সিলেটে মারধরের মামলার পর কলেজ শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে হত্যা

কয়েকদিন আগে আরিফের ওপর হামলার অভিযোগে সোমবার শাহপরাণ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছিল তার পরিবার।

সিলেট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Nov 2023, 08:09 AM
Updated : 21 Nov 2023, 08:09 AM

সিলেট নগরীতে এক কলেজ শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পরিবারের দাবি- স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের লোকজনের হাতে মারধরের শিকার হওয়ার পর মামলা করায় এবার তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

সোমবার রাতে সাড়ে ১১টার পরে নগরীর টিবি গেইট এলাকার ওয়াকওয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার আজবাহার আলী শেখ।

নিহত আরিফ আহমদ (১৯) ওই এলাকার ফটিক মিয়ার ছেলে ও স্থানীয় বেসরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র।

আজবাহার আলী শেখ জানান, “আরিফ আহমদের ওপর হামলার পর গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত দেড়টার দিকে মারা যায় সে।

“কয়েকদিন আগে তার ওপর হামলার অভিযোগে সোমবার তার পরিবার নগর পুলিশের শাহপরাণ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছিল।”

নিহত আরিফের মায়ের দাবি, “কয়েকদিন আগেই বালুচর এলাকায় আরিফকে মারধর করে কাউন্সিলর হিরণ মাহমুদ নিপুর গ্রুপের কর্মীরা।

“তাদের বিরুদ্ধে মামলা করায় আমার ছেলেকে সবাই মিলে কুপিয়ে হত্যা করেছে। আরিফের চিৎকার শুনে বাসা থেকে বাইরে বের হয়ে দেখি কাউন্সিলর নিপুসহ তার কর্মীরা মিলে আমার ছেলেকে মারধর করছে।”

নিহতের মায়ের দাবি, হামলায় ওই কাউন্সিলর সরাসরি নেতৃত্ব দিয়েছেন।

এদিকে নিহত আরিফকে ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী দাবি করে সিলেট জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি নাজমুল ইসলাম রাতে গণমাধ্যমকে বলেন, “চার-পাঁচদিন আগে আরিফের ওপর হামলা করেছিল এলাকার কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসী।

সোমবার বিকালে আরিফ হামলার ঘটনায় নগরীর শাহপরান থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। এ ঘটনার জেরেই তার ওপর হামলা চালানো হয়। ”

এটাকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড দাবি করে নাজমুল বলেন, “এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে মঙ্গলবার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে পরবর্তী কর্মসূচি জানাবে জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগ।”

বালুচর এলাকার স্থানীয়রা জানান, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সিলেট সিটি করপোরেশনের ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হিরন মাহমুদ নিপু ও জেলা ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি নাজমুল ইসলামের কর্মীদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কয়েকদিন ধরে বিরোধ চলছিল।

এর জেরেই আরিফকে মারধর করা হয়েছিল। কয়েকদিন হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে এলাকায় ফিরলে সোমবার মামলা করে তার পরিবার।

এসব বিষয়ে বক্তব্য জানতে মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার পরে কাউন্সিলর হিরন মাহমুদ নিপুর ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে কল করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

উপ-কমিশনার আজবাহার আলী জানান, “ময়নাতদন্তের জন্য আরিফের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। তাকে হত্যার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’’

মঙ্গলবার ভোরে নগরীর পৃথক স্থানে অভিযান চালিয়ে বাচ্চু মিয়ার ছেলে রনি (২১) ও কামাল মিয়ার ছেলে মামুন মজুমদারকে (২৮) আটক করা হয়েছে বলেও জানান উপ-কমিশনার।