কোপা আমেরিকা
চার বছরের মধ্যে তৃতীয় বড় শিরোপা জয় উদযাপনে রাতের আঁধারকেও বর্ণিল করে তোলেন আর্জেন্টিনার সমর্থকরা।
Published : 15 Jul 2024, 05:33 PM
অস্বাভাবিক মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে নিত্য লড়াইয়ের দেশ আর্জেন্টিনার জন্য স্বস্তির সুবাতাস হয়ে এসেছে ফুটবল দলের কোপা আমেরিকা জয়। লিওনেল মেসি, আনহেল দি মারিয়াদের ট্রফি নিশ্চিতের পর তাই রাজধানী শহর বুয়েন্স আইরেসে নেমেছে মানুষের ঢল।
ফ্লোরিডার সঙ্গে বুয়েন্স আইরেসের সময়ের পার্থক্য মাত্র এক ঘণ্টার। টিকেটবিহীন দর্শকদের বিশৃঙ্খলার কারণে ফাইনাল ম্যাচটি পিছিয়ে যায় প্রায় দেড় ঘণ্টা। পরে মূল ম্যাচে নির্ধারিত ৯০ মিনিটে গোল না হওয়ায় খেলা গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে।
সব মিলিয়ে ম্যাচ শেষ হতে হতে বুয়েন্স আইরেসে ঘড়ির কাঁটা রাত ১টা ছুঁয়ে ফেলে। তাতে কী! চ্যাম্পিয়ন হওয়ার খুশিতে আঁধার রাতকে বর্ণিল করে তোলেন হাজার হাজার মানুষ। নাচ-গান আর আনন্দ-উল্লাসে রাত ৩টার পরও রাজধানী শহরটিকে জাগিয়ে রাখেন আর্জেন্টিনার সমর্থকরা।
হার্ড রক স্টেডিয়ামে অতিরিক্ত সময়ে লাউতারো মার্তিনেসের করা গোলে শিরোপা নিশ্চিত হয় আর্জেন্টিনা। ২০২১ সালের কোপা আমেরিকা, ২০২২ সালের ফিফা বিশ্বকাপসহ চার বছরের এটি তাদের তৃতীয় বড় শিরোপা। মাঝে ইতালির বিপক্ষে ফিনালিস্সিমাও জিতেছিল তারা।
৩৬ বছরের অপেক্ষা ঘুচিয়ে ২০২২ বিশ্বকাপ জয়ের পর লাখো মানুষের ঢল নেমেছিল বুয়েন্স আইরেসে। এবার রেকর্ড ১৬তম কোপা আমেরিকা জেতার পরও ব্যতিক্রম ঘটেনি। কনকনে শীতের রাতেও পরিবার-পরিজন নিয়ে সবাই নেমে এসেছেন রাস্তায়। স্লোগানে-স্লোগানে কাঁপিয়েছেন চারপাশ।
বার্ষিক ৩০০ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে লড়তে থাকা দেশটির মানুষের জন্য কোপা আমেরিকা জেতা অনেক বড় উপহার, বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে এমনটাই বলেন ২৬ বছর বয়সী শিক্ষার্থী পাওলো রুতস।
“তাদের (আর্জেন্টিনার ফুটবলার) কাছে আমরা এর চেয়ে বেশি কিছু চাইতে পারতাম না। প্রাত্যাহিক জীবনে আমার অর্থনৈতিক দুশ্চিন্তার মাঝেও তারা আমাদের আনন্দ দেওয়া বন্ধ করে না।”
ফাইনাল ম্যাচটি দিয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানান আনহেল দি মারিয়া। ১১৭তম মিনিটে মাঠ ছাড়ার সময় তার চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়তে থাকে জল। তার বদলি নামেন ৩৬ বছর বয়সী ডিফেন্ডার নিকোলাস ওতামেন্দি। তিনিও আছেন ক্যারিয়ারের অন্তিম লগ্নে।
পায়ের চোটে ৬৪তম মিনিটে কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছেড়ে যান লিওনেল মেসি। পরে সতীর্থদের নৈপুণ্যে শিরোপা জেতার পর ট্রফি গ্রহণের দি মারিয়া ও ওতামেন্দিকে ডেকে নেন আর্জেন্টিনা অধিনায়ক।
ম্যাচ চলাকালে মেসির চোখে জল দেখে নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি ১৭ বছর বয়সী দামিয়ান। অল্প কথায় তিনি প্রকাশ করেন নিজের উচ্ছ্বাস, “মেসি যখন কান্না করছিল, আমিও কেঁদেছি। তবে আমি এখন খুশি।”
স্বাভাবিকভাবেই ঠিক বিপরীত চিত্র কলম্বিয়ানদের। ২২ বছর বয়সী আইনের শিক্ষার্থী ফ্রাঙ্ক ওসপিনা অবশ্য আশা হারাচ্ছেন না। রয়টার্সকে তিনি শিগগিরই অন্য শিরোপা জেতার আশার কথা বলেন।
“আমাদের আরও ভালো কিছু প্রাপ্য ছিল। এটি হতাশার। তবে জয়ী শুধু একটি দলই হতে পারে এবং সেটি আর্জেন্টিনা। আমরা অন্য কোনো সময় জিতব।”