গত বছরের ৫ মে নেত্রকোণার মোহনগঞ্জের রাজীব নিখোঁজ হন; দুদিন পর তার লাশ পাওয়া যায়।
Published : 02 Nov 2022, 11:18 AM
‘মাদক ব্যবসায়ের বিরোধিতা করায়’ সাড়ে চার হাজার টাকার ভাড়াটে খুনি দিয়ে নেত্রকোণায় মোটরসাইকেল চালক রেজাউল করিম রাজীবকে হত্যা করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই কার্যালয়ে মঙ্গলবার রাতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহীনুর কবির।
এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক আসামি নেত্রকোণা বিচারিক হাকিম আদালতে জবানবন্দি দেন।
নিহত রাজীব (২২) নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ পৌরসভার দেওথান এলাকার বাচ্চু মিয়ার ছেলে। ভাড়ায় মটরসাইকেল চালাতেন তিনি।
রাতে জেলা পিবিআই কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহীনুর কবির সাংবাদিকদের বলেন, গত বছরের ৫মে রাত ১০টার দিকে মোটরসাইকেলে ভাড়ায় যাত্রী নিয়ে মোহনগঞ্জ থেকে আদর্শনগরের উদ্দেশ্যে রওনা হন রাজীব। এরপর আর তার খোঁজ মেলেনি। ৭ মে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ভাটিয়া গ্রামের পুকুরপাড়ে মাটিচাপা বস্তা দেখে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। মাটি সরিয়ে সিমেন্টের বস্তায় ভরা লাশ উদ্ধার করে মোহনগঞ্জ থানা পুলিশ।
ঘটনার দুইদিন পর (৯ মে) নিহত রাজীবের বাবা মো. বাচ্চু মিয়া মোহনগঞ্জ থানায় সন্দেহজনক ১২ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
শুরুতে এ মামলার তদন্ত করে মোহনগঞ্জ থানা পুলিশ। পরবর্তীতে পিবিআই মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে।
পিবিআই জানায়, এই খুনে জড়িত সন্দেহে চার জনকে তারা গ্রেপ্তার করেছে। এরা হলেন মোহনগঞ্জের হাটনাইয়া গ্রামের দেলোয়ার হোসেন দিলু (৩৭), মো. মাহবুব (২১), মো. যতন মিয়া (৪২) ও ময়মনসিংহের তারাকান্দার নলদীঘির (পূর্বপাড়া) সিরাজুল।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহীনুর কবির বলেন, রাজীবের গলায় পেঁচানো শার্টের সূত্র ধরে তদন্ত কাজ এগিয়ে যায়। শার্টের মালিককে ধরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাকিদের গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে এই হত্যা সংঘটনের পুরো বিষয়টি তারা জানায়।
জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে শাহীনুর বলেন, হাটনাইয়া গ্রামের মাহবুব ও আবুল হোসেন তাদের মাদক ব্যবসার ইয়াবা মোটরসাইকেলে আনানেওয়া করার জন্যে রাজীবকে বললে তাতে রাজীব রাজি হননি।
“এই কারণে তারা ঢাকা থেকে বাড়িতে আসা হত্যা ও অস্ত্রের একাধিক মামলার আসামি দিলুকে সাড়ে চার হাজার টাকায় রাজীবকে হত্যার জন্যে ভাড়া করেন।”
পরিকল্পনা অনুয়ায়ী ২০০ টাকায় রাজীবের মোটরসাইকেল ভাড়া করে একটি ফার্মে নিয়ে আট জনে মিলে রাজীবকে হত্যা করে বলে এই পিবিআই কর্মকর্তা জানান।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, ৩১ অক্টোবর ঢাকার কামরাঙ্গিরচর থেকে ‘ভাড়াটিয়া খুনি’ দিলুকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেখানে তিন পরিচয় গোপন করে রিকশা চালাতেন।
“দিলু আদালতে জবানবন্দি দিয়ে চাঞ্চল্যকর এই হত্যা সংঘটনের পুরোটা খুলে বলেছেন। বাকিদের ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে।”
প্রেস ব্রিফিংয়ে জেলা পিবিআই কর্মকর্তা অভি রঞ্জন দেব, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোহাম্মদ জাকির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।