টোকিওর আসরে এই শুটার অংশ নেন পিস্তলের দুটি ইভেন্টে। কোনোটাতেই উঠতে পারেননি ফাইনালের মঞ্চে। ১০ মিটার এয়ার পিস্তলে হন ১১তম, ২৫ মিটার পিস্তলে ৩৬তম। কিন্তু চাইকা থেমে যাওয়াদের মিছিলে শামিল হতে চান না এখনই। চোখ তার ২০২৪ প্যারিস অলিম্পিক। কিংবা আরও দূরে!
“আমি চালিয়ে যাব; কারণ, আমি আমার খেলাকে ভালোবাসি। সব প্রতিযোগিতাতেই সর্বোচ্চটা করার চেষ্টা করি এবং একটি অলিম্পিক পদক পাওয়ার স্বপ্ন দেখি। তাই এই যাত্রা আমি চালিয়ে যাব।”
চাইকার এই চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার শুরু ২০০০ সালের সিডনি অলিম্পিকস থেকে। নিজের প্রথম আসরে ১০ মিটার এয়ার পিস্তলে হয়েছিলেন ১১তম। চার বছর পর এথেন্সে ১০ ও ২৫ মিটার পিস্তলে যথাক্রমে ১৬ ও ৩২তম।
অলিম্পিকসের ১০ মিটার এয়ার পিস্তলে একবারই প্রাপ্তির খুব কাছাকাছি গিয়েছিলেন ইউক্রেনে জন্ম নেওয়া এই শুটার। সেটা ২০০৮ সালের বেইজিং অলিম্পিকসে। সেবার ১০ মিটারে হয়েছিলেন চতুর্থ। ওই আসরেই ২৫ মিটার এয়ার পিস্তলে হন ১৩তম।
এরপর একটি পদকের আশা, স্বপ্ন নিয়ে ২০১২ সালের লন্ডন ও ২০১৬ সালের রিও দে জেনেইরো অলিম্পিকসেও পা ফেলেছিলেন। কিন্তু যথারীতি সঙ্গী হয়েছে হতাশা। লন্ডনে ১০ ও ২৫ মিটার এয়ার পিস্তলে যথাক্রমে পঞ্চম ও ২৫তম, রিও দে জেনেইরোতে যথাক্রমে ১৬তম ও ২৪তম। টোকিওর আসরেও পিছু ছাড়ল না ব্যর্থতা।
এবারের ব্যর্থতার একটা কারণ অবশ্য খুঁজে পেয়েছেন চাইকা। দুটি ইভেন্টের মাঝে পাঁচ দিনের অপেক্ষাকে ‘সমস্যা’ হিসেবেই দেখছেন তিনি। এ কারণে ২৫ মিটার ইভেন্টে কোনোকিছু পক্ষে ছিল না বলেও দাবি করলেন এই শুটার।
“প্রতিযোগিতাটি অনেক সময় নিয়ে (দিন ধরে) হওয়ায় আমার জন্য এটা ছিল কঠিন। বিরতিটা যদি (১০ মিটার ও ২৫ মিটার ইভেন্টের মধ্যে) এক বা দুই দিনের হত, তাহলে আরও সহজ হত; কারণ এখানে অপেক্ষার পর অপেক্ষা করতে হয়।”
বয়সের কারণে কিংবা ব্যর্থতার ভার বইতে না পেরে সরে দাঁড়ানোদের দলে নেই চাইকা। অবশ্য তার বয়সও যে খুব বেশি হয়েছে, তা নয়; ৪০ বছর। চাইলে টোকিওর আসরে পদক পাওয়া বা অন্যরকম কীর্তি গড়া অনেকের কাছ থেকে তিনি নিতে পারেন অনুপ্রেরণাও।
এবারের আসরে যেমন পদক না পাওয়া জর্জিয়ার ৫২ বছর বয়সী পিস্তল শুটার নিনো সালুকভাৎসে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অবসরের। তবে তার আগে দারুণ এক কীর্তি গড়েছেন তিনি। প্রথম নারী অ্যাথলেট হিসেবে সালুকভাৎসে অংশ নিলেন অলিম্পিকের নয়টি আসরে। ছয়টি তো হয়েই গেছে চাইকার!
টোকিওতে বয়স্ক শুটারদের মধ্যে আরও আছেন কুয়েতের আব্দুল্লাহ আলরশিদি। আগামী মাসে ৫৮ বছর পূরণ করতে যাওয়া এই শুটার ছেলেদের স্কিটে জিতেছেন ব্রোঞ্জ পদক। বয়সের হিসেবে সালুকভাৎসের চেয়ে চাইকা ১২ বছর এবং আলরশিদির চেয়ে ১৮ বছরের ছোট। তাছাড়া, অলিম্পিকসে তো বটেই, শুটিংয়ে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে বয়স বড় কোনো বিষয় নয়।
মূল বিষয় হচ্ছে, খেলার প্রতি নিষ্ঠা, নিবেদন, ভালোবাসা। এগুলো তো চাইকার আছেই!