পাঁচ বছরে খুলনা-৪ আসনের এ প্রার্থীর মোট সম্পদ বেড়েছে প্রায় ৪৩ কোটি, স্ত্রীর ৬ কোটি আর নির্ভরশীলদের বেড়েছে ১১ কোটির বেশি।
Published : 12 Dec 2023, 06:09 PM
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মুর্শেদীর গত পাঁচ বছরে আয় ও সম্পদ বেড়ে শত কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
পাশাপাশি প্রার্থীর ওপর নির্ভরশীলদের সম্পদও বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। পাঁচ বছরের যেখানে মুর্শেদীর সম্পদ একশ ৩৭ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এ ছাড়া তার স্ত্রীর ১৮ কোটি ৩৫ লাখ টাকা এবং নির্ভরশীলের ২৪ কোটি ৯১ লাখ টাকার সম্পদ রয়েছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া হলফনামা পর্যালোচনা করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সালাম মুর্শেদী বলেন, “আমার সম্পদ ও আয়ের বেশির ভাগই আসে ব্যবসা থেকে। দীর্ঘদিন ধরে উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করছি। ব্যবসার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের কর্মসংস্থানও বেড়েছে।”
স্বচ্ছতার সঙ্গে সরকারকে রাজস্ব দেওয়ার কথাও জানান সাবেক এ ফুটবলার।
দশম সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া হলফনামা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে হলফনামায় দেওয়া হিসাব বিবরণীতে স্থাবর ও অস্থাবর মিলে এ সালাম মুর্শেদীর মোট সম্পদ ছিল ৯৫ কোটি ১১ লাখ ৮৬ হাজার ২৯০ টাকা।
গত পাঁচ বছরে তার মোট সম্পদ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩৭ কোটি ৯১ লাখ ৮৫ হাজার ৯০৪ টাকা। ব্যবধান ৪২ কোটি ৭৯ লাখ ৯৯ হাজার টাকার বেশি।
হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০১৮ সালে মুর্শেদীর বার্ষিক আয় ছিল ছয় কোটি ৩৭ লাখ ২২ হাজার ৪৫৫ টাকা। আর পাঁচ বছরের ব্যবধানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে আট কোটি দুই লাখ ৮২ হাজার ৪৬৭ টাকা।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ মিলে এ প্রার্থীর স্ত্রীর সম্পদের পরিমাণ ছিল ১২ কোটি ৩১ লাখ টাকা; যা পাঁচ বছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ কোটি ৩৫ লাখ ৯৪ হাজার টাকা।
২০১৮ সালে মুর্শেদীর মোট দায় ছিল ছয় কোটি ৭৪ লাখ ২০ হাজার টাকা; যা পাঁচ বছরের ব্যবধানে বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাত কোটি ৫৪ লাখ ৬৪ হাজার ৬২১ টাকা। অর্থাৎ পাঁচ বছরে ঋণ বেড়েছে ৮০ লাখ ৪৪ হাজার ৬২১ টাকা।
সংসদ সদস্য থাকাকালীন মুর্শেদীর ওপর নির্ভরশীলদের সম্পদও বেড়েছে। ২০১৮ সালে তার ওপর নির্ভরশীলদের সম্পদ ছিল ১৩ কোটি তিন লাখ ৫১ হাজার টাকা; পাঁচ বছরের ব্যবধানে যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪ কোটি ৯১ লাখ ৪৯ হাজার টাকা।
হলফনামায় মুর্শেদী নিজেকে পাবলিক ও প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং পোশাক শিল্প, বস্ত্র শিল্প, ব্যাংক, হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
পাঁচ বছর আগে তার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ ছিল মোট ৯৫ কোটি ১১ লাখ ৮৬ হাজার ২৯০ টাকা। আর স্ত্রীর স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ ছিল মোট ১২ কোটি ৩১ লাখ তিন হাজার ৯২৬ টাকা এবং নির্ভরশীল (মেয়ে) সম্পদ ছিল ১৩ কোটি তিন লাখ ৫১ হাজার ৮৭০ টাকা।
বর্তমানে সালাম মুর্শেদীর অস্থাবর সম্পদ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৬ কোটি ৩৬ লাখ ৬৩ হাজার ৪০০ টাকা। আর স্থাবর সম্পদ যথারীতি ১১ কোটি ৫৫ লাখ ২২ হাজার ৫০৪ টাকাই রয়ে গেছে।
অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ ২৯ লাখ ৫৩ হাজার ৮৫০ টাকা, ব্যাংকে জমা চার কোটি ৮০ লাখ তিন হাজার ২৬৫ টাকা। এ ছাড়া বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার রয়েছে ৯৪ কোটি ৪২ লাখ ৫৭ হাজার ২৮৫ টাকার।
গাড়ি, গৃহ সম্পত্তি ছাড়াও স্বর্ণালঙ্কার ২১ লাখ ৩৯ হাজার ৫০০ টাকা; আসবাবপত্র পাঁচ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং অন্যান্য অস্থাবর সম্পদ দেখিয়েছেন ২৫ কোটি ৮৬ লাখ নয় হাজার ৫০০ টাকা।
স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে ১১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা মূল্যের ভবন। আর ব্যাংকে ঋণ রয়েছে সাত কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
পাঁচ বছরে মুর্শেদীর স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ কোটি এক লাখ ৯৪ হাজার ৭৭৭ টাকা। এর মধ্যে নগদ এক কোটি ৮৬ লাখ ৯৯ হাজার ৯৭১ টাকা, ব্যাংকে আমানত ১৭ লাখ ৭৪ হাজার ৭৩০ টাকা; বণ্ড, শেয়ার ও ঋণপত্র রয়েছে আট কোটি ৫৯ লাখ তিন হাজার ৭০৯ টাকা এবং অন্যান্য সম্পদ রয়েছে সাত কোটি ৩৩ লাখ আট হাজার ৩৬৭ টাকা।
এ ছাড়া মুর্শেদীর স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে ৩৪ লাখের আবাসিক ভবন।