“দুর্ঘটনার পর ময়মনসিংহ-শেরপুর সড়কের দুই পাশে অসংখ্য গাড়ি আটকা পড়ে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।”
Published : 16 Feb 2024, 08:17 PM
ময়মনসিংহে সড়ক দুর্ঘটনায় সাতজনের মৃত্যুর ঘটনায় আটোরিকশা চালকের গাফিলতি রয়েছে বলে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন। এ ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন।
শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে সদর উপজেলার শেরপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়কের আলালপুর এলাকার বড়বিলায় বাসের সঙ্গে সংঘর্ষে নারী ও শিশুসহ অটোরিকশার সাত আরোহীর মৃত্যু হয়।
দুর্ঘটনার পরপরই ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ঘটনাটি তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানান তিনি।
দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আলালপুর এলাকার জিয়াউর রহমান বলেন, “ফুলপুর থেকে আসা সিএনজি চালিত অটোরিকশাটির চালক একটি গাড়িকে ওভারটেক করতে যায়। আর তখনই শেরপুরগামী আদিল পরিবহনের একটি বাসের সামনে পড়ে যায়। বাসটি অটোরিকশাটিকে টেনে-হিঁচড়ে প্রায় ২০০ গজ সামনে নিয়ে যায়। এ সময় অটোরিকশাটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়।
“পরে বাসের চালক দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও কিছুদূর গিয়েই থেমে যায়। সেখানে বিক্ষুদ্ধ লোকজন বাসটিতে ভাঙচুর চালায়।”
দুর্ঘটনার পর দ্রুতগতির বাসটি ঘটনাস্থল থেকে একটু দূরে গিয়ে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে থেমে যায় বলে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “স্থানীয় লোকজন বাসটি আটক করতে পারলেও চালক পালিয়ে গেছে। দুর্ঘটনার পর ময়মনসিংহ-শেরপুর সড়কের দুই পাশে অসংখ্য গাড়ি আটকা পড়ে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশের সহায়তায় বেলা দেড়টার দিকে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।”
এ দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন-ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার রামভদ্রপুর আশাবট গ্রামের করিম মাস্টারের বড় ছেলে কাপড় ব্যবসায়ী বাবলু আহম্মেদ (৪৫), তার স্ত্রী শিলা আক্তার (৩৫), তাদের ছেলে মো. সাদমান (৯), ধোবাউড়া উপজেলার উত্তর ডোমঘাটা গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে গোলাম মোস্তফা (৫০) ও ফুলপুর উপজেলার দিওপুর্বপাড়া গ্রামের সাহাবুদ্দিনের ছেলে অটোরিকশাচালক আলামিন হোসেন (২৫) ও একই উপজেলার সিংহেরশ্বর গ্রামের আব্দুল বারেক মন্ডল (৫৫)।একজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
তাদের মধ্যে বাবলু পরিবার নিয়ে বোনের শ্বশুর মুনসুর আলীর জানাজায় অংশ নিতে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চরঈশ্বরদীয়া গ্রামে যাচ্ছিলেন। তার আরও দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে।
পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস নিহতদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
ময়মনসিংহে বাসচাপায় প্রাণ হারানো বাবুলের তিন সন্তান এখন ‘অথৈ সাগরে’