সিলেটে কুমারগাঁও-এয়ারপোর্ট সড়কের ৪ লেনের কাজ শুরু শনিবার

বিকাল ৪টায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন কাজের উদ্বোধন করবেন।

সিলেট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Nov 2022, 06:06 PM
Updated : 25 Nov 2022, 06:06 PM

সিলেটে কুমারগাঁও-বাদাঘাট-এয়ারপোর্ট সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ কাজের উদ্বোধন হচ্ছে শনিবার। 

এ দিন বিকাল ৪টায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন কাজের উদ্বোধন করবেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সড়কটি চার লেনে উন্নীতকরণে ৭২৭ কোটি ৬৩ লাখ ২০ হাজার টাকা ব্যয় করা হবে; কাজ শেষ হবে ২০২৪ সালের জুনে।

এর আগে ২০১২-১৩ অর্থ বছরে প্রায় ১৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কটি দুই লেনে নির্মিত হয়।

পরে পাথরবাহী ট্রাক, বিমানবন্দর অভিমুখীদের সুবিধা ও পর্যটকবাহী যান চলাচলের জন্য সড়কটি চার লেনে উন্নীত করার দাবি ওঠে সিলেটে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়।

পরের বছর চার লেন সড়কের সঙ্গে দুটি সার্ভিস লেন যুক্ত করে সংশোধিত প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়।

সিলেট সওজ প্রস্তাবিত প্রকল্পে বলা হয়, কুমারগাঁও-বাদাঘাট-এয়ারপোর্ট সড়ক একটি গুরুত্বপূর্ণ জেলা মহাসড়ক। সড়কটি সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাতায়াতে প্রধান ও একমাত্র বিকল্প পথ। একইসঙ্গে সড়কটি সিলেট শহরের যানজট এড়ানোর জন্য বাণিজ্যিক যানবাহনের ডাইভারশন হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।

যা সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের ছয় কিলোমিটার কুমারগাঁওয়ে শুরু হয়ে বাদাঘাট দিয়ে ওসমানী বিমানবন্দর সড়কের সঙ্গে মিলিত হয়েছে।

বাদাঘাট লিংক রোডসহ সড়কটির মোট দৈর্ঘ্য ১২ দশমিক ৭৮০ কিলোমিটার ও বিদ্যমান প্রস্থ পাঁচ দশমিক ৫০ মিটার।

প্রস্তাবনায় উল্লেখ করা হয়, বর্তমানে কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ থেকে পাথর বহনকারী ট্রাকগুলোর সিলেট শহরের মধ্য দিয়ে যাতায়াত করে। এতে নগরের অন্যতম কেন্দ্রস্থল আম্বরখানা ইন্টারসেকশনে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে সময়ের অপচয় ও আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে।

সড়কটিকে চার লেনে উন্নীত করা হলে পাথরবোঝাই ট্রাকগুলো জাতীয় মহাসড়ক এন-২’তে সহজেই পৌঁছতে পারবে। এতে সিলেট নগরের মধ্যে যানজট কমবে, ট্রাকের কারণে ঘটা দুর্ঘটনাও কমে আসবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ওসমানী বিমানবন্দরে যাতায়াতে সুবিধা হবে।

তবে ২০১৯ সালে শুধু চার লেনের প্রস্তাবনা জমা পড়ে মন্ত্রণালয়ে।

২০২০ সালের ৮ অগাস্ট সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল সড়কটি পরিদর্শন করে যায়।

চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি কুমারগাঁও-বাদাঘাট-এয়ারপোর্ট সড়ক সম্প্রসারণ প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উপস্থাপিত হয়ে অনুমোদন পায়।

সিলেট নগরীর আম্বরখানার বাসিন্দা শফিক রহমান বলেন, ‘‘প্রতিদিন বিকাল থেকেই এয়ারপোর্ট রোড থেকে আম্বরখানা পয়েন্ট পর্যন্ত দীর্ঘ যানযটের সৃষ্টি হয়। এ রাস্তায় নিয়মিতই ঘটে একের পর এক ট্রাক দুর্ঘটনা ঘটে। যতদিন বাদাঘাট বাইপাস সড়কটি পুরোপুরি চালু না হবে, তত দিন নগরবাসী অনিরাপদ। তাই আমরা দ্রুত কাজ বাস্তবায়ন চাই।’’ 

সিলেট বিভাগীয় ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান মালিক ঐক্য পরিষদ ও সিলেট জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের সভাপতি গোলাম হাদী ছয়ফুল।

তার ভাষ্য, ‘‘সড়কের চার লেনের কাজটি শুরু করার জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন এমপিকে ধন্যবাদ জানাই। আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল সড়কটি দ্রুত চার লেনে উন্নতী করার।

“সড়কটি চার লেন হলে ট্রাকগুলো নগরের বাইরে দিয়ে চলাচল করবে। তাতে যানজট যেমন কমবে, একইসঙ্গে নগরবাসীও নিরাপদ থাকবেন,”  বলেন গোলাম হাদী ছয়ফুল।

সড়কটির চার লেনের কাজ আরসিসি ঢালাই দিয়ে করা হবে বলে সড়ক ও জনপথ বিভাগ সিলেট জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান।