নেপাল ম্যাচেও জামাল-জিকোদের প্রেরণা মেয়েদের সাফল্য

নেপালের বিপক্ষে সাম্প্রতিক সময়ের পরিসংখ্যান ভুলে জয়ের ধারা ধরে রাখতে মরিয়া বাংলাদেশ।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Sept 2022, 01:08 PM
Updated : 26 Sept 2022, 01:08 PM

কম্বোডিয়া জয়ের আত্মবিশ্বাস সঙ্গী। দলকে বাড়তি অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে সবশেষ মেয়েদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে সাবিনা-কৃষ্ণাদের ঐতিহাসিক সাফল্য। এই দুই প্রাপ্তির আনন্দ নেপালের বিপক্ষেও টেনে নিতে চায় বাংলাদেশ। রোমাঞ্চকর ম্যাচ উপহার দিতে উন্মুখ স্বাগতিক নেপালও।

কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় পৌনে ৬টায় প্রীতি ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই দল। গত বৃহস্পতিবার রাকিব হোসেনের একমাত্র গোলে কম্বোডিয়াকে হারানো হাভিয়ের কাবরেরার দল ধরে রাখতে চায় জয়ের ধারা।

নেপালের বিপক্ষে সবশেষ দুই দেখায় হতাশা সঙ্গী বাংলাদেশের। ২০২১ সালে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে ২-১ গোলের হার; একই বছর সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে মালদ্বীপের মালেতে ১-১ ড্র করে ছিটকে গিয়েছিল দল।

পরিসংখ্যানের অতীত খুঁড়ে বেদনা জাগাতে মোটেও আগ্রহী নন জামাল ভূঁইয়া। বরং বাংলাদেশ অধিনায়ক সাম্প্রতিক সময়ের সাফল্যের ভেলায় চেপে পৌঁছতে চান কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে। স্বাগতিক সমর্থকদের চাপ সামলানোর প্রসঙ্গে কদিন আগে দশরথে বাংলাদেশের মেয়েদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের উদাহরণও টানলেন তিনি।

“আমরা প্রায় একমাস একসঙ্গে রয়েছি। কম্বোডিয়ার বিপক্ষে জিতেছি। নেপাল ম্যাচ নিয়ে ছেলেদের মধ্যে ভরপুর আত্মবিশ্বাস আছে। আমরা কালকের ম্যাচের জন্য প্রস্তুত। আমরা এটাও জানি, এটা নেপালের নিজেদের মাঠ, এ কারণে স্বাগতিকদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা আছে। তবে আমরা আগামীকাল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ফুটবল খেলতে চাই। ত্রিদেশীয় সিরিজের হার এবং সবশেষ সাফের ড্র-এই দুই ম্যাচ নিয়ে ভাবছি না। সেটা আমরা ভুলে গেছি। আগামীকালের ম্যাচের দিকে মনোযোগ দিতে চাই। ”

“এর আগেও আমরা এখানে কিছু ম্যাচ খেলেছি। আমার মনে হয় না, এখানে খেলা ছেলেদের জন্য বড় কোনো সমস্যা হবে। নেপালের খুবই ভালো হোম ক্রাউড আছে। অবশ্যই তারা নেপালের খেলোয়াড়দের সাহায্যে আসবে, কিন্তু কয়েকদিন আগে এ মাঠে আমাদের মেয়েরা ইতিহাস গড়েছে। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছে। আমরাও তার পুনরাবৃত্তি করতে চাই। আমরাও কালকে জিততে চাই।”

বাংলাদেশ কোচ হিসাবে কম্বোডিয়া ম্যাচেই প্রথম জয়ের স্বাদ পেয়েছেন কাবরেরা। জয়ের ধারায় থাকার ব্যাপারে আশাবাদী এই স্প্যানিশ কোচ।

“২২ দিনের লম্বা ট্রেনিং এবং কম্বোডিয়া ম্যাচ শেষ করে আমরা এখানে এসেছি। অবশ্যই কম্বোডিয়ার বিপক্ষে জয়টি আমাদের জন্য বাড়তি আত্মবিশ্বাস এনে দিয়েছে। এখানে এসে রিকভারির দিকে আমরা গুরুত্ব দিয়েছি। এখানকার আবহাওয়া ভালো। ছেলেরাও আত্মবিশ্বাসী, আগামীকালকের ম্যাচ জেতার জন্য ছেলেরা যথেষ্ট পরিশ্রম করেছে।”

“সবশেষ দুই দল যখন সাফে মুখোমুখি হয়েছিল, আমি কোচের দায়িত্বে ছিলাম না। সেটিও আঁটসাঁট ম্যাচ হয়েছিল। নেপাল-বাংলাদেশ ম্যাচ ফিফটি-ফিফটি ম্যাচ হয়। দিনশেষে যারা প্রতিপক্ষের চেয়ে বেশি নিখুঁত হবে, গোল করার ক্ষেত্রে যারা আরও বেশি কার্যকরী হবে, তারাই জিতবে। আমিও মনে করি নেপাল আমাদের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ফুটবল খেলবে এবং আমরা তার জন্য প্রস্তুত।”

সবশেষ ম্যাচের হিসাবে বাংলাদেশের ঠিক উল্টো মেরুতে অবস্থান নেপালের। এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে ইন্দোনেশিয়ার কাছে ৭-০ গোল হজম করে এসেছে তারা। দলটির কোচ প্রদীপ হুমাগাইন তাই বাংলাদেশ ম্যাচটিকে দেখছেন ঘুরে দাঁড়ানোর ভালো সুযোগ হিসেবে।

“দল নেপালের প্রতিনিধিত্ব করবে, আগামীকালের ম্যাচের জন্য আমরা প্রস্তুত। প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলাটা আমাদের জন্য ভালো একটা সুযোগ।”

নেপাল অধিনায়ক কিরণ চেমজং প্রতিশ্রুতি দিলেন মজার ম্যাচ উপহার দেওয়ার। দশরথে স্বদেশি সমর্থকদেরও পাশে চাইলেন ৩২ বছর বয়সী এই গোলরক্ষক।

“বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য আমরা প্রস্তুত। নেপাল এবং অল নেপাল ফুটবল ফেডারেশনের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ দলকে অভিনন্দন। এর বেশি আর কী বলব। নিশ্চিতভাবেই এটা ভালো একটা ম্যাচ হতে যাচ্ছে। আমার বিশ্বাস কালকের ম্যাচটি শিহরণ জাগানীয়া হবে। বিশ্বাস করি, মাঠে আমাদের সমর্থকরা থাকবে।”