ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে একদম তলানির দল সান ম্যারিনোকে নিয়ে যেন ছেলেখেলা করল ইংল্যান্ড। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একের পর এক প্রতিপক্ষের জালে বল পাঠাল তারা। হ্যাটট্রিকসহ একাই চার গোল করলেন অধিনায়ক হ্যারি কেইন। বিশাল জয়ে কাতার বিশ্বকাপের টিকেট নিশ্চিত করল গ্যারেথ সাউথগেটের দল।
Published : 16 Nov 2021, 02:38 AM
সান ম্যারিনোর মাঠে সোমবার রাতে ইউরোপ অঞ্চলের বাছাইয়ে ‘আই’ গ্রুপের শেষ রাউন্ডে ১০-০ গোলে জিতেছে ১৯৬৬ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
কেইনের ৪টি ছাড়া একটি করে গোল করেন হ্যারি ম্যাগুইয়ার, এমিল স্মিথ, টাইরন মিঙ্গস, ট্যামি আব্রাহাম ও বুকায়ো সাকা। অন্যটি প্রতিপক্ষের আত্মঘাতী। দ্বিতীয়ার্ধের অনেকটা সময় একজন কম নিয়ে খেলে স্বাগতিকরা।
১৯৬৪ সালের পর এই প্রথম কোনো ম্যাচে ১০ গোলে জিতল ইংল্যান্ড। সেবার যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে স্কোরলাইন ছিল একই। ইংলিশদের সবচেয়ে বড় জয় ১৩-০ গোলে, ১৮৮২ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে।
তিন দিন আগে আলবেনিয়ার বিপক্ষে ৫-০ গোলে জেতা ম্যাচেও হ্যাটট্রিক করেছিলেন কেইন। ইংল্যান্ডের চতুর্থ খেলোয়াড় হিসেবে পরপর দুই ম্যাচে হ্যাটট্রিক করলেন তারকা এই ফরোয়ার্ড। এর আগে ১৯০৯ সালে ভিভিয়ান উডওয়ার্ড, ১৯২৭ সালে ডিস্কি ডিন ও ১৯৫৭ সালে টমি টেইলর এই কীর্তি গড়েছিলেন।
র্যাঙ্কিংয়ের ২১০ নম্বর দলটির বিপক্ষে এবারের ম্যাচে ৮৫ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে গোলের জন্য ইংল্যান্ড শট নেয় মোট ২২টি, যার ১৩টি ছিল লক্ষ্যে। সান ম্যারিনোর দুই শটে একটি লক্ষ্যে ছিল।
কাতারের টিকেট পেতে এই ম্যাচে ড্র করলেই চলত ইংল্যান্ডের। সেখানে তারা করল গোল উৎসব। যার শুরু ষষ্ঠ মিনিটে। ফিল ফোডেনের কর্নারে হেডে বল জালে পাঠান ম্যাগুইয়ার। আলবেনিয়ার বিপক্ষেও হেডে দলের প্রথম গোলটি করেছিলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের এই ডিফেন্ডার।
পঞ্চদশ মিনিটে আত্মঘাতী গোলে দ্বিগুণ হয় ব্যবধান। বুকায়ো সাকার শট ক্লিয়ার করার চেষ্টায় নিজেদের জালে বল পাঠান স্বাগতিক ডিফেন্ডার ফিলিপ্পো ফাব্রি।
এরপর ২৭ থেকে ৪২, ১৫ মিনিটের মধ্যে চার গোল করেন কেইন। এর মধ্যে প্রথম ও তৃতীয়টি স্পট-কিকে। দুবারই প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়ের হাতে বল লাগায় পেনাল্টি দিয়েছিলেন রেফারি।
সব মিলিয়ে জাতীয় দলের হয়ে কেইনের হ্যাটট্রিক হলো পাঁচটি। আগের ম্যাচেও প্রথমার্ধেই তিন গোল করেছিলেন তিনি।
ইংল্যান্ডের হয়ে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ডের তালিকায় জিমি গ্রিভসকে (৪৪) ছাড়িয়ে গ্যারি লিনেকারের (৪৮) পাশে বসলেন টটেনহ্যাম হটস্পারের এই ফরোয়ার্ড। ওপরে আছেন কেবল ববি চার্লটন (৪৯) ও ওয়েইন রুনি (৫৩)।
৫৮তম মিনিটে ব্যবধান আরও বাড়ান এমিল স্মিথ। জাতীয় দলের হয়ে এটাই তার প্রথম গোল। চার মিনিট পর কেইনকে তুলে নিয়ে রিস জেমসকে নামান ইংল্যান্ড কোচ।
৬৮তম মিনিটে দান্তে রসসি দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে ১০ জনের দলে পরিণত হয় সান ম্যারিনো। এই সুযোগে তাদের আরও চেপে ধরে ইংল্যান্ড। ৬৯তম মিনিটে মিঙ্গস, ৭৮তম মিনিটে আব্রাহাম ও ৭৯তম মিনিটে সাকার গোলে বিশাল জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে তারা।
আরেক ম্যাচে হাঙ্গেরির বিপক্ষে ২-১ গোলে হারা পোল্যান্ড ২০ পয়েন্ট নিয়ে হয়েছে গ্রুপ রানার্সআপ।
১৮ পয়েন্ট নিয়ে আলবেনিয়া তিনে, ১৭ পয়েন্ট নিয়ে হাঙ্গেরি চারে, ৬ পয়েন্ট নিয়ে অ্যান্ডোরা পাঁচে আছে। ১০ ম্যাচের সবগুলোই হারা সান ম্যারিনোর শূন্য পয়েন্ট।
ইউরোপ অঞ্চলের বাছাইয়ে ১০ গ্রুপের শীর্ষ ১০ দল সরাসরি পাবে ২০২২ কাতার বিশ্বকাপের টিকেট। ১০ গ্রুপের রানার্সআপ ও নেশন্স লিগের সেরা দুই গ্রুপ জয়ী মিলে ১২ দলের প্লে-অফে ইউরোপ থেকে আরও তিনটি দল সুযোগ পাবে বিশ্বকাপে খেলার।