সংকটের কথা স্বীকার করেছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।
Published : 15 Feb 2023, 07:51 PM
কুড়িগ্রাম জেলায় সাড়ে তিন শতাধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। ফলে ব্যাহত হচ্ছে বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা কার্যক্রম।
জেলা স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলছেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর প্রধান শিক্ষক সংকটের কারণের ওইসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা ব্যবস্থাহুমকিতে পড়েছে।
সংকটের কথা স্বীকার করে সমস্যার দ্রুত সমাধানের কথা জানিয়েছেন কুড়িগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, “বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে জানা যায়, কুড়িগ্রামের নয়টি উপজেলায় মোট এক হাজার ২৪০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। এসব বিদ্যালয়ের মধ্যে ৩৬৬টিতে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য আছে। এর মধ্যে ২৩৪টি বিদ্যালয়ে একজন করে সহকারী শিক্ষককে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে বসানো হয়েছে।
সহকারী শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থাকলেও তাদের আলাদা কোনো সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে সরকারি কোনো নির্দেশনা নেই বলে জানা গেছে।
কুড়িগ্রাম সদরেরকরিমের খামার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককের চলতি দায়িত্বে আছেন নুরজাহান বেগম।
আলাদা কোনো সুযোগ-সুবিধা না পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “আমরা হতাশা নিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা করে আসছি। দ্রুত সরকারি গেজেট প্রকাশ করে আমাদের সম্মান রক্ষা করা হোক।”
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মুক্তারাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গত ২ বছর আগে মারা গেলেও পদটি শূন্য আছে বলে জানা গেছে।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি একজন জ্যেষ্ঠ শিক্ষককে দায়িত্ব দিয়েছে।
যদিও নয়জন শিক্ষকের জায়গায় ওই বিদ্যালয়ে এখন পাঁচজন শিক্ষক দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানান সহকারী শিক্ষক নাজনীন রেবেকা সুলতানা।
তার ভাষ্য, “সহকারী শিক্ষক সংকট কারণে বিঘ্নিত হয়ে পড়েছে বিদ্যালয়টির পাঠদান কার্যক্রম।”
কোমলমতি শিশুদের পড়াশোনা নিশ্চিত করতে শিক্ষক পদায়নসহ প্রধান শিক্ষক পদটির সমাধানের দাবি জানান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনোয়ারা খাতুন।
বিদ্যালয়টির পরিচালনা কমিটির সভাপতি আনোয়ারুল ইসলামক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রধান শিক্ষকসহ সহকারী শিক্ষকের পদ পূরণের বারবার আবেদন করেও কোনো কাজ হয়নি।”
জেলা স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সালাউদ্দিন রুবেলের অভিযোগ, জেলা সদরের চেয়ে আরও নাজুক পরিস্থিতিতে আছে চরাঞ্চল সহ দুর্গম এলাকার বিদ্যালয়গুলোতে।
কুড়িগ্রাম জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি সামিউল হক নান্টু।
তিনি জানান, জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতেছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান নিশ্চিত করতে দ্রুত প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের শূন্য পদ পূরণে সরকার কার্যকর ব্যবস্থা নেবে এমনটা প্রত্যাশা আমাদের। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুশিক্ষিত আলোকিত মানুষ গড়ে তুলতে হলে প্রাথমিক স্তরে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।