বর্ণাঢ্য কোচিং ক্যারিয়ারে এই ম্যাচকেই চূড়ায় রাখছেন পেপ গুয়ার্দিওলা, স্বপ্নময় রাতে উচ্ছ্বাসে ভাসছেন ম্যানচেস্টার সিটির ফুটবলাররা।
Published : 18 May 2023, 11:44 AM
তিন দেশের তিন ক্লাবের হয়ে কোচিংয়ে সাফল্যের সমৃদ্ধ ভাণ্ডার পেপ গুয়ার্দিওলার। ফুটবল ইতিহাসের সেরা কোচদের একজন তিনি। তার কোচিংয়ে বার্সেলোনা, বায়ার্ন মিউনিখ ও ম্যানচেস্টার সিটির স্মরণীয় ম্যাচের সংখ্যা কম নয়। তবে এবার রিয়াল মাদ্রিদকে পর্যদুস্ত করা এই জয়কেই কোচিং ক্যারিয়ারের সবচেয়ে সেরা জয় বলছেন তিনি।
রিয়াল মাদ্রিদকে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করে ম্যানচেস্টার সিটির ফুটবলাররাও ভাসছেন উচ্ছ্বাসে। জয়ের নায়ক বের্নার্দো সিলভার কাছে এই অনুভূতি অসাধারণ। জ্যাক গ্রিলিশ তো বিশ্বাসই করতে পারছেন না এমন জয়।
এই ম্যাচ জিতে দারুণ এক অর্জন ধরা দিয়েছে গুয়ার্দিওলার। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে একশ ম্যাচ জয়ের কীতি গড়েছেন তিনি। ফুটবল ইতিহাসে যা আগে করতে পেরেছেন কেবল দুজন কোচ-এই ম্যাচের প্রতিপক্ষ কার্লো আনচেলত্তি (১০৭) ও আরেক কিংবদন্তি স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন (১০২)।
তবে পরিসংখ্যানের এই প্রাপ্তিতে নয়, গুয়ার্দিওলার কাছে এটি সেরা ম্যাচ নিজেদের খেলার ধরন ও প্রতিপক্ষের ওজনের কারণে। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে তাকে জিজ্ঞেস করা হয় কোচ হিসেবে সেরা জয়গুলির তালিকায় এটি কোথায় থাকবে। তার জবাব, “এটিই চূড়ায়, প্রতিপক্ষকে ভাবনায় রাখলে। আজকে আমাদের ফুটবলারদের মান ছিল খুবই ভালো, সত্যিই খুব উঁচুতে।”
ইতিহাদে বুধবার খেলা শুরুর পর থেকেই একের পর এক আক্রমণে রিয়ালকে পর্যদুস্ত করে তোলে সিটি। কিন্তু গোলের দেখা মিলছিল না একটুর জন্য। পরে ২৩ ও ৩৭ মিনিটে বের্নার্দো সিলভার দুই গোলে নিজেদের দাপটের প্রমাণ স্কোরবোর্ডেও ফুটিয়ে তোলে সিটি।
ম্যাচের সেরাও এ দিন সিলভাই। ম্যাচ শেষে তিনি বললেন, আগের লেগের হতাশা মুছে দিতে তিনি ছিলেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
“প্রথম লেগে আমার পারফরম্যান্স খুব একটা ভালো ছিল না। আজকে তাই পুষিয়ে দিতে চেয়েছিলাম। খুবই খুশি আমি এবং ভালো লাগছে দলের জয়ে অবদান রাখতে পেরে।”
“আমাদের জন্য দারুণ সুন্দর এক রাত এটি। আমরা জানতাম কাজটি কঠিন হবে। তবে আমাদের মাঠে এই রিয়াল মাদ্রিদকে ৪-০ গোলে হারানোর অনুভূতি অসাধারণ ও দুর্দান্ত। আশা করি আমরা শিরোপাও জিতব।”
ঘরের মাঠে দর্শক সমর্থন যে দলকে উজ্জীবিত করেছে প্রবলভাবে, সেটিও আলাদা করে বললেন সিলভা।
“আজকে আরও একবার আমাদের সমর্থকরা ছিলেন অসাধারণ এবং এতেই আমরা মোমেন্টাম পেয়ে যাই মাদ্রিদের ওপর দাপট দেখাতে। দ্বিতীয়ার্ধে যখন ওরা আমাদের একটু চাপে রাখতে শুরু করে, তখন গোলও করতে পারত। কিন্তু দর্শকরা পাশে ছিলেন। আমরা ছিলাম আঁটসাঁট, গোছানো এবং আমাদের তাড়না ছিল প্রবল। আজকের পারফরম্যান্সে আমরা উচ্ছ্বসিত।”
সেই উচ্ছ্বাস ফুটে উঠল উইংয়ে দুর্দান্ত খেলে বারবার রিয়ালের রক্ষণে হানা দেওয়া জ্যাক গ্রিলিশের কণ্ঠেও।
“এটা অবিশ্বাস্য… আমার তো মনে হয় না, খুব বেশি দল রিয়াল মাদ্রিদকে এভাবে হারাতে পারবে। জানি না ঠিক কীভাবে বলব বা প্রকাশ করব, তবে এই অনুভুতি অন্যরকম। নিজেদেরকে অপ্রতিরোধ্য মনে হচ্ছে।”
প্রথম লেগের লড়াইয়ের হতাশাজনক পারফরম্যান্স পেছনে ফেলে এই ম্যাচে দুর্দান্ত পারফর্ম করা কাইল ওয়াকার অবশ্য জয়ের ধরনের চেয়ে বেশি স্বস্তি পাচ্ছেন শেষ পর্যন্ত রিয়ালের সঙ্গে জিততে পেরেই।
“ছেলেরা ভালো লড়াই করেছে, বলের নিয়ন্ত্রণ খুব ভালোভাবে রেখেছে, বিশেষ করে প্রথমার্ধে। শেষ পর্যন্ত আমরা জিততে পেরেছি এবং এটিই মূল ব্যাপার।”
আগামী ১০ জুন ইস্তানবুলে ফাইনালে ইন্টার মিলানের মুখোমুখি হবে ম্যানচেস্টার সিটি।