“মসজিদ ও মেহমান খানায় পরিবেশনের পাশাপাশি প্রতিদিন প্রায় ৪০ পরিবারে বাটিতে করে পৌঁছে দেওয়া হয় ইফতার।”
Published : 01 Apr 2024, 04:37 PM
ঘড়ির কাঁটায় তখন বেলা ৩টা; চুলা জ্বলে ওঠে কাঠের খড়ি দিয়ে জ্বালানো আগুনে। তাতে চাপানো হাঁড়িতে চলছে তেহারি রান্না। এ আয়োজন রোজাদারদের জন্য। ইফতারে তাদের পাতে এ খাবার উঠলে প্রশান্তি খুঁজে পান রাজশাহীর আজিজুল আলম বেন্টু।
হরগ্রাম মুন্সীপাড়া এলাকার বাসিন্দা বেন্টু রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তবে স্থানীয়ভাবে তিনি পরিচিত সমাজ সেবক হিসেবে।
নগরীর হরগ্রাম কোট স্টেশন মোড়ে দীর্ঘ এক যুগ ধরে রমজান মাসজুড়ে ইফতারের এই কার্যক্রম চালিয়ে আসা বেন্টু বলেন, রোজাদারদের ইফতার করানো একটা ইবাদত; যা সওয়াবের কাজ। তাই মনের আত্মতৃপ্তি আর সৃষ্টি কর্তাকে খুশি করতে রমজান মাসে ইফতার খানায় রোজাদারদের জন্য খাবারের আয়োজন হয়। সেখানে ৫০০ রোজাদারদের জন্য ইফতারি তৈরি হয় ব্যক্তিগত উদ্যোগে।
সেখানে ইফতার করেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। তাদের ইফতারের প্লেটে রাখা হয় খেজুর, কলা, শশা, জিলাপি, পেয়ারা, মালটা, তরমুজ, পেঁয়াজু, ছোলা, বেগুনি, তেহারি আর আমের জুস।
বেন্টুর নিজ বাড়িতে তৈরি এ ইফতারি তিন ভাগ করা হয়। এক ভাগ যায় বাড়ির পাশে মদিনার আদলে নিজের তৈরি বাইতুল আমিন জামে মসজিদে। আর আরেক ভাগ পাঠানো হয় তার নিজের গড়া সামাজিক সংগঠন আমরা নতুন প্রজন্মের কার্যালয়ের মেহমান খানায় পথচারী মেহমানদের জন্য। আরেকভাগ পাড়ার মধ্যবিত্তদের বাড়ি বাড়ি পাঠানো হয় বলে জানান তিনি।
ইফতার তৈরি ও পরিবেশনে এলাকার তরুণরা স্বেচ্ছাশ্রম দেন জানিয়ে বেন্টু বলেন, তাদের সঙ্গে নিজেও কাজ করেন। এছাড়া পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ইফতার তৈরি করেন স্ত্রী নাসিমা আলম লিপি।
“মসজিদ ও মেহমান খানায় পরিবেশনের পাশাপাশি প্রতিদিন প্রায় ৪০ পরিবারে বাটিতে করে পৌঁছে দেওয়া হয় ইফতার। বিশেষ করে যাদের ইফতার কেনার সমর্থ নেই, এ রকম পরিবার খুঁজে বের করে তাদের বাড়িতে ইফতার পাঠানো হয়।”
বেন্টু বলেন, “নিজে রোজা করা এবং অন্যকে ইফতার করানো, সমপরিমাণ সাওয়াবের কথা বলা হয়েছে হাদিসে। সবমিলিয়ে এটা একটা ভালো কাজ; আর ভালো কাজ করলে তো আত্মতৃপ্তি তো থাকেই।”