অথচ ২০১০ সালে উত্তাল সময়ে এই বাজারে লেনদেন ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছিল।
এই বছরের শুরুতেও লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা।
ছোট-বড়, প্রাতিষ্ঠানিক কোনো বিনিয়োগকারীরই শেয়ার কিনছে না। এক ধরনের আতংক বিরাজ করছে বাজারে। আরও খারাপ হতে পারে- এ আশংকায় সবাই লোকসান দিয়ে শেয়ার বিক্রি করতে চাচ্ছে। কিন্তু ক্রেতা নেই।
সে কারণে একদিকে যেমন লেনদেন কমছে। অন্যদিকে পড়ছে সূচক।
সপ্তাহের চতুর্থ দিন বুধবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স সামান্য কমলেও লেনদেন হয়েছে ২৫৪ কোটি টাকা। মঙ্গলবার এই বাজারে ২৮১ কোটি ৫৬ লাখ টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছিল।
অন্য বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ১২ কোটি ৩৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। মঙ্গলবার লেনদেনের অংক ছিল ১৪ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। মঙ্গলবার লেনদেনের অংক ছিল ১৪ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।
বছরের শুরুতে দৈনিক লেনদেন ছিল ১ হাজার কোটি টাকার মতো। এখন লেনদেন হচ্ছে তিনশ কোটি টাকার নিচে।
গত সপ্তাহেও বাজারে বড় দরপতন হয়। তার ধারাবাহিকতায় চলতি সপ্তাহও শুরু হয় পতনের মধ্য দিয়ে। সপ্তাহের প্রথম দিন রোববার ডিএসইএক্স ১৬ পয়েন্ট পড়ে যায়। সোমবার বিজয় দিবসের ছুটি ছিল। মঙ্গলবার লেনদেন শুরু হওয়ার পর থেকেই বাজার পড়তে শুরু করে।
শেষ পর্যন্ত ৭৯ পয়েন্ট পড়ে বড় পতন হয় বাজারে। বুধবার ডিএসইএক্স পড়েছে ২ পয়েন্টের মতো।
চলতি বছরের শুরুতে ডিএসই’র প্রধান সূচক প্রায় ৬ হাজার পয়েন্টে উঠেছিল। বছরের শেষ ভাগে এসে সেই সূচক এক হাজার ৬০০ পয়েন্ট হারিয়ে ৪ হাজার ৪০০ পয়েন্টে নেমে এসেছে।
বছরের শুরুতে দৈনিক লেনদেন ছিল ১ হাজার কোটি টাকার মতো। এখন লেনদেন হচ্ছে তিনশ কোটি টাকার নিচে।
পতন ঠেকাতে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও গভর্নর ফজলে কবিরের সঙ্গে বৈঠক করতে সময় চেয়ে গত ১০ ডিসেম্বর চিঠি দিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালনা পর্ষদ।
কিন্তু এক সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও অর্থমন্ত্রণালয় এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বৈঠকের ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি বলে ডিএসই’র উপ-মহাব্যবস্থাপক শফিকুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।
“কিন্তু কেউ শেয়ার কিনছে না। কারো হাতে টাকা নাই। যাদের সাপোর্ট দেয়ার কথা আইসিবি; তারাও কিনছে না। সবাই ট্রেডার হয়ে গেছে। কেউ বিনিয়োগ করছে না।”
“সে কারণেই এই করুণ দশা বাজারের।”
“বাজার এখন ভালো হওয়ার কোনো শক্তিই নেই। ভালো-মন্দ সব শেয়ারের দামই কমতে কমতে একেবারেই শেষ প্রান্তে নেমে এসেছে। এখন কেনার সময়। আমরা ভেবেছিলাম, কম দামে সবাই কেনা শুরু করলে বাজার তার নিজস্ব শক্তিতেই ঘুরে দাঁড়াবে। কিন্তু সেটাও হচ্ছে না। এখানেই বড় উদ্বেগের বিষয়।”
“আসলে বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের কোনো আস্থা নেই। অর্থনীতির অবস্থাও ভালো না। মানুষের হাতে টাকাও নেই। সবমিলিয়েই বাজারের খারাপ অবস্থা কাটছে না।”
“এই ১০ হাজার কোটি টাকা শুধু আইসিবিকে দিলে হবে না। ভালো ভালো ব্রোকার হাউজ, মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকেও দিতে হবে।”
“বিশ্বের সব শেয়ার বজারেই ভালো অবস্থা। পাকিস্তানের শেয়ারবাজারে শেয়ারের সূচক ১১ হাজার পয়েন্টের মাইলফলক অতিক্রম করেছে। গতকালও ভারতের শেয়ার বাজারের সূচক ২০০ পয়েন্ট বেড়েছে। শুধু আমাদেরটাই উল্টো পথে চলছে।”
বাজার পরিস্থিতি
বুধবার ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নিয়েছে ৩৫৩টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এরমধ্যে দর বেড়েছে ২০৩টির, কমেছে ৯৪টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৬টি কোম্পানির দর।
ডিএসইএক্স বা প্রধান মূল্য সূচক ১ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৪১৭ দশমিক ৯৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ৮ দশমিক ৩০ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৯৮৬ দশমিক ৪৭ পয়েন্টে। আর ডিএস৩০ সূচক ৯ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৪৯৮ পয়েন্টে।
অপর বাজার সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২৩০টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এরমধ্যে দর বেড়েছে ১১৯টির, কমেছে ৭৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৪টির দর।
এই বাজারের সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১ দশমিক ২১ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১৩ হাজার ৪৪০ দশমিক ৩৭ পয়েন্টে।