মাঝমাঠে লুকা মদ্রিচের মতো নির্ভরতা থাকায় কাতার বিশ্বকাপ নিয়ে আরও বেশি আশাবাদী আন্দ্রেই ক্রামারিচ।
Published : 20 Oct 2022, 06:21 PM
নিজেদের ফুটবল ইতিহাসে সেরা সাফল্যের গল্প রাশিয়া আসরে লিখেছিল ক্রোয়েশিয়া। লুজিনিক স্টেডিয়ামের ফাইনালে ফ্রান্সের কাছে যদিও হেরেছিল তারা, তারপরও বিশ্বকাপ রানার্সআপ হওয়ার আনন্দ ছিল সঙ্গী। কিন্তু ওই প্রাপ্তির মধ্যে যে শিরোপা জিততে না পারার অতৃপ্তিও ছিল। এবার তা ঘোচানোর পণ ক্রোয়াটদের।
লুজিনিকের ফাইনালে আন্দ্রেই ক্রামারিচ যখন বদলি নেমেছিলেন, ততক্ষণে ক্রোয়েশিয়া ৪-২ গোলে পিছিয়ে। কোচ জ্লাতকো দালিচের আশা ছিল, বাকি ২০ মিনিটে কিছু একটা করে দেখাবে দল। কিন্তু ক্রামারিচ ও তার সতীর্থরা খুঁজে পাননি ঘুরে দাঁড়ানোর পথ। চার বছর পর আবার তারা বিশ্বকাপের আঙিনায়। ক্রামারিচও থাকবেন ক্রোয়াট আক্রমণভাগে।
হফেনহাইমের রেকর্ড ১০৬ গোল করা এই ফরোয়ার্ডের কাছে দেশের প্রত্যাশাও থাকবে অনেক। ক্রামারিচের মনে হচ্ছে, অভিজ্ঞতা, সহজাত দক্ষতা এবং নবীন-প্রবীনের মিশেলে গড়া ক্রোয়েশিয়া কাতারের আসরে যাবে অনেক দূর।
বাছাইয়ের বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে সরাসরি মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছে ক্রোয়েশিয়া। ক্রামারিচের বিশ্বাস, রাশিয়ার আসরের অভিজ্ঞতাও কাজে দিবে কাতারে।
“ফুটবলে এটি সুপরিচিত বিষয়-অভিজ্ঞতা থাকা গুরুত্বপূর্ণ। রাশিয়ায় সেই মুহূর্তগুলো আমরা কখনই ভুলব না-ওই অভিজ্ঞতাগুলো আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। কিন্তু আমরা জানি, জীবন এগিয়ে যায় এবং আমাদেরকেও অবশ্যই নতুন কিছুর লক্ষ্য ঠিক করতে হবে। তো আমরা চেষ্টা করব, রাশিয়ার ফলের পুনরাবৃত্তি কিংবা তার চেয়ে উন্নতির।”
“নিশ্চিতভাবে সেটা করা কঠিন হবে। আমরা আবারও তেমন কিছু করতে পারব কিনা, তা নিয়ে অনেকে সন্দেহ করবে এবং গতবার ফাইনালে ওঠায় সবার চোখও থাকবে আমাদের উপর। আমরা নিজেদের সেরাটা নিংড়ে দিব। আমাদের দারুণ সম্ভাবনা আছে, অসাধারণ খেলোয়াড় আছে এবং অভিজ্ঞ ও তরুণের মিশেলে আছে ভালো ভারসাম্যপূর্ণ একটা দল। আশা করি, আবারও আমরা দারুণ কিছু করতে পারব।”
রাশিয়ার আসরে মাঝমাঠের সুর বেঁধে দিয়েছিলেন লুকা মদ্রিচ। অধিনায়কত্ব ও মাঝমাঠ আগলে রাখার মহাভার নিয়ে ৩৭ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার এবার হয়ত শেষ বিশ্বকাপ খেলতে নামবেন। তবে মদ্রিচের শেষ দেখছেন না ক্রামারিচ।
“ক্রোয়েশিয়া, ইউরোপ ও বৈশ্বিক ফুটবলে মদ্রিচের প্রভাব ব্যাখ্যা করা কঠিন। ক্যারিয়ারে সে যা করেছে, তার পুনরাবৃত্তি আসলেই হওয়ার নয়। রিয়াল মাদ্রিদ ও ক্রোয়েশিয়া দলে খেলা বছরগুলোতে সে যা করেছে, ব্যালন ডি’অর জয়ের কথা আলাদাভাবে উল্লেখ করছি না, এগুলো সত্যিই স্মরণীয় এবং অবিশ্বাস্য অর্জন।”
“তার সঙ্গে ড্রেসিংরুম ভাগাভাগি করতে পারা, খেলতে পারা এবং তার মতো একজন মানুষ ও খেলোয়াড়ের সঙ্গে অনুশীলন করতে পারাটা আনন্দের। আমি নিশ্চিত, এটা এমন কিছু, যা আমরা আমাদের নাতি-পুতিদের বলব। আমি মনে করি না, এটা তার শেষ বিশ্বকাপ। সে কেমন অনুভব করছে, তার উপর নির্ভর করবে। সে এখনও দীর্ঘদিন খেলে যেতে পারবে এবং সেটা হলে অনেক মজা হবে। যাই হোক, তার সঙ্গে কাটানো সময় আমি সবসময় উপভোগ করি।”