ইংলিশ ফুটবল
কেবল এই জোড়া গোলেই নয়, হলান্ডের পেশাদারিত্ব, গোলের ক্ষুধা এবং গুয়ার্দিওলার মন্তব্যের যথার্থতার প্রমাণ মিলছে আরেকটি তথ্যে।
Published : 15 Sep 2024, 08:29 AM
দুই বছর আগে সত্যিকারের এক ‘গোলমেশিন’ রূপেই ম্যানচেস্টার সিটিতে পা দিয়েছিলেন আর্লিং হলান্ড। অভিষেক মৌসুমের অবিশ্বাস্য ছুটে চলায় গোলের পর গোল করে গড়েছিলেন অনেক রেকর্ড। এবার যেন তারই পুনরাবৃত্তি করতে চলেছেন তিনি। অন্তত পেপ গুয়ার্দিওলার কথায় তেমনই মনে হচ্ছে। ম্যানচেস্টার সিটির কোচ তো বলছেন, এই দলের জার্সিতে এবারই সবচেয়ে সেরা ফর্মে আছেন নরওয়ের তারকা।
এবারের প্রিমিয়ার লিগে গত দুই ম্যাচেই হ্যাটট্রিক করা হলান্ড শনিবারের ম্যাচেও করেছেন জোড়া গোল। তার নৈপুণ্যেই শুরুতে পিছিয়ে পড়ার ধাক্কা সামলে ব্রেন্টফোর্ডকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়েছে সিটি।
সিটির ম্যাচের শুরুটা ছিল ভীষণ হতাশার। ২২ সেকেন্ডেই এগিয়ে যায় ব্রেন্টফোর্ড। সেই ধাক্কা সইয়ে ২০তম মিনিটে কেভিন ডে ব্রুইনের পাস পেয়ে ডান পায়ের কোনাকুনি শট সমতা টানেন হলান্ড। ১২ মিনিট পর এদেরসনের উঁচু করে বাড়ানো বল ধরে অফসাইডের ফাঁদ এড়িয়ে বক্সে ঢুকে আগুয়ান গোলরক্ষকের পাশ দিয়ে জয়সূচক গোলটি করেন গত দুই আসরের গোল্ডেন বুট জয়ী। এবার চার ম্যাচে ৯ গোল করে সবার আগে ছুটছেন তিনিই।
কেবল এই জোড়া গোলেই নয়, হলান্ডের পেশাদারিত্ব, গোলের ক্ষুধা এবং গুয়ার্দিওলার মন্তব্যের যথার্থতার প্রমাণ মিলছে আরেকটি তথ্যে।
গত সপ্তাহে হলান্ড হারিয়েছেন তার খুব কাছের এক পারিবারিক বন্ধুকে। তার মৃত্যুর শোক সামলে তিনি এই ম্যাচে খেলতে পারবেন কি-না, জেগেছিল অনিশ্চয়তা। তবে, দলে প্রতি নিবেদনে ঠিকই মাঠে নামেন তিনি, দলকে দেখান জয়ের পথও।
জীবনের কঠিন সময়ের মাঝেও প্রিয় শিষ্যের এমন পারফরম্যান্সে মুগ্ধতার শেষ নেই গুয়ার্দিওলার। ম্যাচ শেষে তাই আরও একবার তিনি প্রশংসায় ভাসালেন ২৪ বছর বয়সী ফরোয়ার্ডকে।
“আমি বলব সে তার সেরা ছন্দে আছে, যদিও মাত্রই লিগের চারটি ম্যাচ হয়েছে, বেশি খেলা হয়নি। সে যদি খেলার জন্য প্রস্তুত না থাকত, তাহলে আমাকে বলত। সে অবিশ্বাস্য এক অস্ত্র। অবশ্যই, জীবনের এই কঠিন মুহূর্তে খেলাটা কঠিন। আমরা এখানে দলের সবার খেয়াল রাখার চেষ্টা করি এবং কেউ কোনো সমস্যায় থাকলে আমরা তার পাশে থাকি।”
“সবসময় দৃঢ় থাকতে হবে। যদি কোনো আঘাত আসে, তাহলে হয়তো ৯০ মিনিটের জন্য ব্যক্তিগত জীবনকে ভুলে থাকতে হবে।”
টানা তৃতীয় ম্যাচে হ্যাটট্রিকের কীর্তি গড়া হয়ে যেতে পারত হলান্ডের; কিন্তু ভাগ্য সহায় হয়নি। ৮১তম মিনিটে প্রথম দফায় তার শট লাগে পোস্টে, আরেকটি শট প্রতিহত হয় রক্ষণে। কয়েক সেকেন্ড পর তার আরেক শট ঠেকান গোলরক্ষক।
ওই দুই গোলেই অবশ্য আরেকটি রেকর্ড হয়ে গেছে হলান্ডের। প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে মৌসুমের প্রথম চার ম্যাচে সবচেয়ে বেশি গোল (৯) করার কীর্তি এখন তার। আগের রেকর্ড ছিল ওয়েইন রুনির, ২০১১-১২ মৌসুমে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে প্রথম চার ম্যাচে ৮ গোল করেছিলেন তিনি।
সিটির জার্সিতে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১০৩ ম্যাচে হলান্ডের গোল হলো ৯৯টি; এর ৭২টি প্রিমিয়ার লিগে, ৭০ ম্যাচে।