উভয় পক্ষই দাবি করছেন, সিরাজ তাদের প্রার্থীর অনুসারী ছিলেন।
Published : 29 Dec 2023, 05:00 PM
বরিশালে প্রধানমন্ত্রীর জনসভার মাঠে শাম্মী আহমেদ ও পঙ্কজ নাথের অনুসারীদের মারামারির মধ্যে একজন মারা গেছেন।
শুক্রবার দুপুরে নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে জনসভার মাঠে দুপক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সিরাজ সিকদার (৫৮) বরিশালের হিজলা উপজেলার কুড়ালিয়া গ্রামের কোব্বাত সিকদারের ছেলে।
দ্বৈত নাগরিকত্বের কারণে বরিশাল-৪ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পাওয়া শাম্মী আহমেদের প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যায়। অপরদিকে, দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন সংসদ সদস্য পঙ্কজ নাথ।
পঙ্কজ ও শাম্মী অনুসারীরা নিহত সিরাজকে নিজেদের কর্মী বলে দাবি করছেন।
মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ভুট্টো মোল্লা বলেন, “মিছিল নিয়ে জনসভাস্থলে ঢুকতে ছিলাম। আগে থেকে অবস্থান নেওয়া শাম্মী অনুসারীরা বোতল নিক্ষেপ শুরু করে। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। তখন তারা লাঠি দিয়ে পিটিয়ে সিরাজসহ ১৫ জনকে আহত করেন। এর মধ্যে সিরাজ মারা যান।”
শাম্মীর অনুসারী হিজলা উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, “আমরা আগে থেকে জনসভাস্থলে ছিলাম। পঙ্কজ নাথের অনুসারীরা প্রবেশ করে মারামারি শুরু করেন। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়।
“তখন মারামারির মধ্যে পড়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন সিরাজ। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।”
সিরাজকে শাম্মীর অনুসারী বলে দাবি করেন মঞ্জুর মোর্শেদ।
বরিশাল-৪ আসনে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী পঙ্কজ নাথ বলেন, “আমার লোকজন যখন জনসভা মাঠে প্রবেশ করেন, তখন হামলা হয়। জনসভা মাঠে তারা লাঠি ও রড কোথায় পেল?”
পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে দাবি করেন পঙ্কজ নাথ।
অপরদিকে শাম্মী আহমেদ বলেন, “সিরাজ কৃষক লীগের ওয়ার্ড সভাপতি ছিলেন। আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের কোনো লোক তার (পঙ্কজ) সঙ্গে নেই। আওয়ামী লীগের সবাই ঐক্যবদ্ধ। তাদের ওপর হামলা করেছে। এতে সিরাজ মারা গেছেন।
হাসপাতালে যাচ্ছেন বলে জানান শাম্মী।
বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক কবির উদ্দিন বলেন, “একজনকে নিয়ে এসেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে।
“তবুও সন্দেহের কারণে আমরা লাশ মর্গে পাঠিয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।”
ডা. কবির আরও জানান, দুপক্ষের সংঘর্ষে আহত হয়ে হাসপাতালে ১৩ জন ভর্তি হয়েছেন। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আরিচুল হক বলেন, “সিরাজকে যিনি হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন তিনি জানিয়েছেন, জনসভার মাঠে অসুস্থ হয়ে পড়েন সিরাজ। তখন তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেছেন।”
ওসি বলেন, “বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”