কানাডাকে উড়িয়ে শীর্ষে ক্রোয়েশিয়া

টানা দুই হারে নকআউট পর্বের আশা শেষ হয়ে গেল কানাডার।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Nov 2022, 05:09 PM
Updated : 27 Nov 2022, 05:09 PM

শুরুটা এর চেয়ে ভালো হতে পারত না। ৬৮ সেকেন্ডের মাথায় বিশ্বকাপে নিজেদের ইতিহাসের প্রথম গোল! কিন্তু এরপর রক্ষণে ঢুকে গেল কানাডা। দিলো এর মাশুল। একের পর এক আক্রমণে তাদের ভাসিয়ে দিয়ে এগিয়ে গেল ক্রোয়েশিয়া। উজ্জ্বল করল শেষ ষোলোর সম্ভাবনা।

আল রাইয়ানের খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে রোববার ‘এফ’ গ্রুপের ম্যাচে ৪-১ গোলে জিতেছে গত আসরের রানার্সআপরা।

শুরুতে কানাডাকে এগিয়ে নেন আলফুঁস ডেভিস। ক্রোয়েশিয়ার হয়ে জোড়া গোল করেন আন্দ্রেই ক্রামারিচ। মার্কো লিভাইয়া ও লভরো মাইয়ের করেন একটি করে গোল।

দুটি করে ম্যাচ শেষে ৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের শীর্ষে উঠে এসেছে ক্রোয়েশিয়া। গোল পার্থক্যে পিছিয়ে দুই নম্বরে রয়েছে মরক্কো। ৩ পয়েন্ট নিয়ে তিনে বেলজিয়াম। বিশ্ব মঞ্চে ফেরার আসরে কানাডার পয়েন্ট শূন্য।

এই ম্যাচে তাদের শুরুটা কী দারুণ-ই না ছিল। প্রথম ভালো আক্রমণেই এগিয়ে যায় দলটি। তাহোন বিউকানানের চমৎকার ক্রস দুর্দান্ত হেডে জালে পাঠান ডেভিস। খেলার বয়স তখন মাত্র ১ মিনিট ৮ সেকেন্ড!

আগের ম্যাচে বেলজিয়ামের বিপক্ষে স্পট কিক থেকে গোল করতে ব্যর্থ হওয়া ডেভিসই করলেন বিশ্বকাপে কানাডার প্রথম গোল। ১৯৮৬ আসরে তিন ম্যাচের কোনোটিতে গোল করতে পারেনি তারা। এবার বেলিজয়ামের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে হারে ১-০ গোলে।    

এরপর রক্ষণাত্মক হয়ে পড়ে কানাডা। সুযোগ পেয়ে চড়াও হয় ক্রোয়েশিয়া। ২৬তম মিনিটে জালে বল পাঠান ক্রামারিচ। কিন্তু তাকে বল দেওয়া আরেক ফরোয়ার্ড লিভাইয়া অফ সাইডে থাকায় মেলেনি গোল। সমতা ফেরানোর সুযোগ একটুর জন্য নষ্ট হয়ে যায়।

৩৫তম মিনিটে খুব কাছ থেকে লিভাইয়ার শট ঠেকিয়ে কানডার ত্রাতা গোলরক্ষক মিলান বোরিয়ান। এর দুই মিনিটের মধ্যে সমতা ফিরিয়ে ফেলে ক্রোয়েশিয়া। ইভান পেরিসিচের চমৎকার রিভার্স পাসে দূরের পোস্ট দিয়ে জাল খুঁজে নেন অরক্ষিত ক্রামারিচ।

৪৪তম মিনিটে এগিয়েও যায় ক্রোয়েশিয়া। ডি-বক্সের মাথায় বল পেয়ে বুলেট গতির শটে বোরিয়ানকে এড়িয়ে জাল খুঁজে নেন লিভাইয়া।

এই গোলে দারুণ অবদান ইয়োসিপ ইউরানোভিচের। মাঝ মাঠ থেকে অনেকটা এগিয়ে যান তিনি। শেষ দিকে এক পর্যায়ে বল হারিয়েও ফেলেন। পরে ফেরত পেয়ে কোনোমতে পা বাড়িয়ে খুঁজে নেন লিভাইয়াকে। বাকিটা সারেন কানাডার রক্ষণে ভীতি ছড়ানো এই ফরোয়ার্ড।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই সুযোগ তৈরি করে কানাডা। ৪৮তম মিনিটে জোনাথন ওসোরিওর শট দূরের পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। ডেভিসের গোলের পর এটাই ছিল তাদের প্রথম চেষ্টা!

৫৪তম মিনিটে ক্রামারিচের শট ঠেকিয়ে দিয়ে ব্যবধান আরও বড় হতে দেননি কানাডা গোলরক্ষক। দুই মিনিট পর জোনাথন ডেভিডের বুলেট গতির শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন ক্রোয়াট গোলরক্ষক।

৭০তম মিনিটে ক্রামারিচের দ্বিতীয় গোলে ৩-১-এ এগিয়ে যায় ক্রোয়েশিয়া। পেরিসিচের কাছ থেকে পেনাল্টি স্পটের কাছে বল পেয়ে আলতো টোকায় জায়গা করে নেন ক্রামারিচ। পরে দূরের পোস্ট দিয়ে খুঁজে নেন ঠিকানা।

শেষ পর্যন্ত ব্যবধান কমানোর চেষ্টা করে যায় কানাডা। কিছু সুযোগও আসে কিন্তু কোনোটিই কাজে লাগাতে পারেনি তারা। উল্টো যোগ করা সময়ে হজম করে আরেকটি গোল।

মিসলাভ অরসিচ বল পায়ে যখন এগিয়ে যান, সামনে তখন কেবল গোলরক্ষক। উপায় না দেখে বেরিয়ে আসেন বোরিয়ান। তাকে এড়িয়ে শট না নিয়ে অরিসিচ পাস দেন পাশাপাশি উঠে আসা মাইয়েরকে। একটু আগেই মাঠে আসা এই মিডফিল্ডার বাকিটা সারেন অনায়াসে।