সুবর্ণচরে ‘ধর্ষণ’: আওয়ামী লীগ নেতা রিমান্ডে, গ্রেপ্তার আরও এক

বিচারক তানিয়া ইসলাম তার চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

নোয়াখালী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Feb 2024, 11:44 AM
Updated : 8 Feb 2024, 11:44 AM

নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে এক নারী ও তার মেয়েকে ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি আওয়ামী লীগ নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।

জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান জানান, বৃহস্পতিবার এ মামলার প্রধান আসামি উপজেলার চরওয়াপদা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য আবুল খায়ের ওরফে মুন্সী মেম্বারকে (৬৭) নোয়খালীর মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে হাজির করা হয়।

শুনানি শেষে বিচারক তানিয়া ইসলাম তার চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে বুধবার তাকে একই আদালতে তুলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। তখন বৃহস্পতিবার আদেশ দেওয়ার দিন ঠিক করে দিয়েছিলেন বিচারক।

সুবর্ণচরের চরওয়াপদা ইউনিয়নের চর কাজী মোখলেছ গ্রামের ঘরে ঢুকে সোমবার গভীর রাতে এক নারী তার ও ১২ বছর বয়সী মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী মামলা দায়ের করেন।

মামলার বাকি দুই আসামি হলেন- একই গ্রামের নুরুল আমিনের ছেলে মো. মেহেরাজ (৪৮) ও বশির আহম্মদের ছেলে মো. হারুন (৪২)।

মামলার পর মঙ্গলবার দুপুরে জেলা শহর থেকে আওয়ামী লীগ নেতা আবুল খায়েরকে এবং রাতে চর ক্লার্ক ইউনিয়ন থেকে মেহেরাজকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

আর হারুনকে বৃহস্পতিবার ভোরে নোয়াখালী জেলা পুলিশের একটি দল ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। এ নিয়ে এ মামলার সব আসামি গ্রেপ্তার হলো বলে এসপি আসাদুজ্জামান জানান।

তিনি বলেন, মামলার এজাহারভুক্ত ২ নম্বর আসামি হারুন ঘটনার পর থেকে বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। তিনি যশোর সীমান্ত দিয়ে একবার ভারতে পালিয়ে যাওয়ারও চেষ্টা করেন। পরে প্রযুক্তির সহায়তায় তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

“হারুনকেও একই আদালতে তোলা হয়েছে। তিনি নিজের অপরাধ স্বীকার করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে রাজি হয়েছেন। তিনি মত না পাল্টলে সন্ধ্যা নাগাদ বিচারক তার জবানবন্দি রেকর্ড করবেন।”

আসামিদের মধ্যে মামলার এজাহারে মেহেরাজের নাম না থাকলেও গ্রেপ্তারের পর তাকে আসামি দেখানো হয়। তিনি বুধবার নোয়খালীর মুখ্য বিচারিক হাকিম তানিয়া ইসলামের আদালতে দোষ স্বীকার করে ‘স্বীকারোক্তিমূলক’ জবানবন্দিও দিয়েছেন।

মেহরাজ জানিয়েছেন, এ মামলার অপর দুই আসামি আবুল খায়ের ও হারুনের প্রস্তাবে রাজি হয়ে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন রাতে সে ভুক্তভোগী ওই নারীর স্বামীর অনুপস্থিতে চুরি করার উদ্দেশ্যে তার বসতঘরে সিঁদ কেটে প্রবেশ করে। এরপর তিনি ঘরের দরজা খুলে দিলে আবুল খায়ের ও হারুন ভেতরে প্রবেশ করে।

এক পর্যায়ে দুজন মিলে পালাক্রমে ওই নারীকে ধর্ষণ করে। এ সময় মেহরাজ পাশের ঘরে থাকা ওই নারীর ১২ বছরের মেয়েকে ধর্ষণ করে।

ধর্ষণ শেষে ফিরে যাওয়ার সময় কানে থাকা স্বর্ণের দুল, দুটি নাকফুল ও ঘরে থাকা ১৭ হাজার ২২৫ টাকা লুট করে নিয়ে যান তারা।

মামলার তদন্তে নেমে পুলিশ জানায়, কয়েক মাস আগে হাতিয়া থেকে এসে চরকাজী মোখলেছ গ্রামে নতুন বাড়ি করেন ওই নারীর স্বামী। বাড়িতে তিনি স্ত্রী ও তিন মেয়েসহ বসবাস করতেন।

স্থানীয়রা জানায়, দিনমজুরির কাজ করা ওই ব্যক্তি মাঝে মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে গেলে ২-৩ দিন বাড়ির বাইরে থাকতেন। ঘটনার সময়ও কাজের সন্ধানে তিনি বাড়ির বাইরে ছিলেন।

আরও পড়ুন:

Also Read: সুবর্ণচরে মা-মেয়েকে ধর্ষণ: আওয়ামী লীগ নেতাকে রিমান্ডে চায় পুলিশ

Also Read: ধর্ষণ করতেই ‘চুরির ঘটনা সাজান’ আওয়ামী লীগ নেতা: পুলিশ

Also Read: ঘরে ঢুকে মা-মেয়েকে ‘ধর্ষণ’, আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার