ফেইসবুকে সমাবর্তনের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে গড়বড় করেছে বাংলাদেশে উচ্চ শিক্ষার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
Published : 04 Mar 2017, 11:13 AM
শনিবার ৫০তম সমাবর্তন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ফেইসবুক পাতায় যে শুভেচ্ছা বার্তা দেওয়া হয়েছিল, তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা ওঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
সমালোচনার মধ্যে তাতে কয়েকবার পরিবর্তন আনা হয়। সরানো হয় মুহাম্মদ ইউনূসের নাম, যে নামটি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামের আগে দেওয়া হয়েছিল।
ফেইসবুকে শুভেচ্ছার এই গড়বড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সমালোচনাও করেছেন অনেকে।
প্রথমে ফেইসবুকে দেওয়া শুভেচ্ছা বার্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস তুলে ধরে বলা হয়, “আমরা গর্বিত হয়েছি স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, অমর্ত্য সেনের মত বুদ্ধিজীবীদের সম্মানসূচক ডক্টরেটে ভূষিত করতে পেরে। গর্বিত হয়েছি ড. মুহাম্মদ ইউনূস, সত্যেন বসু, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো ছাত্রদের ধারণ করতে পেরে।”
এই বার্তা দেখে অনেকেই সমালোচনামুখর হন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেইসবুক পাতায়ই অনেকে লেখেন।
বঙ্গবন্ধুর নামের আগে জাতির জনক না লেখা, তার নাম পরে লেখা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। এ প্রসঙ্গে অনেকে গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মরণিকায় জিয়াউর রহমানকে ‘প্রথম রাষ্ট্রপতি’ লেখার বিষয়টিও তুলে আনেন।
একজন লেখেন- “পেজটা জামাতিরা চালায় মনে হচ্ছে!!!এখুনি খুঁজে বের করা উচিত।”
ব্যাপক সমালোচনার পর ওই শুভেচ্ছা বার্তাটি কয়েক দফা পরিবর্তন করা হয়।
এ নিয়ে একজন লিখেছেন- “তিনবার এডিট এবং ডঃ ইউনুস হাওয়া?????”
বর্তমানে শুভেচ্ছা বার্তার ওই অংশটি রয়েছে এভাবে- “আমরা গর্বিত হয়েছি স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, অমর্ত্য সেনের মত বুদ্ধিজীবীদের সম্মানসূচক ডক্টরেটে ভূষিত করতে পেরে। গর্বিত হয়েছি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শামসুর রাহমানের মত ছাত্র; সত্যেন বসুদের মত শিক্ষকদের ধারণ করতে পেরে।”
ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যে সমাবর্তনের এই অনুষ্ঠানের আগে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এমন কার্যক্রমে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারপার্সন মফিজুর বলেন, ডিইউটাইমজের প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারি এবং একটি অ্যাডমিন গ্রুপ আছে। মূলত তারাই পেইজটি চালায়।
ব্যস্ততার কারণে শুক্রবারের পোস্টটি দেখতে পারেননি দাবি করে তিনি বলেন, “অ্যাডমিন কারা এটা প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারি ঠিক করে। এ নিয়ে ওদের সঙ্গে আমরা বসব। কীভাবে কী হল, জানব।”
৫০তম সমাবর্তনের শুভেচ্ছা বার্তায় গড়বড় নিয়ে কথা বলতে ডিইউটাইমজের সভাপতি সোহাগের মোবাইলে অনেকবার কল করে ও এসএমএস পাঠিয়ে সাড়া পাওয়া যায়নি।
২০১৪ সালের নভেম্বরে এক অনুষ্ঠানে কেক কেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ফেইসবুক পাতাটি উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
পরের বছর ২০১৫ সালের ১২ সেপ্টেম্বর পাতাটি ভেরিফাইড হওয়া উপলক্ষেও কেক কাটেন আরেফিন সিদ্দিক।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক আখতারুজ্জামান শনিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল কোনো পেইজ নয়। এমন কোনো পেইজ আমাদের নেই।”