অবসর মিলতেই ছেলের খেলা দেখতে ঢাকায় এসেছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাবেক ফুটবলার টেডি শেরিংহ্যাম। ছেলে চার্লস এডওয়ার্ড উইলিয়াম শেরিংহ্যাম অবশ্য বাবাকে জয় উপহার দিতে পারেননি। মোহামেডান স্পোর্টিংয়ের কাছে হেরেছে তার দল সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব। তবে ম্যাচ দেখার ফাঁকে ছেলের বাংলাদেশ মিশন নিয়ে আশার কথা জানালেন ইন্ডিয়ান সুপার লিগের দল অ্যাটলেটিকো ডি কলকাতার কোচ।
Published : 10 Dec 2017, 08:11 PM
ফুটবল ক্যারিয়ারের সাফল্যের দিক থেকে বাবার চেয়ে ঢের পিছিয়ে ছেলে। ইউনাইটেডের হয়ে তিনটি প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা, ১৯৯৮-৯৯ মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জেতা টেডি। জাতীয় দলের হয়ে সাবেক ফরোয়ার্ড খেলেছেন দুটি বিশ্বকাপ ও একটি ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ। অন্যদিকে ক্রিস্টিাল প্যালেস, এএফসি বোর্নমাউথে থিতু হতে না পারা উইলিয়াম ইউরোপ ছেড়ে এখন বাংলাদেশের দল সাইফ স্পোর্টিংয়ে।
বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে রোববার ছেলের ম্যাচ দেখতে এসে টেডি অবশ্য তুলনার পথে হাঁটতে চাইলেন না। বরং তার ২৯ বছর বয়সী ছেলে এ পর্যন্ত যা করেছে তা নিয়েই গর্বিত তিনি। এখন তার চাওয়া বাংলাদেশে আলো ছড়াক উইলিয়াম।
“কয়েক সপ্তাহ ধরেই সে বলছে বাংলাদেশে আসতে; তার খেলা দেখতে। এ মুহূর্তে অ্যাটলেটিকো ডি কলকাতার ম্যাচ নেই। পরের ম্যাচ ১৭ তারিখে। তাই চলে এলাম। আমি তার প্রতিটি ম্যাচ দেখতে পছন্দ করি; এ সপ্তাহে সে চাওয়টা পূরণ হয়েছে; জানি না, পরের সপ্তাহে আসতে পারব কিনা কিন্তু আমি চেষ্টা করব।”
“সে তার ক্যারিয়ারে যা করেছে, তা নিয়ে আমি গর্বিত। সেটা আমার মতো হয়নি কিন্তু আমি বাবা-ছেলের ক্যারিয়ারের তুলনা করতে চাই না। সে যেখানে আছে, যতদূর এসেছে, আমি তাতেই গর্বিত। নিজের ভাগ্য পরীক্ষা করার জন্য তার বাংলাদেশে আসাতেও আমি গর্বিত। কেননা, এটাও সহজ কাজ নয় এবং অনেকেই সেটা করতে পারে না। সে এখানে দায়িত্ব নিয়ে এসেছে এবং আমি আশা করি, সেটা কাজেও দেবে।”
সাইফের হয়ে খেলা ৫ ম্যাচে দুই গোল করেছেন উইলিয়াম। আবাহনী লিমিটেডের বিপক্ষে ২-১ গোলে আর মুক্তিযোদ্ধার বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে জেতা ম্যাচে। ছেলের প্রথম গোলটি দেখেছেন বলেও জানান টেডি।
“আমি তার প্রথম গোলটা দেখেছি। দ্বিতীয়টি এখনও দেখা হয়ে ওঠেনি। চার্লির প্রথম গোলটা দারুণ ছিল। শুনেছি, দ্বিতীয় গোলটা ভালো হয়েছে। আপনারাই তো আমাকে বলবেন, সে ঠিকঠাক খেলছে কিনা!”
“আমি আবারও বলছি, তার এখানে আসায় আমি অবাক হয়েছিলাম। এক বছর আগেও আমরা লন্ডনে ছিলাম। কিন্তু এখন সে এখানে-আমি কলকাতায়। তবে আমার মনে হয়, আমি এখানে থাকি বা না-থাকি, সে আসত। বাংলাদেশে আসাটা তার জন্য নিজেকে মেলে ধরার এবং পরিচিতি পাওয়ার জন্য ভালো সুযোগ। কে জানে, এটা তাকে সামনের দিনে কোথায় নিয়ে যাবে।”
১৯৯৮-৯৯ মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখকে ২-১ গোলে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল ইউনাইটেড। যোগ সময়ে দলকে সমতা ফেরানোর পর সতীর্থকে দিয়ে জয়সূচক গোলটিও করিয়েছিলেন টেডি। ইউনাইটেডের কিংবদন্তি কোচ অ্যালেক্স ফার্গুসনের প্রশংসা করতেও ভোলেননি তিনি। ইংল্যান্ডের হয়ে ৫১টি ম্যাচ খেলা এই ফরোয়ার্ড বাংলাদেশে ফুটবল নিয়ে কাজ করার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেননি।
“ফুটবলে কখন কি হয়, তা আপনি আগাম কখনই বলতে পারবেন না। বছর খানেক আগে আপনি যদি আমাকে জিজ্ঞেস করতেন কলকাতার কোচ হব কিনা? সম্ভবত আমি বলতাম-না। কিন্তু ফুটবল মজার খেলা; এখানে বছর খানেক তো পরের কথা, আগামী সপ্তাহে কি হবে আপনি সেটাও জানেন না।”