চার ক্লাবের সঙ্গে রিভার প্লেটের বৈঠক, একাডেমি নিয়ে আলোচনা

বাংলাদেশের ফুটবলের সঙ্গে যুক্ত হতে আগ্রহী আর্জেন্টিনার বিখ্যাত ক্লাব রিভার প্লেট।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Feb 2023, 10:48 AM
Updated : 27 Feb 2023, 10:48 AM

কাতার বিশ্বকাপের সময় আর্জেন্টিনাকে নিয়ে বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের উচ্ছ্বাস সাড়া ফেলে দিয়েছিল। এই জনপ্রিয়তা কাজে লাগাতে আর্জেন্টিনার বিখ্যাত ক্লাব রিভার প্লেটের প্রতিনিধিরা পা রাখেন ঢাকায়। দেশের ফুটবলের শীর্ষস্থানীয় চার ক্লাবের সঙ্গে বসেন তারা। ফুটবলের উন্নতিতে দ্বিপাক্ষীয় উদ্যোগে একাডেমি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আলোচনা হয় তাদের মধ্যে।

রাজধানীর একটি হোটেলে সোমবার বসুন্ধরা কিংস, আবাহনী লিমিটেড, মোহামেডান স্পোর্টিং, ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র-এই চার ক্লাবের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন রিভার প্লেটের প্রতিনিধিরা। যদিও দুই পক্ষের আলোচনা একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে, তবে সবার কথাতেই যৌথভাবে কাজ করার ইঙ্গিত বেশ স্পষ্ট।

বাংলাদেশের কোনো ক্লাবের নিজস্ব একাডেমি নেই। অথচ পেশাদার ফুটবলে ক্লাবগুলোর অপরিহার্য অংশ এই একাডেমি। আর্জেন্টিনার ক্লাবটির প্রতিনিধিরা একাডেমি প্রতিষ্ঠার দিকে আগ্রহী। এছাড়া কোচ, খেলোয়াড়দের ট্রেনিং এবং সফরের বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা হয়েছে দুই পক্ষের মধ্যে।

আলোচনায় আবাহনীর টিম ম্যানেজার সত্যজিৎ দাস রুপুর মনে হচ্ছে, দ্বিপাক্ষিক আলোচনা ফলপ্রসূ হলে লাভবান হবে বাংলাদেশের ফুটবল।

“রিভার প্লেট আর্জেন্টিনার একটি শীর্ষস্থানীয় দল। আর্জেন্টিনার ফুটবলে তারা আধিপত্য করছে। আমাদের দেশে এসেছে ভাব বিনিময়ের জন্য, কীভাবে আমরা ফুটবলকে এগিয়ে নিতে পারি, এসব নিয়ে কথা হয়েছে। আমরা তাদের আগমণের উদ্দেশ্য জানার চেষ্টা করেছি। আগামী দিনে এখানে একাডেমি, আমাদের কোচরা ওখানে গেল, ওদের কোচরা আমাদের এখানে এলো, কিছু খেলোয়াড়ের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করল, বা এখানে কোনো একাডেমি করা যায় কিনা, আমরা আমাদের বিষয়গুলো তাদের সামনে তুলে ধরেছি, তারা ওখানে গিয়ে প্রস্তাবনা পাঠাবে কীভাবে কি করা যায়।”

“যদি তাদের সাথে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারি, তাহলে আমাদের খেলোয়াড় তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে, যারা আগামীতে আমাদের জাতীয় দলকে এবং দেশের ফুটবলকে এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখবে। আমরা জানিয়েছি, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আমরা অবকাঠামোগত কাজ শুরু করেছি। আট মাস পর..যে ট্রেনিং সুবিধাদির প্রস্তুতি চলছে, সেটা একাডেমির কাজকে এগিয়ে নিতে পারব।”

কিংসের সাধারণ সম্পাদক বিদ্যুৎ কুমার ভৌমিকও জানালেন যৌথভাবে একাডেমি চালানোর ভাবনা।

“তাদের সঙ্গে যদি যৌথভাবে একাডেমিটা করতে পারি... এবং আপনারা জানেন, আমাদের দেশে প্রচুর বিদেশি খেলোয়াড় খেলে, তো তাদেরকে বলেছি, যদি আপনারা আমাদেরকে আর্জেন্টাইন কোচ ও খেলোয়াড় দিতে পারেন, তাহলে সেটা আমাদের জন্য ভালো হবে। এগুলো নিয়েই তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে আমাদের।”

মোহামেডানের সাবেক ফুটবলার ইমতিয়াজ সুলতান জনি এই আলোচনাকে দেখছেন সামনের দিকে রিভার প্লেটের সঙ্গে কাজ করার শুরু হিসেবে।

“ওরা মূলত আলোচনা করেছে আমাদের একাডেমি নিয়ে। তারা যৌথভাবে এটা করতে আগ্রহী। শুরু থেকে মানে ছয় বছর বয়সীদের থেকে শুরু করে …তারা একাডেমির প্রস্তাব দিয়েছে। আমরাও ম্যাচিউরড প্লেয়ার লেনদেনের বিষয়টি জানতে চেয়েছি। ওই প্লেয়ারদের আমরা পেতে পারি কিনা? যদিও এটা তাদের বিষয় নয়, তারপরও বলেছে বিষয়টি তারা দেখবে।”

“বাংলাদেশে প্রচুর আর্জেন্টিনার সমর্থক আছে, এটা তারা জানে। এইটা তাদেরকে খুব আকর্ষণ করেছে। মোহামেডানের লাভবান হওয়ার বিষয়টি আসলে বোঝাপড়ার উপর নির্ভর করবে। এটা সবে শুরু। তবে আমরা মনে করি, যদি আমরা টেকনিক্যাল সমর্থন পাই, সেটা আমাদের জন্য বড় লাভ হবে। এখনই সে সাপোর্ট চাওয়ার মতো অবস্থা তৈরি হয়নি। প্রাথমিকভাবে কথা হয়েছে, এই আরকি।”

রিভার প্লেটের ন্যাশনাল অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল স্কুল বিভাগের প্রধান সেবাস্তিয়ান পেরেস এস্কোবার ইঙ্গিত দিলেন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার।

“ক্লাবগুলোর সঙ্গে দারুণ আলোচনা হয়েছে। আমরা এখানে কিছু একাডেমি করতে আগ্রহী। আর্জেন্টিনা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, এখানে ফুটবল যেভাবে দেখা হয়, ফুটবলের প্রতি এখানকার মানুষের যে অনুভূতি, সেটা আমাদের মতোই, তো আমরা ভাবলাম ওই অনুভূতিটা আমরা ভাগাভাগি করি। শিশুদের ফুটবল শেখায় এবং সেটা হলে দারুণ হবে।”

“দুটি দেশের ভৌগলিক দূরত্ব অনেক, কিন্তু তারপরও আমি আশাবাদী। আপনারা আর্জেন্টিনাতে কিছু কোচ, শিশুকে পাঠাতে পারেন (অনুশীলনের জন্য)। যদি এখানকার ক্লাবগুলো একাডেমি করতে চায়, তাহলে তাদের সঙ্গে কাজ করতে আমরা আগ্রহী।”