হলান্ড পেনাল্টি না নেওয়ায় বেজায় চটেছেন ম্যান সিটি কোচ

উদারতা দেখিয়ে হ্যাটট্রিক করার জন্য গিনদোয়ানকে পেনাল্টি নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন হলান্ড, কিন্তু ম্যান সিটি অধিনায়ক পারেননি গোল করতে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 May 2023, 06:18 AM
Updated : 7 May 2023, 06:18 AM

মুহূর্তটি ছিল উদারতার আর সৌহার্দ্যের। তবে একটু পরেই তা রূপ নিল হতাশায়। পেপ গুয়ার্দিওলার কাছে সেই হতাশা রূপ নিল রাগে। মাঠেই সেটির প্রকাশ করলেন তিনি। ম্যাচের পরও ম্যানচেস্টার সিটি কোচ অকপটে বললেন, পেনাল্টি না নেওয়ায় আর্লিং হলান্ডের ওপর তিনি বিরক্ত। 

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে লিডস ইউনাইটেডের বিপক্ষে ম্যানচেস্টার সিটির ম্যাচের ঘটনা এটি। শনিবার নিজেদের মাঠে প্রথমার্ধেই সিটি এগিয়ে যায় গিনদোয়ানের দুই গোলে। এরপর আর গোল পাচ্ছিল না তারা। অবশেষে ৮৩তম মিনিটে সুযোগ আসে। পেনাল্টি পায় সিটি। 

কিন্তু নিয়মিত পেনাল্টি নেন যিনি, দুর্দান্ত ফর্মে থাকা সেই হলান্ড শট নিতে আমন্ত্রণ জানান গিনদোয়ানকে। উদ্দেশ্য পরিষ্কার, সিটি অধিনায়ককে হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরি করে দেওয়া। কিন্তু পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন গিনদোয়ান। তখন চোখ পাকিয়ে হাতের ইশারায় হলান্ডকে কিছু বলছিলেন গুয়ার্দিওলা। পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল, হলান্ডের ওই পদক্ষেপ তার ভালো লাগেনি। 

মিনিট দুয়েক পরই লিডস একটি গোল করলে গুয়ার্দিওলার হতাশা আর সিটির শঙ্কা, দুটিই বাড়ে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য আর বিপদে পড়তে হয়নি তাদের। ম্যাচ জিতে আর্সেনালের চেয়ে চার পয়েন্ট এগিয়ে শীর্ষস্থান আরও সংহত করে তারা। 

তবে পেশাদার জগতে উদারতার আবেগ যে ভালো লাগেনি, তা ম্যাচ শেষে স্পষ্টই বলে দেন গুয়ার্দিওলা। 

“গিনদো (গিনদোয়ান) যদি গোলটি করতে পারত, তাহলে সবাই বলত, ‘ঠিক আছে, হ্যাটট্রিক, ওয়েল ডান।’ কিন্তু পেনাল্টি যে নেয়, তারই নেওয়া উচিত। ২-০তে এগিয়ে থাকার পর এটিই পেশাদারীত্ব এবং কোনো পরিস্থিতিতেই তা ভুলে যাওয়া উচিত নয়।” 

শুধু হলান্ডের ওপরই নয়, গুয়ার্দিওলা এক চোট নেন গিনদোয়ানকেও। সেই উত্তাপ টের পান গিনদোয়ানও। ৩২ বছর বয়সী জার্মান মিডফিল্ডার ম্যাচ শেষে বিবিসিকে বললেন, পেনাল্টির সুযোগ পেয়ে তিনি নিজেও অবাক হয়েছিলেন। 

“প্রথম তিনি (কোচ গুয়ার্দিওলা) হলান্ডকে বুঝিয়ে দেন যে এই ঘটনায় বেশ খেপে গেছেন, পরে আমাকেও এক হাত নেন। তবে যা হওয়ার, হয়েই গেছে।” 

“পেনাল্টি পেয়ে আর্লিং (হলান্ড) বল হাতে নেওয়ার পর আমি নিশ্চিত ছিলাম যে, সে-ই নেবে পেনাল্টি। কিন্তু সে তখন আমাকে ডাকছিল। আমি বারবার তার সঙ্গে কথা বলি যে, সে নিশ্চিত কি না। সে জানায় যে সে নিশ্চিত এবং আমার হাতে বল তুলে দেয়। আমি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম… (কিন্তু হলো না)।” 

ইংলিশ ফুটবলে অভিষেক মৌসুমেই রেকর্ডের পর রেকর্ড গড়া হলান্ড এই ম্যাচে জালের দেখা পাননি। গোল না পেলেও অবশ্য তার পারফরম্যান্সে ও দলের পারফরম্যান্সে খুশি গুয়ার্দিওলা। তবে পেনাল্টি নিয়ে অমন ঝুঁকি তিনি মানতেই পারছেন না। 

“পারফরম্যান্স দুর্দান্ত ছিল। আমরা সত্যিই খুব, খুব ভালো খেলেছি। কে জানে, হয়তো আর্লি (হলান্ড) পেনাল্টি নিলেও মিস হতে পারত। হয়তো গিনদোয়ান গোলও করতে পারত। তবে তখন আমরা ২-০তে এগিয়ে ছিলাম। নিয়মিত পেনাল্টি নেয় কে? আর্লিং… ব্যস।” 

“মানুষ হিসেবে আর্লিং এমনই। সে অবিশ্বাস্য, সবসময় গোল করতে মুখিয়ে থাকে। পাশাপাশি তার কাছে দল ও সতীর্থরাও গুরুত্বপূর্ণ। আজকে গোলের সুযোগ সে কিছু পেয়েছে। গোল করতে না পারলেও দারুণ খেলেছে। তবে ব্যবধান যখন ২-০, বিশেষ করে ইংল্যান্ডের ফুটবলে এই ব্যবধান এমন কিছুই শেষ নয়। আমার তাই চাওয়া, যে নিয়মিত পেনাল্টি নেয়, যে এটায় বিশেষজ্ঞ, সে-ই নেবে।” 

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে শিরোপা জয়ের দিকে এক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার পর এবার ম্যানচেস্টার সিটির লড়াই স্বপ্নের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপার পথে এগিয়ে চলা। সেমি-ফাইনালে তাদের সামনে এখন বাধা রিয়াল মাদ্রিদ, যাদের কাছে গত মৌসুমেও সেমি-ফাইনালে অবিশ্বাস্যভাবে হেরে গিয়েছিল গুয়ার্দিওলার দল। এবার প্রথম লেগের লড়াই আগামী মঙ্গলবারে।