‘সুবারু’ নামের টেলিস্কোপ দিয়ে মহাকাশে এমন আরও উপাদান খুঁজে দেখার চেষ্টা করে আসছেন একদল জ্যোতির্বিদ। তবে, এখন পর্যন্ত শুধু আকাশের তিন শতাংশই খোঁজা সম্ভব হয়েছে।
Published : 13 May 2024, 05:55 PM
মিল্কিওয়েতে কি অনেক বেশি ‘স্যাটেলাইট গ্যালাক্সি’ আছে? থাকলেই বা এদের সংখ্যা কত? প্রযুক্তির সহায়তায় তারই খানিকটা ঝলক দেখার চেষ্টা করেছেন গবেষকরা।
স্যাটেলাইট গ্যালাক্সি হচ্ছে বড় গ্যালক্সির পাশাপাশি এমন ছোট আকারের গ্যালাক্সি যেগুলো বড় গ্যালাক্সির কাছাকাছি থেকে নিজেই একটি গ্যালাক্সির মতো আচরণ করে। তবে এগুলো হোস্ট বা মূল গ্যালাক্সির আওতার বাইরে যেতে পারে না।
মিল্কিওয়েতে যেসব বড় ও ছোট আকারের স্যাটেলাইট গ্যালাক্সি আছে, সেগুলো মূলত ‘ম্যাজেলানিক ক্লাউড’ নামে সুপরিচিত।
পৃথিবী থেকে ১৪ লাখ আলোকবর্ষের মধ্যে অন্তত এমন ৬১টি স্যাটেলাইট গ্যালাক্সি আছে। (উল্লেখ্য, অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সি ২৫ লাখ আলোকবর্ষ দূরে)। তবে এর বাইরেও মহাবিশ্বে এমন অনেক স্যাটেলাইট গ্যালাক্সি ছড়িয়ে থাকার সম্ভাবনা আছে।
‘সুবারু’ নামের টেলিস্কোপ দিয়ে মহাকাশে এমন আরও উপাদান খুঁজে দেখার চেষ্টা করে আসছেন একদল জ্যোতির্বিদ। তবে, এখন পর্যন্ত শুধু আকাশের তিন শতাংশেই খোঁজ করা সম্ভব হয়েছে।
সবাইকে অবাক করে তারা এমন নয়টি স্যাটেলাইট গ্যালাক্সি খুঁজে পেয়েছেন, যা এর আগে আবিষ্কৃত হয়নি। আর এটি তাদের প্রত্যাশার চেয়েও বেশি কিছু বলে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট ইউনিভার্স টুডে।
জোতির্বিদ্যার বিভিন্ন বস্তুর সঠিক অবস্থানের তথ্য সংগ্রহকারী স্যাটেলাইট ‘গাইয়া’র তথ্য অনুসারে, পৃথিবীর অবস্থান যে ছায়াপথে, অর্থাৎ মিল্কিওয়ে’কে প্রদক্ষিণ করা বেশিরভাগ স্যাটেলাইটই একেবারে নতুন!
এমনকি বড় ও ছোট আকারের বিভিন্ন ‘ম্যাজেলানিক ক্লাউড’ও এখন তরুণ বলে পরিচিতি পেয়েছে।
তবে এদের কোনোটা মিল্কিওয়ের আশপাশের বিভিন্ন কক্ষপথে পড়ে কি না, তা এখনও অজানা। এর মূল কারণ, এখনও মিল্কিওয়ের নির্ভুল মাপজোখ সম্ভব হয়নি।
সাম্প্রতিক এ অনুসন্ধানের লক্ষ্য হল, মহাবিশ্বে এমন অংশ সম্পর্কে বোঝাপড়া বাড়ানো, যেখান থেকে বিভিন্ন বামন ছায়াপথ সম্পর্কে প্রথমবারের মতো আরও বিস্তারিত তথ্য পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
সুবারু টেলিস্কোপ ব্যবহার করে এ জরিপের বিস্তারিত ফলাফল এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন গবেষণাটির মূল লেখক ডাইসুক হোম্মা ও জাপানের ‘ন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অবজারভেটরি’র গবেষণা দল।
সুবারু টেলিস্কোপের অবস্থান হাওয়াইয়ের ‘মাউনা কিয়া অবজারভেটরি’তে, যার ব্যাস আট দশমিক দুই মিটার। ২০০৫ সালের আগ পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে বড় একক ‘মিরর টেলিস্কোপ’ ছিল এটি।
তবে এখন বেশ কিছু টেলিস্কোপ সুবারু’র আলো সংগ্রহের সক্ষমতাকে ছাড়িয়ে গেছে, যেখানে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ‘মাল্টি-মিরর’ ধাঁচের টেলিস্কোপ।
এখনও অবধি মানুষের হাতে গোনা কয়েকটি স্যাটেলাইট গ্যালাক্সি সম্পর্কে ধারণা ছিল, যা ‘মিসিং স্যাটেলাইটস প্রবলেম’ নামের এক বিপরীত মডেলের পরিপন্থী। তবে জাপানভিত্তিক গবেষণা দলটি আশা করছে, তাদের কাজ এই সমস্যার বিভিন্ন খুঁটিনাটি বোঝার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে।
গবেষণা প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১৮ সালের আগে পাওয়া তথ্যে ‘ভির১’, ‘সেট৩’ ও ‘বু৪’ নামের তিনটি স্যাটেলাইট গ্যালাক্সি সম্পর্কে ধারণা মিলেছে। এ ছাড়া, ‘সেক্সট২’ ও ভির৩’ নামের আরও দুটি স্যাটেলাইট গ্যালাক্সি সম্পর্কে তথ্য পাওয়া গেছে এর পরের তিন বছরে প্রকাশিত ডেটায়।