এই মেডিকেল কলেজ এখনও বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন পায়নি।
Published : 18 Jan 2023, 10:38 PM
বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন না থাকাসহ নানা কারণে ঢাকার আশুলিয়ায় একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা মাইগ্রেশনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেছেন।
বুধবার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের নরসিংহপুরের সরকার মার্কেট এলাকায় এ কর্মসূচি পালন করেন পাশের ‘নাইটিংগেল মেডিকেল কলেজ’র শিক্ষার্থীরা।
ওই সময় পুলিশ তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দিতে চাইলে ধস্তাধস্তি হয়। তখন মহাসড়কের উভয় পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তি পোহান চলাচলরত বিভিন্ন পরিবহনের যাত্রীরা।
এ ঘটনায় পুলিশসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই তারা মাইগ্রেশনের দাবি জানিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি। এর আগেও ক্যাম্পাসে অবস্থান ও মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করলে প্রশাসনের আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করেন তারা। কিন্তু এরপর নাইটিংগেল মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ মাইগ্রেশনের কোনো ব্যবস্থা করেনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল আনুমানিক ১০টার দিকে শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। পরে পুলিশ লাঠিপেটা চার শিক্ষার্থী আহত হন।
কলেজটির শিক্ষার্থী ইমরান খান ইমনসহ কয়েকজন জানান, মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ মিথ্যা আশ্বাস ও আদালতের কিছু কাগজপত্র দেখিয়ে তাদের ভর্তি করায়। প্রথম বর্ষে বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন এনে দেবে বলে তারা প্রতিশ্রুতি দেয়; কিন্তু এখনও রেজিস্ট্রেশন এনে দিতে পারেনি।
“কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থা সংক্রান্ত সব সুযোগ-সুবিধা থেকেও বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে। মাইগ্রেশন না দিলে আমাদের ৪৫ জন শিক্ষার্থীর জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।”
শিক্ষার্থী ইয়াহিয়া শুভ বলেন, “এই মেডিকেলে আমরা ১৫ লাখ টাকা খরচ করে ভর্তি হয়েছি। কিন্তু এখন আমরা পরিবারের কাছে মুখ দেখাতে পারছি না। এই মেডিকেলে কোনো রোগীই নেই। তারা ঠিকমতো শিক্ষার ব্যবস্থা না করেই শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিয়েছে।”
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই মেডিকেল কলেজের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ প্রথম নয়। এর আগেও বিএমডিসির অনুমোদন না থাকা ও নানা অনিয়মের অভিযোগে ২০১৬ সালে প্রায় ৩৬৫ জন শিক্ষার্থী মাইগ্রেশন নিয়ে অন্য মেডিকেল কলেজে চলে যান। তখন এই মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তবে আদালতের মাধ্যমে এই নিষেধাজ্ঞার ওপর স্থগিতাদেশ নেয় মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আবার শিক্ষার্থী ভর্তি শুরু করে কলেজটি। ২০১৮ সালে ৪৫ জন শিক্ষার্থী এই মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন।
নাইটিংগেল মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ রুহুল কবির রুমি বলেন, “আমরা শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের দাবি নিয়ে আমরা কাজ করছি। শিঘ্রই বিষয়টি সমাধান হবে।”
আশুলিয়া থানার এসআই জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শিক্ষার্থীরা প্রায় দুই ঘণ্টার মতো মহাসড়কে অবস্থান নেন। মহাসড়কের উভয় পাশে অসংখ্য যানবাহন আটকা পড়ে। তাদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দিতে গেলে তারা ধস্তাধস্তি শুরু করে। এতে এক নারী পুলিশ সদস্য আহত হন।