গাজীপুর নগরীতে নিজ বাড়ি থেকে হাত-পা বাঁধা এক বিউটিশিয়ানের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুইজনকে আটক করা হয়েছে।
রোববার রাতে নগরীর আদাবই সাইনবোর্ড এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয় বলে গাজীপুর সদর থানার ওসি মো. জিয়াউল ইসলাম জানান।
নিহত ২৯ বছর বয়সি এই নারী প্রায় তিন বছর ধরে ‘রাজকন্যা বিউটি পার্লার’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছিলেন।
এ ঘটনার পর থেকে তার স্বামী মৃদুল (৩২) পলাতক রয়েছেন। মৃদুল গাজীপুর সদর উপজেলার বাড়িয়া ইউনিয়নের খুদেবরমী এলাকার নিতাই ঘোষের ছেলে।
নিহত নারীর বাবা সাংবাদিকদের জানান, প্রায় দেড় বছর আগে তার মেয়ে ও মৃদুল প্রেম করে বিয়ে করেন। বিয়ের আগে মৃদুল ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলমান হন। তবে এটি ছিল তার মেয়ের দ্বিতীয় বিয়ে। মেয়ের আগের সংসারে পাঁচ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে।
“বিয়ের পর স্বামীসহ আগের পক্ষের মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়িতেই থাকতেন মেয়ে। সেখানে থেকে বিউটি পার্লারের কাজ করতেন। বিয়ের পর মৃদুলকে স্থানীয় একটি কারখানায় চাকরি নিয়ে দেন তার শ্বশুর।
“সেখানে এক মাস পরেই চাকরি ছেড়ে দেন মৃদুল। এরপর থেকে মৃদুল তার স্ত্রীর কাছে বিভিন্ন সময় টাকা দাবি করত। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকত।”
নিহতের বাবা আরও বলেন, বিভিন্ন সময় কলহের জেরে মৃদুল আগেও তার মেয়েকে দুইবার হত্যার চেষ্টা করেন। নির্যাতন সহ্য করেও মেয়ে মৃদুলের সঙ্গে সংসার চালিয়ে যেতে থাকেন। সম্প্রতি তারা আলাদা থাকা শুরু করেন।
রোববার রাতে মেয়ের ঘরে খাবার দিতে গিয়ে তার হাত-পা বাঁধা মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন তার মা, বলেন নিহতের বাবা।
খবর পেয়ে পুলিশ রাত ১০টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠায়।
পুলিশ জানায়, পারিবারিক বিরোধের জেরেই তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিহতে মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
এ ঘটনায় সোমবার দুপুরে তার মা বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা করেছেন।
ওসি জিয়াউল জানান, এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার দুই নিকটাত্মীয়কে আটক করা হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেনি পুলিশ। আর তার স্বামীকেও ধরতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।