যান্ত্রিক ত্রুটিতে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন বন্ধ

ডিজিএম  বলেন, “বর্তমানে কেন্দ্রটিতে কয়লা সংকট নেই, পর্যাপ্ত কয়লা মজুদ রয়েছে।”

বাগেরহাট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 April 2023, 04:13 PM
Updated : 17 April 2023, 04:13 PM

যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দুই দিন ধরে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ মালিকানায় নির্মিত বাগেরহাটের রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে।

শনিবার রাতে বন্ধ হওয়ার পর সোমবার দুপুর পর্যন্ত পুনঃউৎপাদনে যেতে পারেনি কয়লাভিত্তিক এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি।

দুপুরে বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইন্ডিয়া পার্টনারশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফপিসিএল) উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) আনোয়ারুল আজিম সাংবাদিকদের বলেন, “কারিগরি ত্রুটির কারণে ১৫ এপ্রিল রাত থেকে কেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। আশা করি, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে আবারও উৎপাদন শুরু করা হবে।”

এদিকে হঠাৎ করে রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হওয়ায় প্রভাব পড়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহের ওপর।

এর আগে এ বছর ১৪ জানুয়ারি ডলার সংকটের কারণে আমদানি জটিলতায় কয়লার অভাবে একবার উৎপাদন বন্ধ হয়েছিল কেন্দ্রটির।

তবে এখন কয়লার সংকট নেই জানিয়ে ডিজিএম আনোয়ারুল আজিম বলেন, “বর্তমানে কেন্দ্রটিতে কয়লা সংকট নেই। কেন্দ্রে পর্যাপ্ত কয়লা মজুদ রয়েছে। বেশকিছু কয়লা আমদানি প্রক্রিয়ায় রয়েছে, যা এখন পথে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে সমুদ্র পথে বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য আরও কয়লা আসছে।”

২০১০ সালের আগস্ট মাসে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) এবং ভারতের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন জাতীয় তাপবিদ্যুৎ করপোরেশনের (এনটিপিসি) মধ্যে সুন্দরবনের কাছে বাগেরহাটের রামপালে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিষয়ে সমঝোতা হয়।

এর দুই বছর পর ২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি এনটিপিসির সঙ্গে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণে চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (প্রাইভেট) লিমিটেড (বিআইএফপিসিএল) নামে কোম্পানি গঠিত হয়।

Also Read: এক মাস পর আবার চালু হচ্ছে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র

Also Read: ডলার সংকটে কয়লার আমদানি নেই, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ

তবে শুরু থেকেই সুন্দরবনের কাছে কয়লাভিত্তিক এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিবেশগত নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে আসছেন পরিবেশবাদীরা।

বিআইএফপিসিএল কোম্পানির অধীনে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের 'মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্ট' মূলত রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নামে পরিচিত।

রামপাল উপজেলার রাজনগর ও গৌরম্ভা ইউনিয়নের সাপমারী কৈ-গর্দ্দাশকাঠি মৌজায় এক হাজার ৩৪ একর জমি অধিগ্রহণ শেষে তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ শুরু হয়। গত বছরের ১১ জুলাই বয়লার স্টিম ব্লোয়িং স্থাপন করা হয়। এক মাস পরে ১৪ আগস্ট টারবাইন-এ স্টিম ডাম্পিং এবং একদিন পরে ১৫ আগস্ট জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ সরবরাহ (ট্রান্সমিশন) শুরু করা হয়।

২০২২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ভারত সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যৌথভাবে কয়লাচালিত মৈত্রী পাওয়ার প্ল্যান্টের (৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার) ইউনিট-১ এর উদ্বোধন করেন।

১৭ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করে বাগেরহাটের কয়লাভিত্তিক রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র। পরে ডলার সংকটে কয়লা আমদানি করতে না পারায় বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাওয়ার ২৭ দিনের মাথায় ১৪ জানুয়ারি বন্ধ হয় উৎপাদন।

পরে চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে আবার বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ শুরু করে কেন্দ্রটি।