স্বপ্ন পূরণের উচ্ছ্বাসে উদ্ভাসিত মেসি

পানামার সঙ্গে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ জয়ের উৎসবের পর আর্জেন্টাইন জাদুকর বললেন, এই দিনটির অপেক্ষায় ছিলেন তিনি।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 March 2023, 05:54 AM
Updated : 24 March 2023, 05:54 AM

স্রেফ একটি প্রীতি ম্যাচই ছিল। কিন্তু মাঠের খেলা আর লড়াই ছাপিয়ে পানামার বিপক্ষে ম্যাচটি রূপ নিল উৎসবে। আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের মহোৎসব। বুয়েন্স এইরেসের এল মনুমেন্তালে ৮০ হাজারের বেশি দর্শক নাচ-গান-উল্লাসে উদযাপন করলেন স্মরণীয় সাফল্যকে। সেই আবেগের জোয়ার ছুঁয়ে গেল লিওনেল মেসি ও গোটা দলকে। ম্যাচের পর মেসি বললেন, এই দিনটির অপেক্ষায় ছিলেন তিনি। 

বাংলাদেশ সময় শুক্রবার সকালের এই ম্যাচ ৭৭ মিনিট পর্যন্ত গোলশূন্য থাকলেও শেষ পর্যন্ত ২-০ গোলে জিতে নেয় লিওনেল মেসি। থিয়াগো আলমাদা দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর দারুণ ফ্রি কিকে জয় নিশ্চিত করে দেন মেসি। যা তার ক্যারিয়ারের ৮০০তম গোল।

তবে ম্যাচের ফলাফল বা মেসির মাইলফলক নিয়ে ভাবনা কারও খুব একটা ছিল বলে মনে হয়নি। ম্যাচটিই যে উদযাপনের! আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জিতেছে যদিও তিন মাস আগে, কাতার থেকে দেশে ফিরে উদযাপনও হয়েছে তুমুল। তবে বিশ্বকাপের পর এটিই ছিল তাদের প্রথম ম্যাচ। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হিসেবে প্রথম ম্যাচ, তিন তারা খচিত জার্সি গায়ে মাঠে নামা, দলের এই উপলক্ষকে রাঙাতে কোনো খামতি রাখেনি আর্জেন্টাইনরা।

এই ম্যাচকে ঘিরে প্রায় এক সপ্তাহ আগে থেকেই বুয়েন্স এইরেসে উৎসবের আবহ শুরু হয়। ম্যাচের আগে তা রূপ নেয় ভালোবাসার জোয়ারে। স্টেডিয়ামের গেট খুলে দেওয়া হয় ম্যাচ শুরুর ৫ ঘণ্টা আগে। কোনোরকম ঝামেলা এড়াতে কড়া নিরাপত্তায় ফুটবলারদের মাঠে আনা হয় ৬ ঘণ্টা আগে! 

আর্জেন্টাইনরা এই ম্যাচকে নিয়েছিল জাতীয় বীরদের অভিবাদন জানানোর মঞ্চ হিসেবে। মেসিরাও তাতে সামিল হন সবটুকু আবেগ নিয়ে। জাতীয় সঙ্গীতের সময় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন মেসি, গোলকিপার এমি মার্তিনেসের গাল বেয়ে নামে জল, ডাগআউটে কোচ লিওনেল স্কালোনির চোখেও দেখা যায় পানি।

দলের প্রত্যেককে এ দিন উপহার দেওয়া হয় বিশ্বকাপ ট্রফির রেপ্লিকা। উদযাপনকে ভিন্ন মাত্রা দেয় পরিবার নিয়ে সবার হাতে উঁচিয়ে ধরা সেই ট্রফি।

ম্যাচের পর মেসির প্রতিক্রিয়ায় ফুটে ওঠে সেই অনুভূতিগুলোই। ৩৬ বছর পর আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয় দিয়ে তো তার জীবনের বড় এক স্বপ্ন পূরণ হয়েই গেছে। সেই স্বপ্নের হাত ধরে আরেকটি স্বপ্ন পূরণের কথাও বললেন তিনি।

“আমি সবসময় এই মুহূর্তটির স্বপ্ন দেখেছি, আমার দেশ আর্জেন্টিনায় আপনাদের সঙ্গে বিশ্বের সেরা জিনিসটি উদযাপন করা, তা হলো বিশ্বকাপ। আমরা যা করে আসছি, তা চলতে থাকুক এবং উপভোগ করতে থাকি, কারণ দীর্ঘদিন ধরেই এই জয়ের অপেক্ষায় ছিলাম আমরা। ‘তিন তারা’ উদযাপন করতে থাকুন।” 

“শুধু বিশ্বকাপই নয়, কোপা আমেরিকা জয়ের পর থেকেই আপনাদের যে ভালোবাসা ও সম্মান, সবাইকে এজন্য ধন্যবাদ জানাই। আমরা কথা দিয়েছিলাম যে এই ট্রফির জন্য নিজেদের সবকিছু উজাড় করে দেব।”

ফুটবলারদের কাছে যিনি বরাবরই কোচের চেয়ে বেশি বন্ধু, সেই স্কালোনি কান্নাভেজা কণ্ঠে আরেকবার কৃতজ্ঞতা জানান দলের প্রতি। 

“এই ফুটবলারদের প্রতি চিরন্তন কৃতজ্ঞতা। ফুটবল তাদের জন্যই, তাদেরকে ছাড়া আমরা এই বিশ্বকাপ জিততে পারতাম না।” 

“এই জার্সি যারা গায়ে চাপায়, তারা সবাই নিজেকের সবটুকু দিয়ে খেলে। কখনও কখনও ফল পক্ষে আসে না। তবে এবার আমরা পেরেছি এবং তা অবিশ্বাস্য।”