দেশে একাধিক দেশি-বিদেশি ব্যাংকের প্রধান হিসেবে কাজ করা অভিজ্ঞ এ ব্যাংকার বিশ্ব ব্যাংক গ্রুপের আইএফসিতে পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন।
Published : 18 Aug 2024, 10:25 PM
নানা অনিয়ম ও কারসাজির অভিযোগ নিয়ে ধুঁকতে থাকা পুঁজিবাজারকে নতুনভাবে ঢেলে সাজাতে প্রস্তুতি নেওয়ার আভাস দিয়েছেন বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে সদ্য নিয়োগ পাওয়া ব্যাংকার খন্দকার রাশেদ মাকসুদ।
নতুন দায়িত্ব নিতে আগ্রহের কথা তুলে ধরে গত কয়েকবছর ধরে দেশের অর্থনীতির ক্ষতে পরিণত হওয়া পুঁজিবাজারকে সারাই করতে প্রয়োজনীয় কর্মপদ্ধতি ঠিক করার কথা বলেছেন তিনি।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন-বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে রোববার ব্যাংকার খন্দকার রাশেদ মাকসুদকে নিয়োগ দেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে চার বছর মেয়াদে তার নিয়োগের প্রজ্ঞাপনের পর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, ‘‘যোগদান করে করণীয় র্নিধারণ করব। দায়িত্বভার গ্রহণ করে আপনাদের সাথে বিস্তারিত কথা বলব।’’
দেশে একাধিক বেসরকারি ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহী পদে এবং বিদেশের বিভিন্ন বহুজাতিক ব্যাংকে চাকুরি করা রাশেদ মাকসুদ বর্তমানে বিশ্ব ব্যাংক গ্রুপের ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন-আইএফসিতে ‘স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড বিজনেস ডেভেলপমেন্ট’ পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন, ১৯৯৩ আইন অনুযায়ী বিএসইসির চেয়ারম্যান পদে যোগ দিতে সব প্রতিষ্ঠান থেকে সম্পর্ক বাদ দিতে হবে তার।
সেই আনুষ্টানিকতা শেষে বিএসইসিতে চেয়ারম্যান হিসেবে যোগ দিতে সম্মত হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে স্ট্যান্ডার্ড ও সিটিব্যাংক এনএর কান্ট্রি প্রধান হিসেবে কাজ করা রাশেদ মাকসুদ বলেন, ‘‘আইএফসি’র সঙ্গে আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতে তো একটু সময় লাগবে। এরপরই কমিশনে যোগ দেব।’’
আগামী দু’ একদিনের মধ্যে এ প্রক্রিয়া শেষ করা সম্ভব হবে বলে আভাস মিলেছে।
প্রবল গণ আন্দোলনে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বিএসইসির চেয়ারম্যান পদ থেকে ১০ অগাস্ট পদত্যাগ করেন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম; যার বিরুদ্ধে ‘অনিয়ম’ ও ’কারসাজির’ মাধ্যমে প্রভাবশালী ও বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ আলোচনায় ছিল তার মেয়াদের বড় অংশ জুড়ে।
তার জায়গায় গত ১৩ অগাস্ট বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে অর্থনীতিবিদ এম মাসরুর রিয়াজকে নিয়োগ দিয়েছিল অর্থ মন্ত্রণালয়। পরদিন তার যোগ দেওয়ার কথা থাকলেও তিনি দেননি।
প্রথমে সরকারের দিক থেকে তার বিষয়ে কিছু প্রশ্ন উঠলেও পরে সেগুলোর মীমাংসা হলে পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মাসরুর যোগ দিতে সম্মত হন। তবে গত শনিবার সিদ্ধান্ত বদলে তিনি লিখিতভাবে জানিয়ে দেন বিএসইসিতে যোগ দিতে চাচ্ছেন না।
এভাবে তিন তিন পার হওয়ার পর রাশেদ মাকসুদকে নিয়োগ দিল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
পেশাগত জীবনে পুরো দস্তুর এই ব্যাংকার ২৮ বছরের কর্মজীবনে সবশেষ স্টান্ডার্ড ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। এর আগে তিনি এনআরবিসি ব্যাংক লিমিটেড এবং সাত বছর সিটি ব্যাংক এনএ বাংলাদেশের এমডি ও সিটি কান্ট্রি অফিসার ছিলেন।
সিটি ব্যাংক এনএ এর ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা অফিস এবং পরে বাংলাদেশ অফিসের এমডি ও সিটি কান্ট্রি অফিসার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ছিলেন এমআইডিএএস ফিন্যান্স লিমিটেড বাংলাদেশের পরিচালনা পর্ষদের উপদেষ্টাও।
বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ব্যাবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ, এবিবি এর মহাসচিব হিসেবেও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক থাকা অবস্থায় দায়িত্ব পালন করেন।