রাজবাড়ীতে ঢালাইয়ের সময় ধসে পড়ল সেতু, স্থানীয়দের বিস্তর অভিযোগ

সরু রড ও স্বল্প সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই কাজ করা হচ্ছিল বলে প্রকৌশলীকে অভিযোগ করলেও তিনি গুরুত্ব দেননি বলে স্থানীয়দের ভাষ্য।

রাজবাড়ী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 June 2023, 11:57 AM
Updated : 6 June 2023, 11:57 AM

রাজবাড়ীর পাংশায় নির্মাণাধীন একটি সেতু ধসে পড়েছে; তবে এ সময় হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

সোমবার রাতে উপজেলার মাছপাড়া ইউনিয়নের মেঘনা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

সেতু ধসে পড়ায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ঠিকাদারের প্রতিনিধিকে ধাওয়া ও তার মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদার ও ইঞ্জিনিয়ারের গাফিলতি এবং নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে কাজ করায় নির্মাণ শেষ হওয়ার আগেই সেতুটি ধসে পড়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও তদারকিতে অবহেলার অভিযোগ আনেন তারা। সেই সঙ্গে সরকারের কাছে একটি নিরাপদ সেতু নির্মাণের দাবি জানান। 

মেঘনা গ্রামের বাসিন্দা মানা প্রামানিক বলেন, “কয়েক মাস আগে ব্রিজটির কাজ শুরু হয়। নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে কাজ করছিল ঠিকাদার। আমরা ইঞ্জিনিয়ারকে বার বার বলার পরেও কোনো প্রতিকার পাইনি। সবশেষ আমাদের আশঙ্কাই সত্যি হলো, ঢালাইয়ের সময়ই ব্রিজটি ভেঙে পড়ল।”

আরেক বাসিন্দা আবু বক্কর বলেন, “চিকন চিকন রড দিয়েছে, নামমাত্র সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই কাজ করছিল। একথা আমরা ইঞ্জিনিয়ারকে জানিয়েছিলাম। তিনি গুরুত্ব দেননি।”

এ সময় ঠিকাদার ও দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলীর মধ্যে যোগসাজসের অভিযোগও আনেন অনেকে।

স্থানীয়রা যে ঠিকাদারের প্রতিনিধিকে ধাওয়া দিয়েছিলেন তার নাম হাজী দুলাল। তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি এই ব্রিজের ঠিকাদার না। আমার ব‍্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে সাব-ঠিকাদার কামাল হোসেন বিভিন্ন উপকরণ কিনে থাকেন।”

তবে উল্টো কথা বললেন কামাল হোসেন।

তিনি বলেন, “আমি কোনো ঠিকাদার না। ব্রিজ নির্মাণের কাজ পায় সার্বিক এন্টারপ্রাইজ কনস্ট্রাকশন। হাজী দুলালই মূলত সাব ঠিকাদার।”

তবে রড, সিমেন্টে কোনো সমস্যা ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন মাছপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুল ইসলাম বুড়ো।

তিনি বলেন, “গতকাল ঢালাইয়ের কাজ চলছিল। স্টেজিং ভালো না করায় এমন ঘটনা ঘটেছে। নিচের অংশটা যেভাবে করা দরকার ছিল সেভাবে করা হয়নি, সে কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে।”

ব্রিজ নির্মাণের সার্বিক দেখভালের দায়িত্বে থাবা পাংশা এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী জাকির হাসান এ ঘটনায় তার কোনো দায় স্বীকার করেননি।

তিনি বলেন, “স্টেজিং ভালো না করায় এমন ঘটনা ঘটেছে। একটি নিছকই দুর্ঘটনা। আমরা সব সময় তদারকি করেছি, এখানে আমার বা ঠিকাদারের কোনো দায় নেই।”

৬৩ লাখ টাকা ব‍্যয়ে সেতুটি নির্মাণের কাজ ফরিদপুরের একজন ঠিকাদার পেয়েছেন বলে জানান এই কর্মকর্তা।

তিনি বলেন,“দুই মাস আগে কাজটি শুরু হয়। আমি যতটুকু জানি হাজী দুলাল ও কামাল হোসেন সাব ঠিকাদার। তার যৌথভাবে কাজটি করছে। যেহেতু একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেজন‍্য ক্ষতিগ্রস্ত জায়গায় আবার নতুন করে কাজ করবে ঠিকাদার। এর জন্য নতুন করে কোনো বরাদ্দের সুযোগ নেই। ঠিকাদারের নিজস্ব অর্থায়নেই ঠিক করতে হবে।”