ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, আঁখির পরিবার ঘটনার আগে থানায় জিডি করতে এসেছিলেন।
Published : 04 Mar 2024, 05:33 PM
ফেনী শহরের একটি বাসা থেকে এক তরুণীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে; পরিবারের ভাষ্য, তাকে হত্যা করা হয়েছে।
রোববার রাতে শহরের মেডিল্যাব হাসপাতাল সংলগ্ন ‘অ্যাডভোকেট অলি উল্ল্যাহ ভবনের’ দ্বিতীয় তলায় লাশটি পাওয়া যায় বলে জানিয়েছেন ফেনী মডেল থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম চৌধুরী।
নিহত ফাতেমা আক্তার আঁখি (১৮) শহরের নাজির রোড এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে।
নিহতের পরিবার জানায়, সালাউদ্দিন নামে এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ায় আঁখি। দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্কের পর সালাউদ্দিন হঠাৎ পোল্যান্ড চলে যান। সম্প্রতি সালাউদ্দিনকে বিয়ের জন্য আঁখি জোর করলে তিনি রাজি হচ্ছিলেন না।
সালাউদ্দিনের বোনের শ্বশুর আবুল কাশেম বলেন, “আমরা ওই ভবনের দ্বিতীয় তলায় ভাড়া থাকি। রোববার বাসা থেকে মোবাইল ফোন করে জানানো হয়, অপরিচিত এক মেয়ে ঘরের ভেতর একটি রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিয়েছে।
“দরজা ধাক্কাধাক্কি করার পরও সে দরজা খুলছে না। পরে বাসায় গিয়ে দরজার ফাঁক দিয়ে তাকিয়ে দেখি মেয়েটি ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছে।”
আবুল কাশেমের স্ত্রী আলেয়া বেগম বলেন, “ঘরে আমি ও আমার দুই ছেলের বউ ছিলাম। আমাদের রান্নাঘরে রংয়ের কাজ চলছিল। এমন সময় হঠাৎ এই মেয়ে দৌড়ে বাসার ভেতর ঢুকে পড়ে। এরপর কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার বড় ছেলের স্ত্রীর রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। পরে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে তার মরদেহ উদ্ধার করে।”
সালাউদ্দিনের বোন সাফিয়া আক্তার নাদিয়া বলেন, “আমার ভাইয়ের সঙ্গে ওই মেয়ের সম্পর্ক ছিল সেটা আজকেই জেনেছি। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করার পর তার পরিবারের লোকজন এখানে এলে তাদের কাছ থেকেই এমন কথা শুনেছি।
“এর আগে কখনও তার সঙ্গে আমাদের দেখা বা কথা হয়নি। এবার দেশে এলে ভাইকে বিয়ে করাব, এমন তথ্য জেনেই সম্ভবত মেয়েটি এই কাজ করেছে।”
নিহতের মা জুলেখা বলেন, “২০১৮ সালে সালাউদ্দিনের সঙ্গে আঁখির প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে সালাউদ্দিনের মায়ের মৃত্যুর পর তার কথামত আঁখি তাদের বাড়িতে গিয়েছিল।
“তবে সালাউদ্দিনের ভাই বাপ্পি ও বোন নাদিয়া সবসময় আঁখির বিষয়ে হস্তক্ষেপ করত। তারা এ সম্পর্ক কখনও মেনে নিতে পারেনি। তারাই কৌশলে ডেকে নিয়ে আঁখিকে হত্যা করেছে।”
ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) থোয়াই অং প্রু মারমা বলেন, “নিহত আঁখির পরিবার ঘটনার আগে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে এসেছিলেন। এ ঘটনা শুনে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে ওই বাসায় গিয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা লাশ উদ্ধার করে। ঘটনার রহস্য উদঘাটনে কাজ চলছে।”
ওসি শহিদুল বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ সদর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা চলমান রয়েছে।