বিশ্বকাপ বাছাই
শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের এটাই সবচেয়ে কম ব্যবধানের হার।
Published : 06 Jun 2024, 05:47 PM
দৃঢ়তাপূর্ণ রক্ষণে চিড় ধরল দুর্ভাগ্যের ফেরে, আত্মঘাতী গোলে। দ্বিতীয়ার্ধে বোঝাপড়ার ঘাটতিতে বাংলাদেশ হজম করল দ্বিতীয় গোল। তাতে শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আবারও হারের হতাশা সঙ্গী হলো বটে; কিন্তু ব্যবধান অল্প হওয়ার পাশাপাশি আরও অনেক কিছু নিয়েই স্বস্তি থাকল স্বাগতিকদের।
২০২৬ বিশ্বকাপ ও ২০২৭ এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে বৃহস্পতিবার বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২-০ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ। বাছাইয়ে এ নিয়ে চতুর্থ ম্যাচ হারল হাভিয়ের কাবরেরার দল।
এশিয়ান কাপ, বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ অস্ট্রেলিয়ার মাঠে এবার প্রথম লেগে বাংলাদেশ উড়ে গিয়েছিল ৭-০ গোলে। ২০১৫ সালের দেখায় দুই লেগের হার ছিল যথাক্রমে ৫-০ ও ৪-০ ব্যবধানে। সে তুলনায় এবারই তাদের বিপক্ষে সবচেয়ে কম ব্যবধানে হারল বাংলাদেশ।
জামাল ভূইয়াকে বেঞ্চে রেখে শুরুর একাদশ সাজান কাবরেরা। অধিনায়কের আর্মব্যান্ড ওঠে অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার তপু বর্মনের বাহুতে। চোট কাটিয়ে ফেরা ফরোয়ার্ড শেখ মোরসালিন ও ডিফেন্ডার কাজী তারিক রায়হান খেলেন শুরু থেকে।
দ্বিতীয় মিনিটে প্রথম আক্রমণেই ঘটতে পারত বিপদ। ফ্রি কিকে বক্সে বল পেয়েছিলেন জ্যাকসন ইরভিন। কিন্তু ডিফেন্ডাররা ঘিরে থাকায় শট নিতে পারেননি এই মিডফিল্ডার। সতীর্থের উদ্দেশে তার বাড়ানো পাস চলে যায় বাইরে।
দশম মিনিটে পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা করে বাংলাদেশ। তবে রাকিব হোসেনকে পেছন থেকে ট্যাকল করে আক্রমণ ভেস্তে দেন অস্ট্রেলিয়ার ডিফেন্ডার কাইল রোলেস।
শুরু থেকেই খেলা হতে থাকে বাংলাদেশের অর্ধে। তবে তপু, তারিক, মোহাম্মদ হৃদয় মিলে ঘর আগলে রাখেন। অষ্টাদশ মিনিট ডান দিক থেকে আসা ক্রস ক্লিয়ার করেন চোট কাটিয়ে ফেরা তারিক।
২৬তম মিনিটে সতীর্থের ক্রসে স্লাইড করেও পা ছোঁয়াতে পারেননি নেস্ট্রয় ইরানকুন্ডা। তিন মিনিট পর কিছুটা দূর্ভাগ্যের শিকার হয়ে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। নেস্ট্রয়ের ব্যাক পাস পেয়ে জোরাল শট নিয়েছিলেন আজদিন রুস্টিক; বল আটকাতে পা চালিয়েছিলেন মেহেদী হাসান, বল তার পায়ে লেগে দিক পালে মিতুল মারমাকে বোকা বানিয়ে জড়ায় জালে।
গত বছর মেলবোর্নের প্রথম লেগে চতুর্থ মিনিটে গোল হজম করেছিল বাংলাদেশ। ২০১৫ সালের ওই দুই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া জালের দেখা পেয়েছিল ষষ্ঠ মিনিটে। রক্ষণের দৃঢ়তায় তাদেরকে এবার প্রায় আধ ঘণ্টা আটকে রাখতে পারলেন মিতুল-মোরসালিনরা।
কুলিং ব্রেকের পর ৪২তম মিনিটে পাল্টা আক্রমণে প্রতিপক্ষকে পরীক্ষায় ফেলতে পারতো বাংলাদেশ। কিন্তু মোরসালিন নিজে গোলের চেষ্টা না করে ডানে থাকা রাকিবকে পাস দেওয়ার চেষ্টা করেন; কিন্তু ডিফেন্ডারের বাঁধায় নষ্ট হয় আক্রমণটি।
৫২তম মিনিটে সোহেল রানার বদলি নামেন জামাল। এর ঠিক ১০ মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করে নেয় অস্ট্রেলিয়া। জর্ডান বসের ক্রসে তপু ক্লিয়ারের তেমন চেষ্টাই করেননি, তার পেছনে থাকা মেহেদীকে টপকে হেডে কুসিনি ইয়েঙ্গি পরাস্ত করেন মিতুলকে। হেডের আগেই কুসিনির চার্জে মেহেদী ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে গেলে ফাউলের আবেদন করে বাংলাদেশ, তবে সাড়া দেননি রেফারি।
বাকি সময়েও বলের নিয়ন্ত্রণে আধিপত্য করে বাছাইয়ে টানা চার জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলতে নামা অস্ট্রেলিয়া। তবে বাংলাদেশকে নতুন করে আর বিপদে ফেলতে পারেনি তারা।
বাছাইয়ে নিজেদের মাঠে এ দফায় শেষ ম্যাচ খেলল বাংলাদেশ। আর মাত্র একটি ম্যাচ আছে; আগামী ১১ জুন কাবরেরার দল মুখোমুখি হবে লেবাননের। বাছাইয়ে এ পর্যন্ত পাওয়া ১ পয়েন্ট বাংলাদেশ পেয়েছিল লেবাননের বিপক্ষে কিংস অ্যারেনাতে ১-১ ড্র করে।