রিকার্ভ ও কম্পাউন্ড মিলিয়ে মোট পাঁচ ইভেন্টের ফাইনালে উঠে প্রত্যাশিত আলো ছড়াতে পারেননি রোমান-বিউটিরা। দুটি সোনাসহ তিনটি রুপা ও চারটি ব্রোঞ্জ মিলিয়ে ৯টি পদক নিয়ে আইএসএসএফ ইন্টারন্যাশনাল সলিডারিটি ওয়ার্ল্ড র্যাংঙ্কিং আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপ্সের তৃতীয় আসরে রানার্সআপ হয়েছে বাংলাদেশ।
Published : 26 Feb 2019, 05:28 PM
টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার বাংলাদেশের দুটি স্বর্ণই আসে মেয়েদের হাত ধরে। মেয়েদের দলগত কম্পাউন্ডে সুস্মিতা বণিক-শ্যামলী রায়-বন্যা আক্তারে গড়া দল ভারতকে ২৩০-২২৫ স্কোরে হারায়। মেয়েদের রিকার্ভের এককে ইরানের প্রতিপক্ষকে ৩-২ সেটে হারান দিয়া সিদ্দিকী।
প্রথম আসরে ছয়টি সোনা, একটি রূপা ও দুটি ব্রোঞ্জসহ নয়টি পদক জিতে সেরা হয়েছিল বাংলাদেশের আর্চারা। ১৭ দেশের আর্চার নিয়ে ২০১৮ সালে হওয়া দ্বিতীয় আসরে ৫টি সোনা, ৫টি রূপা ও একটা ব্রোঞ্জসহ মোট ১১টি পদক নিয়ে সেরা হয়েছিলেন রোমান-রোকসানারা।
চারটি সোনা, তিনটি করে রুপা ও ব্রোঞ্জ মিলিয়ে ১০টি পদক নিয়ে সেরা হয়েছে প্রথমবারের মতো এই আসরে খেলতে আসা ভারত। একটি করে সোনার পদক পেয়েছে ইরান, থাইল্যান্ড, জার্মানি ও চাইনিজ তাইপে।
ছেলেদের রিকার্ভ এককের ফাইনালে রোমান সানা প্রথম সেট জয়ের পরের তিন সেটে থাইল্যান্ডে থেপনা দেনচাইয়ের কাছে হেরে রুপা পেয়েছেন। রিকার্ভ পুরুষ দলগত বিভাগে ভারতের কাছে হারে রোমান-হাকিম আহমেদ রুবেল-তামিমুল ইসলামে গড়া বাংলাদেশ দল। অপর রুপাটি এসেছে কম্পাউন্ড দলগত বিভাগে ভারতের কাছে ২৩১-২২৮ পয়েন্টে হেরে।
গত দুই আসরের মতো সোনার পদক না পেলেও হতাশ নন কোচ মার্টিন ফ্রেডরিখ। ২৩ দল নিয়ে হওয়া এবারের প্রতিযোগিতার দলগুলোর বিবেচনায় শিষ্যদের পারফরম্যান্সে খুশি জার্মানির এই কোচ। বাড়তি প্রশংসা করেছেন দিয়াকে।
“এটা মোটেও হতাশাজনক ফল নয়। আপনারা যদি অংশগ্রহণকারী দলগুলো এবং আর্চারদের দেখেন…দেখবেন ওরা আমাদের চেয়ে অনেক এগিয়ে। এসব আর্চারদের সঙ্গে খেলে ছেলেদের মান ভালো হয়েছে। অভিজ্ঞতা হয়েছেন।”
“আর্চারি মনস্তাত্ত্বিক বিষয়; এখানে ভালো করতে হলে সময় লাগে। আমাদের আরও অনুশীলন দরকার। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা হলে আরও ভালো হবে। দিয়ার স্কিল ভালো। সে প্রতিভাবান আর্চার।”
ব্যক্তিগত ইভেন্টে সাফল্য না পেলেও মেয়েদের দলগত কম্পাউন্ডে সোনা জিতে খুশি সুস্মিতা, শ্যামলীরা। সুস্মিতা জানালেন দিনের শুরুতে তাদের ইভেন্ট থাকায় মানসিক চাপে ছিলেন তারা।
“অবশ্যই মানসিক চাপ ছিল। দিনের প্রথম ম্যাচ মেয়েদের। বরাবর ভারতের আর্চাররা ভালো করে। এর আগে আমরা ওদের সঙ্গে যতগুলো ম্যাচ খেলেছি, আমরা রুপা পেয়েছি। এবারই প্রথম আমরা ওদেরকে হারালাম। ২২৯ আমাদের রেকর্ড স্কোর। ২২৭ ছিল আগের সেরা, যেটা আমরা ব্যংককে করেছিলাম। ”
“প্রথম পর্বে ৫৭-৫৭ করার পর আমরা পরের ৫৮-৫৭ করে এগিয়ে গেলাম। তখন আত্মবিশ্বাস বেড়ে গিয়েছিল। আসলে তখন আমাদের মনে হল ওরা যাই মারুক না কেন, আমরা আমাদের খেলাটা খেলে যাব।”
“এবারের প্রতিযোগিতা অনেক কঠিন ছিল। ভারত, জার্মানি, তাইপের আর্চাররা এসেছে। এবার অনেকগুলো দল ভালো ছিল। ওয়ার্ল্ড র্যাঙ্কিংয়ে দেখা যাবে ওরা আমাদের চেয়ে এগিয়ে। তবে আমরাও ওদের তুলনায় অনেক ভালো করেছি।”
রিকার্ভ ছেড়ে কম্পাউন্ডে এসে মাস দুয়েকের মধ্যে স্বপ্ন জিতে দারুণ খুশি শ্যামলী জানালেন অনুশীলনে ছেলেদের সঙ্গে লড়াইটা তাদের কাজে লেগেছে।
“প্র্যাকটিসে আমরা ছেলেদের সঙ্গে লড়াই করতাম। তো আমাদের তিন জনের একটাই কথা ছিল-ছেলেদের চেয়ে আমাদের ভালো করতে হবে। প্র্যাকটিসে ছেলেদের স্কোর অনেক ভালো। আমরা মনে করেছি আমরা ভারতের মেয়েদের সঙ্গে নয়, আমাদের ছেলেদের সঙ্গে লড়াই করছি। এ কারণেই সাফল্য এসেছে।”