জার্মান ফুটবল
বায়ার্ন মিউনিখকে আবারও চ্যাম্পিয়নের বেশে ফেরানোর চ্যালেঞ্জ ৩৮ বছর বয়সী এই কোচের সামনে।
Published : 30 May 2024, 07:10 PM
জার্মানির সফলতম দল বায়ার্ন মিউনিখের দায়িত্ব নিয়েই তার দলের খেলার ধরন কেমন হবে, সেটা পরিষ্কার করে জানালেন ভিনসেন্ট কোম্পানি। দলকে আগ্রাসী ও সাহসী ফুটবল খেলার বার্তা দিলেন সাবেক বেলজিয়ান ডিফেন্ডার।
বার্নলি প্রিমিয়ার লিগ থেকে নেমে যাওয়ার পর দলটির কোচের দায়িত্ব ছেড়ে বায়ার্নের প্রধান কোচ হিসেবে যোগ দিয়েছেন কোম্পানি। বুধবার তাকে তিন বছরের চুক্তিতে নিয়োগ দেওয়ার কথা জানায় মিউনিখের ক্লাবটি।
এবারের মৌসুমটা ভীষণ বাজে কেটেছে বায়ার্নের। বুন্ডেসলিগায় তাদের কেবল ১১ মৌসুমের রাজত্বই শেষ হয়নি, এবার তারা লিগ শেষ করেছে চ্যাম্পিয়ন বায়ার লেভারকুজেন ও রানার্সআপ স্টুটগার্টের পেছনে তৃতীয় হয়ে। জার্মান কাপে বায়ার্নের পথচলা থামে দ্বিতীয় রাউন্ডে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তারা সেমি-ফাইনালে উঠলেও, সেখান থেকে তাদেরকে বিদায় করে দেয় রেয়াল মাদ্রিদ।
এক দশকের বেশি সময় পর এবারই প্রথম মৌসুমে ঘরোয়া কিংবা ইউরোপিয়ান কোনো শিরোপা্ই জিততে পারেনি জার্মানির সফলতম ক্লাবটি। টমাস টুখেলের উত্তরসূরি হিসেবে যোগ দিয়ে কোম্পানির সামনে তাই এখন কঠিন চ্যালেঞ্জ, বায়ার্নকে আবারও চ্যাম্পিয়নের বেশে ফেরানো। ৩৮ বছর বয়সী সাবেক এই তারকা ফুটবলার নতুন চ্যালেঞ্জে দারুণ রোমাঞ্চিত। সফল হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদীও। আর সেটা সাহসী ফুটবলেই করতে চান বলে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে জানালেন তিনি।
“আমার দলের জন্য সেটা খুব সোজা। আপনি সেভাবেই কোচিং করাবেন, ব্যক্তি হিসেবে আপনি ঠিক যেমন।”
“ফুটবলার হিসেবে আমার ব্যক্তিত্ব হলো, আমি ব্রাসেলসের রাস্তায় বেড়ে উঠেছি। আমি অ্যান্ডারলেখটের একাডেমিতে ছিলাম, যেখানে ৬ থেকে ২০ বছরের মধ্যে সবকিছু জিততে হবে।”
টুখেলের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ এক বছর বাকি থাকলেও, গত ফেব্রুয়ারিতে তাকে মৌসুম শেষে বিদায়ের কথা জানিয়ে দেয় বায়ার্ন। শুরু হয় তার উত্তরসূরি খোঁজার পালা। লেভারকুজেনের কোচ শাবি আলোন্সো, জার্মানি জাতীয় দলের কোচ ইউলিয়ান নাগেলসমান ও অস্ট্রিয়া জাতীয় দলের কোচ রাল্ফ রাংনিকের দরজায় কড়া নাড়ে বায়ার্ন।
কারো থেকে ইতিবাচক সাড়া না পেয়ে পরে টুখেলকে রেখে দিতে তার সঙ্গেও আলোচনায় বসে জার্মানির সফলতম ক্লাবটি। তবে ব্যর্থ হয় সেই আলোচনা। এরপরই কোম্পানির শরণাপন্ন হয় তারা।
খেলোয়াড় হিসেবে অসাধারণ এক ক্যারিয়ার শেষে কোচিংয়েও এখন পর্যন্ত বেশ সম্ভাবনা দেখিয়েছেন কোম্পানি।
ইংলিশ ফুটবলে খেলোয়াড় কোম্পানি নিশ্চিতভাবেই কিংবদন্তিদের একজন। ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে ১১ মৌসুমে চারটি লিগ শিরোপা ছাড়াও দুটি এফএ কাপ, চারটি লিগ কাপ ও দুটি কমিউনিটি শিল্ড জেতেন তিনি। ২০১৯ সালে সেখান থেকে ফিরে যান নিজ দেশ বেলজিয়ামে। আন্ডারলেখটে এক বছর খেলে পরে দায়িত্ব নেন কোচের। সেখান থেকেই ২০২২ সালের জুনে বার্নলির দায়িত্ব নেন তিনি। দায়িত্বের প্রথম মৌসুমেই দলকে তোলেন প্রিমিয়ার লিগে।
বার্নলিতে প্রথম দফায় তার আগ্রাসী ফুটবল দারুণ কাজে লাগে, ইংলিশ ফুটবলের দ্বিতীয় স্তর চাম্পিয়নশিপে। সাত ম্যাচ হাতে রেখেই প্রিমিয়ার লিগে উঠে যায় দলটি। এরপরই দেখা যায় উল্টোটা; তার ওই আক্রমণাত্মক ও পজেশন ধরে রেখে খেলার কৌশল প্রিমিয়ার লিগে শক্তিশালী দলগুলোর বিপক্ষে অকার্যকর হয়ে পড়ে।
বায়ার্নে অবশ্য নিজের পুরনো কৌশল বাস্তবায়নের অনেক রসদই পাবেন কোম্পানি। দলকেও তাই শুরুতেই জানিয়ে দিলেন নিজের দর্শন।
“বায়ার্নে আমি খেলোয়াড়দেরকে বল পায়ে সাহসী দেখতে চাই, দেখতে চাই তারা যেন মাঠে নিজের সত্যিকারের বৈশিষ্ট তুলে ধরে। দলকে আগ্রাসী রূপে দেখতে চাই, দেখতে চাই তাদের খেলায় যেন ওই দুটি জিনিস ফুটে ওঠে।”
“মাঠে বল পায়ে আসলেই যেন তারা সত্যিকারের সাহসী হয়ে ওঠে, সিদ্ধান্ত নেয় এবং আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে্।”