‘স্বাধীনতায় আঘাতকারীদের’ বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সরকারের দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ।
শুক্রবার সকালে কুষ্টিয়ায় এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পর যদি কারও মনে আঘাত লাগে, তবে তারাও এই ষড়যন্ত্রের অংশীদার।
“স্বাধীনতা দিবসকে কটাক্ষ করে কোনো উক্তি কারও উদ্ধৃতি দিয়ে ছাপানো হয়- যা সে বলেই নাই। টাকা দিয়ে বলানোর চেষ্টা করা হয়েছে, এটি একটি চরম অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড এবং রাষ্ট্র ও সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। যারা এই কাজের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়াটাই যৌক্তিক।”
গত ২৬ মার্চ প্রথম আলোয় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে একজন শ্রমজীবী মানুষকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, “পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়া কী করুম। বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগব।”
জাকির নামে ওই শ্রমজীবীর মন্তব্য ধরে শিরোনাম করা হলেও প্রতিবেদনে ছবি দেওয়া হয় আরেকটি শিশুর, যার কথাও প্রতিবেদনের ভেতরে ছিল। ওই ছবি ও শিরোনাম দিয়ে সোশাল মিডিয়ায় একটি ‘কার্ড’ পোস্ট করা হয়, যা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।
এরই জেরে তিন দিন পর বুধবার সেই প্রতিবেদনের প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসকে পুলিশ সাভারের বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায়। প্রায় ৩০ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার সকালে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এর মধ্যে তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
হানিফ বলেন, “এ সরকারের সময় সবচেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে সাংবাদিকদের। ঘটানো হয়েছে সংবাদমাধ্যমের ব্যাপক বিস্তৃতি।
“সাংবাদিকরা নিয়মিত যেভাবে খুশি লিখছে, সরকারের সমালোচনা করছে- তাতে কারোর কোনো সমস্যা হচ্ছে না। কিন্তু আমাদের যেখানে মূল জায়গা সেই স্বাধীনতার ওপর যদি আঘাত আসে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সরকারের দায়িত্ব, জনগণও সেটাই প্রত্যাশা করে।”
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আরও বলেন, “বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এটি নতুন নয়। এক-এগারোর সময় শেখ হাসিনাকে মাইনাস করারও ষড়যন্ত্র হয়েছিল।
“পদ্মা সেতু নিয়েও অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছিল। সেসব সংবাদ তখন পত্রিকায় ফলাও করে ছাপানো হয়েছে। ২৬ মার্চের এই ঘটনাও আগের মতই রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আরেকটি ষড়যন্ত্র।”
এদিন সকালে সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপহার প্রযুক্তি সরঞ্জাম হিসেবে ট্যাব বিতরণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন হানিফ। সেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রুস্তম আলী, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।