নোয়াখালীতে প্রবাসীকে ‘তুলে নিয়ে নির্যাতন’, ২ পুলিশ প্রত্যাহার

ডিবির এসআই শরীফুল ইসলাম ও কনস্টেবল মুরাদ হোসেনকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

নোয়াখালী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 March 2023, 04:45 PM
Updated : 14 March 2023, 04:45 PM

প্রবাসীকে ‘চোখ বেঁধে বাসা থেকে তুলে নিয়ে’ নির্যাতন ও টাকা দাবির অভিযোগে নোয়াখালীর ডিবি পুলিশের দুই সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

সোমবার বিকালে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় তাদের বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপ নিয়েছে বলে পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম জানান।  

তারা হলেন এসআই শরীফুল ইসলাম ও কনস্টেবল মুরাদ হোসেন। তাদের কর্মস্থল থেকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

এসপি মো. শহীদুল ইসলাম জানান, অভিযোগের মুখে থাকা ডিবির দুই সদস্যের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তদন্ত করে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) বিজয়া সেনকে।

নির্যাতনের শিকার প্রবাসী মহিন উদ্দিন বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার বাসিন্দা।

তার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, গত ১১ ফেব্রুয়ারি তিনি দুবাই থেকে বাংলাদেশে আসেন। দেশে আসার পথে এক প্রবাসী কিছু সোনা, একটি মোবাইল ফোন ও একটি ল্যাপটপ তাকে ঢাকায় এক ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দিতে অনুরোধ করেন। ঢাকায় যে ব্যক্তিকে ওই জিনিসগুলো পৌঁছে দেওয়ার কথা তার কাছে প্রবাসী মহিনের ছবি তুলে পাঠানো হয়।

“সে অনুযায়ী বিমানবন্দরে পৌঁছার পর দুই ব্যক্তি ওই ছবি দেখিয়ে জিনিসগুলো নিয়ে যান। তখন তারা প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তাকে ১০ হাজার টাকা দেন।”

এসপি বলেন, এর কিছুদিন পর দুবাইয়ে থাকা ওই প্রবাসী তার মালামাল তার লোক বুঝে পাননি বলে মৌখিক অভিযোগ করেন। কিন্তু তিনি ওই প্রবাসীকে তার মালামালগুলো সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে পৌঁছে দিয়েছেন বলে জানান।

মহিন উদ্দিনের অভিযোগ, এ ঘটনার পর ৩ মার্চ রাতে নোয়াখালী জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) এসআই শরীফুল ইসলাম তাকে (মহিন) কোনো লিখিত অভিযোগ বা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়াই গামছা দিয়ে তার চোখ বেঁধে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যান। পরে ডিবি কার্যালয়ে আটক রেখে তাকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়।

মহিন আরও অভিযোগ করেন, পরদিন ডিবি কার্যালয়ে কথিত একটি সালিশ বসিয়ে ২০ মার্চের মধ্যে ডিবি পুলিশকে ছয় লাখ টাকা দিতে হবে বলে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। অন্যথায় তাকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখানো হয়।

এ সময় তার কাছ থেকে একাধিক সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেওয়ার পাশাপাশি ডিবি কোনো সালিশ করেনি, উল্লিখিত ঘটনায় ডিবির কোনো সম্পৃক্ততা নেই লিখিয়ে স্বাক্ষর নেওয়া হয় বলেও মহিন অভিযোগ করেন।

মহিন বলেন, এ পরিস্থিতিতে তিনি পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে নগদ ২০ হাজার টাকা দিয়ে ডিবির কাছ থেকে ছাড়া পান। পরে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হন।