মরক্কোর বিপক্ষে চ্যালেঞ্জে ‘উজ্জীবিত’ ব্রাজিলের ফুটবলাররা

বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে খেলা দলের বিপক্ষে মাঠে নামতে মুখিয়ে আছে দলের সবাই, বললেন ব্রাজিলের ভারপ্রাপ্ত কোচ মানো মেনেজেস।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 March 2023, 07:32 AM
Updated : 25 March 2023, 07:32 AM

প্রীতি ম্যাচে অনেক সময়ই লড়াইয়ের তাড়না খুব তীব্র থাকে না। ব্রাজিলের ফুটবলে এখন একটু অস্থিরতাও চলছে। খোঁজ চলছে জাতীয় দলের নতুন কোচের। আপৎকালীন কোচের জন্য কাজটা তাই কঠিনই হওয়ার কথা। তবে ব্রাজিলের ভারপ্রাপ্ত কোচ মানো মেনেজেস দেখতে পাচ্ছেন উল্টো চিত্রই। মরক্কোর বিপক্ষে ম্যাচে ফুটবলাররা নিজেদের উজাড় করে দিতে মুখিয়ে আছে বলেই জানালেন তিনি। 

তাঞ্জিয়ারে শনিবার মরক্কোর বিপক্ষে এই ম্যাচে মাঠে নামবে ব্রাজিল। এমনিতে বিশ্ব ফুটবলের প্রথাগত বড় শক্তি নয় মরক্কো। তবে গত বিশ্বকাপ তারা ছিল আলোচিত এক দল। গোটা বিশ্বকে চমকে দিয়ে আফ্রিকার প্রথম দল হিসেবে তারা জায়গা করে নেয় সেমি-ফাইনালে। শুধু ফলাফলেই নয়, দারুণ আগ্রাসী ও উজ্জীবিত ফুটবল খেলে দলটি নজর কাড়ে দারুণভাবে। 

সেই সাফল্যের রেশ নিয়েই এবার তারা নামবে ঘরের মাঠে বিশ্ব ফুটবলের এক পরাশক্তির সামনে। স্টেডিয়ামের উপচে পড়া গ্যালারি আর প্রবল সমর্থনের শক্তি তাদের বাড়তি প্রেরণা হবে নিশ্চিতভাবেই। তবে ব্রাজিলের ভারপ্রাপ্ত কোচ ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে বললেন, এই চ্যালেঞ্জর জবাব দিতে উজ্জীবিত তার দলও। 

“আমার জন্য তো বটেই, দলের সব ফুটবলারের জন্যও এখানে আসতে পারা দারুণ ব্যাপার। আমাদের একসঙ্গে থাকার প্রতিটি দিনেই ফুটবলাররা ফুটিয়ে তুলছে যে, ব্রাজিলের জার্সি গায়ে মাঠে নামাটা সবসময়ই তৃপ্তির।” 

“এই ম্যাচকে ঘিরে যে আবহ থাকবে, তা নিয়ে ছেলেদের সঙ্গ কথা হয়েছে আমার। দেশের হয়ে মাঠে নামা, প্রতিপক্ষের সমর্থনে পুরো গ্যালারি, বিশ্বকাপের দারুণ সাফল্যের পর দেশের মাঠে মরক্কোর খেলা, বড় ম্যাচে চাপ, সবকিছু নিয়েই কথা হয়েছে এবং এসবে ওরা অভ্যস্ত। আমাদের ছেলেরাও এই ম্যাচে মাঠে নামত দারুণ অনুপ্রাণিত হয়ে আছে। প্রতিটি ছেলের চোখের দিকে তাকালেই দেখতে পারবেন, জাতীয় দলের জার্সিতে মাঠে নামার গর্ব সেখানে খেলা করছে।” 

মানোজেসের নিজের জন্যও এই দায়িত্ব বড় এক চ্যালেঞ্জ। ব্রাজিলের ফুটবলে তাকে সেরা কোচদের একজন বলেই মনে করা হয়। ২০১০ বিশ্বকাপের পর জাতীয় দলের দায়িত্বও পেয়েছিলেন। তবে প্রত্যাশিত ফল না পাওয়ায় ২০১২ সালে তাকে বরখাস্ত করা হয়। এরপর ঘরোয়া ফুটবলে ও ব্রাজিলের বয়সভিত্তিক ফুটবলে কোচিং চালিয়ে যান। গত জানুয়ারিতে তার কোচিংয়েই দক্ষিণ আমেরিকান অনূর্ধ্ব-২০ আসরের শিরোপা জিতে নেয় ব্রাজিল। 

এখন তিনি ব্রাজিলের ভারপ্রাপ্ত কোচের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন, যখন মূল আলোচনা নতুন কোচ নিয়ে। রিয়াল মাদ্রিদের কোচ কার্লো আনচেলত্তিকে ঘিরে গুঞ্জন চলছে জোরেসোরেই। তবে মেনেজেস বললেন, বাইরের আলোচনায় কান না দিয়ে তিনি নিজের কাজটা করে যেতে চান শতভাগ দিয়ে। 

“আমার জীবনে আমি সবসময়ই সুযোগের কথা বলি। এটিকেও অসাধারণ এক সুযোগ হিসেবে দেখছি এবং কাজে লাগানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।” 

“দুর্দান্ত এই ফুটবলারদের কোচিং করাতে পারা বড় এক সম্মান ও অসাধারণ অনুভুতি। প্রতি দিনই অনেক কাজ করে আমি চেষ্টা করছি নিজের সেরাটা দেওয়ার এবং ফুটবলারদের মধ্যে তা ছড়িয়ে দেওয়ার।” 

সংবাদ সম্মেলনে এখন ব্রাজিলের ফুটবলারদের কাছেও আনচেলত্তিতে নিয়ে প্রশ্ন হচ্ছে নিয়মিতই। এই ম্যাচের আগে ব্রাজিল অধিনায়ক কাসেমিরোর কাছেও সেই প্রশ্ন ছুটে গেল, নিজের ক্লাব ক্যারিয়ারের স্বর্ণালী সময় যিনি কাটিয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদে। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে আনচেলত্তির কথা বললেন কাসেমিরোও, তবে মেনেজেসের প্রতি আস্থা ও শ্রদ্ধার কথাও তিনি তুলে ধরলেন। 

“তিনি (আনচেলত্তি) এমন একজন কোচ, যাকে খুব ভালো করে জানি আমি, আমার খুব ভালো বন্ধুও, ফুটবলে যাকে দারুণ শ্রদ্ধা করি, তার সঙ্গে কাজ করাটা ছিল দারুণ। তবে অন্যদিকে, আনচেলত্তি তো এখন একটি ক্লাবের দায়িত্বে আছেন, রিয়াল মাদ্রিদ… তিনি যে দায়িত্বে আছে, সেটির প্রতি শ্রদ্ধা রাখতে হবে আমাদের, আনচেলত্তিকেও সম্মান করতে হবে।” 

“আমাদেরও এখানে একজন কোচ আছেন, তিনি ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে আছেন বটে, তবে কাজটা তো একই। তার কোচিংয়েই আমরা খেলব। এসব হলো সুযোগ, তিনি যদি ভালো করতে পারেন এবং (ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশনের) প্রেসিডেন্টের পছন্দের নামগুলোকে না পাওয়া যায়, তাহলে র‌্যামনই (মেনেজেস) দায়িত্বে থাকবেন। যখনই আমি দলে যোগ দিয়েছি, আমি তাকে বিশ্বকাপ দলের কোচের মতোই দেখছি ও সম্মান করছি।”