ম্যাচের ফলের দিকে না তাকিয়ে এরিক টেন হাগ দেখছেন ছোট ছোট কিছু বিষয়, সেগুলোই তাকে আশাবাদী করে তুলছে।
Published : 08 Apr 2024, 03:29 PM
দিন যত যাচ্ছে, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের অবস্থা যেন আরও নাজুক হয়ে পড়ছে। টানা ব্যর্থতায় হতাশা ঘিরে ধরা, দলের মনোবল ভেঙে যাওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। ক্লাব সমর্থকদের একাংশের মধ্যে তৈরি হচ্ছে ক্ষোভ। তবে, দলটির কোচ এরিক টেন হাগের অভিমত ভিন্ন। ম্যাচের ফলের দিকে না তাকিয়ে তিনি দেখছেন ছোট ছোট কিছু বিষয়, সেগুলোই তাকে আশাবাদী করে তুলছে।
মৌসুমের শুরু থেকেই ইউনাইটেডের পারফরম্যান্সে সবচেয়ে দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে অধারাবাহিকতা। এক ম্যাচে দুর্দান্ত খেলে তো, পরের ম্যাচেই দল হয়ে পড়ে ছন্নছাড়া। এমনকি এক ম্যাচের দুই অর্ধেও তাদেরকে প্রায়ই দেখা যায় দুই রূপে।
সবশেষ রোববার লিভারপুলের বিপক্ষে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচেও যেন দুই অর্ধে দুই ইউনাইটেডের দেখা মেলে। ঘরের মাঠে প্রতিপক্ষের চাপে প্রথমার্ধের পুরোটা সময় ঘর সামলাতেই ব্যস্ত থাকতে হয় টেন হাগের দলকে, তেমন কোনো আক্রমণই শানাতে পারেনি তারা।
তবে, লুইস দিয়াসের গোলে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয়ার্ধে খেলতে নেমে ঘুরে দাঁড়ায় ইউনাইটেড। প্রতিপক্ষের মারাত্মক ভুলের সুযোগে দলটিকে এগিয়ে নেন অধিনায়ক ব্রুনো ফের্নান্দেস। কবি মেইনুর গোলে এগিয়েও যায় তারা। শেষ দিকে মোহামেদ সালাহর সফল স্পট কিকে সমতায় শেষ হয় ম্যাচ।
লিগে এই নিয়ে টানা তিন ম্যাচ জয়শূন্য রইল ইউনাইটেড। আসরে সবশেষ ছয় ম্যাচে তাদের জয় কেবল একটি, তিনটি হার ও দুটি ড্র। এত এত ব্যর্থতা, মাঠে দলের এমন সাদামাটা উপস্থিতি কোনোভাবেই কাম্য নয়।
হতাশার এই ছবির মাঝে টেন হাগ ম্যাচ শেষে বড় করে দেখাতে চাইলেন, ভবিষ্যতের জন্য আশাব্যঞ্জক ছোট ছোট কিছু উপকরণকে। সেখানে উল্লেখযোগ্য দুই তরুণ, ডিফেন্ডার উইলি কামবাওলা ও মিডফিল্ডার মেইনুর ঝলমলে পারফরম্যান্স।
অভিজ্ঞ দুই ডিফেন্ডার রাফায়েল ভারানে ও জনি ইভান্স চোট পেয়ে বাইরে আছেন। তাদের শূন্যতা পূরণেই এদিন এবারের লিগে দ্বিতীয়বারের মতো শুরুর একাদশে ডাক পান কঙ্গোর ১৯ বছর বয়সী সেন্টার-ব্যাক কামবাওলা। ভারানে ও ইভান্সের খুব দ্রুত ফেরার সম্ভাবনা দেখছ্নে না টেন হাগ।
“আমার মনে হয় না যে, অল্প সময়ের মধ্যে তারা (ভারানে ও ইভান্স) ফিরবে। আমাদের বিশ্বাস ছিল, (কামবাওলা) মাঠে তার কাজটা ঠিকঠাক করতে পারবে এবং সে তার দায়িত্ব চমৎকারভাবে সামলেছে।”
“আমি খুবই সন্তুষ্ট, খুব খুশি এবং এর মধ্যেই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের ইঙ্গিত মেলে। এই দল, এই স্কোয়াডের সম্ভাবনা আছে এবং আমরা যদি আরও খেলোয়াড়দের প্রস্তুত পাই, বিশেষ করে রক্ষণভাগে…তখন দলের ভবিষ্যৎ দারুণ হবে।”
আগামী মৌসুমে ইউনাইটেডের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ৩১ ম্যাচে ৪৯ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে আছে তারা। তাদের চেয়ে এক ম্যাচ বেশি খেলা অ্যাস্টন ভিলা ৬০ পয়েন্ট নিয়ে আছে পঞ্চম স্থানে।
শীর্ষ চারের শেষ দল টটেনহ্যাম হটস্পারের পয়েন্ট ৬০, তবে তারা খেলেছে ৩১ ম্যাচ।
মৌসুম জুড়ে দলের এমন বাজে পথচলায় ডাগআউটে টেন হাগের অবস্থানও নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। চারিদিকে জোর গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, আগামী মৌসুমের আগেই চাকরি হারাতে পারেন তিনি।
এই ডাচ কোচ অবশ্য ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে নিজের ভবিষ্যৎ নিয়েও আশাবাদী। কদিন আগে ক্লাবের নতুন মালিক স্যার জিম র্যাটক্লিফের কাছে তিনি আর্জি জানান, দল যেভাবে এগিয়ে চলেছে তাতে যেন কোনো বাধা না দেওয়া হয়। দলের এমন বিবর্ণ পারফরম্যান্সের মাঝে কোচের কথা মালিকপক্ষ শুনবে কি-না, সেটাই এখন দেখার বিষয়।