সবশেষ পাঁচ ম্যাচের পরিসংখ্যানে অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ! অস্ট্রেলিয়ার জয় একটি, হার তিনটি, ড্র একটি। বাংলাদেশের একটি করে জয় ও হার, ড্র তিনটি। কিন্তু দুই দলের প্রতিপক্ষের দিকে তাকালে পরিষ্কার হয়ে যাবে পরিসংখ্যান কতটা অসাড়। বাংলাদেশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরা তাই অস্ট্রেলিয়াকে একবাক্যে শক্তিশালী মানছেন। দলের কাছে তার চাওয়া লড়াকু ফুটবল খেলে বাছাইয়ের সামনের পথচলার পাথেয় সঞ্চয় করে নেওয়া।
২০২৬ বিশ্বকাপের এশিয়া অঞ্চলের বাছাইয়ের ‘আই’ গ্রুপের ম্যাচে বৃহস্পতিবার মুখোমুখি হবে দুই দল। মেলবোর্নের রেক্টাঙ্গুলার স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় বেলা ৩টায় মাঠে গড়াবে ম্যাচটি।
২০১৫ সালের পর এই প্রথম মুখোমুখি হচ্ছে দুই দল। সেবার ২০১৮ বিশ্বকাপের বাছাইয়ে দুই লেগে ৯ গোল হজম করে হেরেছিল বাংলাদেশ; অস্ট্রেলিয়াতে ৫-০ এবং ঢাকায় ৪-০ ব্যবধানে।
কাতার বিশ্বকাপে শেষ ষোলোয় খেলা অস্ট্রেলিয়ার গত পাঁচ ম্যাচের প্রতিপক্ষ ছিল যথাক্রমে-একুয়েডর, আর্জেন্টিনা, মেক্সিকো, ইংল্যান্ড ও নিউ জিল্যান্ড। সেখানে বাংলাদেশ সবশেষ পাঁচ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল যথাক্রমে –কুয়েত, আফগানিস্তান (দুই বার) ও মালদ্বীপ (দুই বার)।
বিশ্বকাপ বাছাইয়ে প্রথম ধাপে মালদ্বীপকে টপকেই অস্ট্রেলিয়া, লেবানন ও ফিলিস্তিনের মতো শক্তিশালী দলের মুখোমুখি হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে বাংলাদেশ। বুধবারের সংবাদ সম্মেলনে কাবরেরাও দলকে বার্তা দিলেন এই চমৎকার সুযোগ লুফে নেওয়ার।
“আমরা চার-পাঁচদিন ধরে এখানে আছি। তিনটি সেশন করেছি এ পর্যন্ত। এখন পর্যন্ত দলের সবকিছু ইতিবাচক আছে। এখানকার আবহাওয়াটাও আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। আমরা মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। এশিয়ার অন্যতম সেরা দলের বিপক্ষে খেলতে এখানে এসেছি। আমি আশাবাদী এবং ইতিবাচক। আশা করছি, এখান থেকে ভালো অভিজ্ঞতা নিয়ে বাংলাদেশে ফিরতে পারব; যা আমাদের পরবর্তী প্রতিপক্ষ লেবাননের বিপক্ষে কাজে লাগবে।”
‘আই’ গ্রুপে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে তলানির দল বাংলাদেশ, ১৮৩তম; শীর্ষ দল অস্ট্রেলিয়া ২৭তম। তাই গ্রাহাম আর্নল্ডের দলকে যতটা সম্ভব কঠিন পরীক্ষায় ফেলার লক্ষ্য কাবরেরার। সেটা করতে হলে জামাল-মোরসালিনদের লড়াকু মানসিকতা নিয়ে খেলতে হবে বলে মনে করেন এই স্প্যানিশ কোচ।
“আমাদের লড়াকু হতে হবে। নিজেদের সামর্থ্য দেখাতে হবে। আমরা জানি এটা কেমন চ্যালেঞ্জিং হতে যাচ্ছে। আমরা জানি, অস্ট্রেলিয়া কেমন শক্তিশালী, বিশেষ করে ঘরের মাঠে।”
“গেল কয়েক বছর আমরা উন্নতি করেছি, বিশেষ করে গত বছর। মহাদেশের কয়েকটি দলের সঙ্গে আমরা লড়াই করেছি। আশা করছি, এ ম্যাচেও আমরা নিজেদের সামর্থ্য দেখাতে পারব। নিজেদের সামর্থ্যের সেরাটা দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার কাজটা যতটা সম্ভব কঠিন করতে চাই।”
অস্ট্রেলিয়ার আক্রমণভাগে জেমি ম্যাকলারেন, মিচেল ডিউকের মতো নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড়। তাদের আটকে রাখতে মাঝমাঠের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু কার্ডের খাঁড়ায় এ ম্যাচে সোহেল রানাকে পাচ্ছেন না কাবরেরা। কোচ তাই তাকিয়ে আছেন নতুনদের দিকে।
“সোহেল রানা অবশ্যই দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার ছিল। সে দলের অন্যতম শক্তিশালী ফুটবলারও, কিন্তু তার বিকল্প আমাদের হাতে রয়েছে। আমাদের হাতে একাধিক তরুণ খেলোয়াড় রয়েছে, যারা নিজেদের সামর্থ্য প্রমাণ করে দলে জায়গা করে নিতে চায়।”
কাবরেরার দুর্ভাবনার জায়গা আছে আরও। মেলবোর্নের ঠাণ্ডা আবহাওয়া, স্কিলের পাশাপাশি শারীরিক শক্তিতে পিছিয়ে থাকা, সেট-পিস নিয়ে ভীতি-এমন অনেক কিছু।
“সেট-পিস নিয়ে নিয়মিত কোচিং স্টাফদের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রতিপক্ষ দলের ফিজিক্যাল এডভান্টেজ অবশ্যই আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। কিন্তু আমরা চেষ্টা করব তাদের কর্ণার না দিতে এবং আমাদের অর্ধে ফ্রি-কিক না দিতে ।”
সব সীমাবদ্ধতা মেনে নিয়েই লেবানন ম্যাচের আত্মবিশ্বাস সঞ্চয় করতে চান কাবরেরা। এ ম্যাচটি মাঠে গড়াবে ২১ নভেম্বর, ঢাকায়।