কক্সবাজারের কলাতলী এলাকার আবাসিক হোটেল সি আলিফ এর ৪১১ নম্বর কক্ষ থেকে সুমা ও তার মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
Published : 18 Feb 2023, 12:38 PM
আট মাসের মেয়েকে বালতির ভিতরে মৃত অবস্থায় পেয়ে রাগের মাথায় স্ত্রীকে হত্যা করেছেন বলে দাবি করেছেন কক্সবাজারের হোটেল থেকে দুজনের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেপ্তার জেমিন বিশ্বাস।
শনিবার ভোর সাড়ে ৩টার দিকে তিনি গ্রেপ্তার হওয়ার পর পুলিশের কাছে এই স্বীকারোক্তি দিয়েছেন বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের বাকলিয়া থানার ওসি মো. আব্দুর রহিম।
গ্রেপ্তার জেমিন বিশ্বাস (৪০) চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার বৈন্ডব এলাকার দুলাল বিশ্বাসের ছেলে। নিহতরা হলেন- জেমিনের স্ত্রী সুমা দে (৩৬) এবং তাদের আট মাস বয়সি এক মেয়ে। সুমা দে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার নাথপুরা এলাকার শচীন্দ্র দের মেয়ে।
শুক্রবার দুপুর আড়াইটায় কক্সবাজারের কলাতলী এলাকার আবাসিক হোটেল সি আলিফ এর ৪১১ নম্বর কক্ষ থেকে সুমা ও তার মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
ঘটনার পর থেকে অপর দুই সন্তানকে নিয়ে পলাতক ছিলেন জেমিন।
ওসি আব্দুর রহিম জানান, শুক্রবার মধ্যরাতে পলাতক জেমিন বিশ্বাস চট্টগ্রামের বাকলিয়া থানাধীন শাহ আমানত সেতু সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে বলে তথ্য জানায় কক্সবাজার জেলা পুলিশ। ওই তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার ভোরে সেতু সংলগ্ন মার্শা পরিবহন সার্ভিসের কাউন্টারের সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জেমিন স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তার বরাতে ওসি বলেন, জেমিন ও সুমা দম্পতি তিন সন্তানকে নিয়ে মঙ্গলবার সকালে কক্সবাজার বেড়াতে এসে সাগরপাড়ের আবাসিক হোটেল সী আলিফে উঠেন।
সুমা আগে থেকেই রক্তচাপজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন। শুক্রবার সকালে ঘুম থেকে উঠার পরও তিনি অসুস্থবোধ করলে তাকে শুয়ে থাকতে পরামর্শ দেন জেমিন।
পরে জেমিন প্রথম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক মেয়ে এবং সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া আরেক মেয়েকে নিয়ে নাস্তা আনতে হোটেল থেকে বের হন। এর কিছুক্ষণ পর হোটেলের অভ্যর্থনা কক্ষে দুই সন্তানকে রেখে স্ত্রীকে দেখার কথা বলে হোটেল কক্ষে যান।
"জেমিন হোটেল কক্ষে ফিরে স্নানকক্ষের বালতির পানিতে ছোট মেয়েকে মৃত অবস্থায় এবং স্ত্রীকে উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় রাগের মাথায় জেমিন তার স্ত্রীকে কাঁধে হাত দিয়ে ঘুষি মারেন এবং পরে গলা চেপে হত্যা করেন।"
ওসি আরও জানান, ঘটনার পর জেমিন বিশ্বাস দুই সন্তানকে নিয়ে বাঁশখালী ফিরে আসেন। সেখানে জনৈক আত্মীয়ের বাড়িতে সন্তানদের রেখে শুক্রবার রাতে আত্মগোপনের উদ্দ্যেশে চট্টগ্রাম রওয়ানা হন।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, শনিবার ভোর রাতে পালিয়ে যাওয়ার সময় জেমিন বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রামের বাকলিয়া থানা পুলিশ। তারা গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে কক্সবাজার জেলা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। তাকে কক্সবাজার নিয়ে আসা হচ্ছে।
জেমিন বিশ্বাসকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ঘটনার ব্যাপারে বিস্তারিত গণমাধ্যমে জানানো হবে বলে জানান এসপি।
আরও পড়ুন