পানি বাড়ায় ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও ধরলায় ভাঙনে ২০টি পরিবার গৃহহীন হয়েছে; হুমকিতে আরও ১০ পরিবার।
Published : 20 Jun 2023, 08:46 PM
কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমারসহ ১৬টি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে; দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত সবগুলো পয়েন্টে বিপৎসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও নদ-নদী অববাহিকার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে; এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত ১০ হাজার মানুষ।
বাসিন্দারা বলছেন, আমন বীজতলা, পাট, পটল, ঢেঁড়সসহ বিভিন্ন সবজি ক্ষেত তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া চরের সড়কে পানি ওঠায় কাঁচা সড়কগুলো ভেঙে যাতায়াত ও পণ্য পরিবহনে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সেই সঙ্গে দেখা দিয়েছে পশু খাদ্যের সংকট।
মঙ্গলবার দুপুরে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা, ধরলা, ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমার নদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। দুপুরে সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি বিপৎসীমার ৭০ সেন্টিমিটার, কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি ৭৪ সেন্টিমিটার ও পাটেশ্বরী পয়েন্টে ধরলার পানি বিপৎসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হয়।
রাজারহাট উপজেলার জয়কুমর গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, পানি বাড়ায় জমি তলিয়ে গেছে। ঘাস পাওয়া যাচ্ছে না। পাতা কেটে গরু-ছাগলকে খাওয়াতে হচ্ছে। কাজ-কর্মও নেই। খাবারের কষ্ট হচ্ছে।
একই গ্রামের হুজুর আলী বলেন, “গ্রামের রাস্তায় পানি ওঠায় হাট-বাজারে যাতায়াত কঠিন হয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থী স্কুলে যেতে পারছে না। কেউ কেউ ছোট নৌকা ব্যবহার করে যাতায়াত করছে।”
এদিকে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নদ-নদীতে দেখা দিয়েছে ভাঙন। গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও ধরলার ভাঙনে ২০টি পরিবার গৃহহীন হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ইয়াকুব আলী বলেন, মঙ্গলবার রাজারহাট উপজেলার কিং ছিনাই গ্রামের বাসিন্দা তৌহিদুল ও মোজা মিয়ার বাড়ি ধরলার ভাঙনে বিলীন হয়েছে। ভাঙন হুমকিতে রয়েছে আরও ১০টি পরিবার।
রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তুহিন মিয়া বলেন, আগামী পাঁচ দিন বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। এর মধ্যে আগামী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর বিভাগে মাঝারি অথবা ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক সাইদুল আরীফ বলেন, বন্যা মেকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ৫৪১ টন চাল, ১০ লাখ ২১ হাজার টাকা ও শুকনো খাবার মজুদ রয়েছে। যেখানে প্রয়োজন হবে তাৎক্ষণিকভাবে বিতরণ করা হবে।