের সকল ব্যবসায়ী কিংবা বিনিয়োগকারী সবাই ব্যাংক ঋণ পায়। ব্যাংকের সঙ্গে বোঝাপড়ার ভিত্তিতে শেয়ারবাজারের ব্যবসায়ীরাও ব্যাংক ঋণ পেতে পারে বলে আমি তাদের বলেছি। এটার ব্যবস্থা করা হবে বলে আমরা বলেছি।”

আ হ ম মুস্তফা কামাল (ফাইল ছবি)

পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা টাকার অবমূল্যায়নের প্রস্তাব দিলেও তা নাকচ করে দেন অর্থমন্ত্রী।

ডিএসইর প্রতিনিধিরা সরকারি ভালো কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তের প্রস্তাব দেন।

মুস্তফা কামাল বলেন, “এটা আমরা চেষ্টা করছি। এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। কিন্তু সময় লাগে। তাদের দিনক্ষণ দিয়ে বলতে পারব না যে কখন দিতে পারব।”

বৈঠকের পর ডিএসই পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন সাংবাদিকদের বলেন, “বৈঠকে আমরা অর্থমন্ত্রীর কাছে বেশ কিছু প্রস্তাব তুলে ধরেছি। বিশেষ করে গ্রামীণফোন এবং টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার দ্বন্দ্বের দ্রুত নিষ্পত্তির দাবি জানিয়েছি।”

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বাংলাদেশে বড় মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোনের সঙ্গে বিটিআরসি দ্বন্দ্ব বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

মিনহাজ বলেন, “গ্রামীণফোনের শেয়ার পুঁজিবাজার মূলধনের একটি বড় অংশ ধারণ করছে। এ বিষয়টি নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে পুঁজিবাজার সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা জন্মেছে। বিষয়টির দ্রুত নিষ্পত্তি পুঁজিবাজারের ভাবমূর্তি ইতিবাচক হবে।”