ইতালিয়ানদের কাঁদিয়ে বিশ্বকাপে সুইজারল্যান্ড

রাশিয়া বিশ্বকাপ খেলতে না পারার কষ্ট হয়তো কখনোই ভুলতে পারবে না আজকের ইতালি। তার সঙ্গে এবার যোগ হলো টানা দ্বিতীয় বিশ্বকাপে উঠতে না পারার শঙ্কা। নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেদের মেলে ধরতে পারল না দলটি। একই সময়ে শুরু হওয়া আরেক ম্যাচে জিতে কাতার বিশ্বকাপে উঠে গেল সুইজারল্যান্ড।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Nov 2021, 09:35 PM
Updated : 15 Nov 2021, 10:46 PM

উইন্ডসর পার্কে সোমবার রাতে ইউরোপ অঞ্চলের বাছাইয়ে ‘সি’ গ্রুপে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছে ইতালি। আর বুলগেরিয়ার মাঠে ৪-০ গোলে জিতে বাজিমাত করেছে সুইজারল্যান্ড।

গত জুলাইয়ে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে উড়তে থাকা ইতালি চার মাসের ব্যবধানে যেন মাটিতে আছড়ে পড়ল। তিন দিন আগে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষেই শেষ দিকে পেনাল্টি পায় তারা। কিন্তু জর্জিনিয়োর ব্যর্থতায় ১-১ ড্রয়ে ঝুলে যায় তাদের বিশ্বকাপ ভাগ্য। সেটিই এবার ছিনিয়ে নিল ইউরো-২০২০ এর কোয়ার্টার-ফাইনালিস্ট সুইজারল্যান্ড।

আট রাউন্ড শেষে পাঁচ জয় ও তিন ড্রয়ে সুইসদের পয়েন্ট ১৮। সমান ৪টি করে জয় ও ড্রয়ে ইতালির পয়েন্ট ১৬।

পুরনো হতাশা পেছনে ফেলার মিশনে শুরুতেই এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ আসে ইতালির সামনে। তবে জিওভান্নি দি লরেন্সোর শট দারুণ নৈপুণ্যে ঠেকান স্বাগতিক গোলরক্ষক।

প্রথমার্ধে ৭০ শতাংশের বেশি সময় বল দখলে রেখে একচেটিয়া আক্রমণ করে যায় ইতালি। তবে প্রতিপক্ষের জমাট রক্ষণে খুব বেশি নিশ্চিত সুযোগ তৈরি করতে পারেনি তারা। এই সময়ে চারটি শট নিয়ে সবকটিই লক্ষ্যে রাখতে পারে দলটি, কিন্তু জালের দেখা মেলেনি।

দ্বিতীয়ার্ধের পঞ্চম মিনিটে উল্টো পিছিয়ে পড়তে বসেছিল ইতালি। তবে ১০ গজ দূর থেকে জর্জ স্যাভিলের শট দারুণ রিফ্লেক্সে ঠেকিয়ে দলকে সমতায় রাখেন গোলরক্ষক জানলুইজি দোন্নারুম্মা।

প্রায় একই সময়ে বুলগেরিয়ার বিপক্ষে নোয়া ওকাফোরের গোলে এগিয়ে যায় সুইসরা। খানিক পর সেখানে রুবেন ভার্গাসের গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ করে সুইজারল্যান্ড।

দৃশ্যপটে পরিবর্তন আনতে গোল করতেই হতো ইতালির। কিন্তু ৬৪তম মিনিটে আরেকটি সুযোগ নষ্ট হয় তাদের। পেনাল্টি স্পটের কাছ থেকে ফেদেরিকো চিয়েসার দূরের পোস্টে নেওয়া শট চলে যায় বাইরে।

এদিকে ইতালির সুযোগ নষ্ট আর ওদিকে সুইজারল্যান্ড এগিয়ে যায় ৩-০ ব্যবধানে। তাদের তৃতীয় গোলটি করেন সেদ্রিক। এ অবস্থায় ইতালির কেবল জিতলেই হতো না। ব্যবধান রাখতে হতো অন্তত দুই গোলের। কিছুই পারল না তারা।

৮১তম মিনিটে উল্টো গোল হজম করা থেকে বেঁচে যায় ইতালি। ডি-বক্সের মুখে বিনা বাধায় স্টুয়ার্ট ডালাসের নেওয়া শট দূরের পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে এবং গোলরক্ষককে এড়িয়ে শট নেন কনর ওয়াশিংটন। সময়মতো গোললাইনে গিয়ে বিব্রতকর হার এড়ান ডিফেন্ডার লিওনার্দো বোনুচ্চি।

তবে শঙ্কাটা মুছে দিতে পারল না চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। অন্যদিকে, ঘরের মাঠে রেমো ফ্রয়লারের গোলে বিশ্বকাপে ওঠার উপলক্ষটা আরও রঙিন করে সুইজারল্যান্ড।

ইতালির বিশ্বকাপে খেলার আশা অবশ্য একেবারে শেষ হয়ে যায়নি। সেজন্য তাদের পাড়ি দিতে প্লে-অফের কঠিন পথ।

ইউরোপ অঞ্চলের বাছাইয়ে ১০ গ্রুপের শীর্ষ ১০ দল সরাসরি পাবে কাতার বিশ্বকাপের টিকেট। ১০ গ্রুপের রানার্সআপ ও নেশন্স লিগের সেরা দুই গ্রুপ জয়ী মিলে ১২ দলের প্লে-অফে ইউরোপ থেকে আরও তিনটি দল সুযোগ পাবে বিশ্বকাপে খেলার।