আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য মতে, তাপমাত্রার পারদ ৬ থেকে ৮ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করলে সেটিকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ ধরা হয়।
Published : 28 Jan 2024, 02:30 PM
সারাদেশে তীব্র শীতের মধ্যে উত্তরের কয়েকটি জেলায় তাপমাত্রার পারদ ক্রমেই নিচে নামছে। এতে জেলাগুলোতে চলছে তীব্র ও মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ।
এর মধ্যে রোববার সকালে দিনাজপুরের তাপমাত্রা নেমেছে পাঁচ ৫ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, আর কুড়িগ্রামে নেমেছে ৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
দেশের বড় এলাকাজুড়ে তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে সেটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে বিবেচনা করে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তাপমাত্রা ৬ থেকে ৮ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করলে মাঝারি এবং ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে সেটিকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ ধরা হয়।
দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ আসাদুজ্জামান জানান, এক দিনের ব্যবধানে ৩ ডিগ্রি কমে রোববার সকাল ৯টায় তাপমাত্রা ৫ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
এদিকে মাঘের হাড় কাঁপানো কনকনে শীত ও ঘন কুয়াশায় পুরো জেলার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তবে এক সপ্তাহজুড়ে দুপুরের পর সূর্যের দেখা মেলায় সে সময়ে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও তাপমাত্রার পারদ নিচে নামায় তীব্র শীতের দাপট বেড়েছে।
একটানা অসহনীয় শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এই অঞ্চলের মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। কাজের সন্ধানে বের হয়েও তীব্র শীতে কাজ না পেয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন তারা।
কুড়িগ্রাম: রোববার সকাল ৯টায় জেলার তাপমাত্রা ৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার।
তিনি বলেন, এ রকম তাপমাত্রা আরও দুই চারদিন অব্যাহত থাকতে পারে।
এদিকে উত্তরের হিমেল হাওয়ায় কাবু হয়ে পড়েছে কুড়িগ্রামের জনপদ। আবহাওয়া এমন পরিস্থিতিতে সকল পেশাজীবী ও শ্রমজীবী মানুষ পড়েছে চরম ভোগান্তিতে।
গত ১১দিন থেকে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে থাকায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে জেলায়।
কুড়িগ্রামের হাসপাতাল পাড়া এলাকার বাসিন্দা আব্দুল আজিজ (৬৫) বলেন, “এক যুগে কুড়িগ্রামে এমন পরিস্থিতি দেখি নাই। শীতের সঙ্গে কুয়াশা আর ঠান্ডা-হিম বাতাস বইছে । আমাদের মত বয়স্ক মানুষরা খুব সমস্যায় পড়েছে।”
ধরলার পাড়ের মোস্তাক মিয়া বলেন, “ঠান্ডায় কাজ করা খুব কষ্ট হইছে। হাত-পা বরফ হয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় পানি, ইট, বালু, সিমেন্টের কাজ করি। কি করবো কাজ না করলে তো আর সংসার চলবে না “
পঞ্চগড়: তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানিয়েছেন, রোববার গত পাঁচ বছরের মধ্যে জেলার তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সোমবার থেকে প্রতিদিনই রাতের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়বে। এতে করে শীতের তীব্রতা কমে আসবে। আর ধীরে ধীরে বিদায় নেমে শীত।
সকালে প্রচণ্ড শীত অনুভূত হলেও সূর্যের দেখা মেলায় ধীরে ধীরে তাপমাত্রা বেড়ে যায় বলে জানান তিনি।
জেলা প্রশাসক জহিরল ইসলাম জানান, জেলায় এ পর্যন্ত প্রায় আড়াইহাজার শীতবস্ত্র বরাদ্দ এসেছে। আরও শীতবস্ত্রের চাহিদা জানানো হয়েছে।