পুলিশ বাদী হয়ে করা এসব মামলায় ১১৬ জনের নাম উল্লেখ করে অসংখ্য জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
Published : 25 Jul 2024, 07:02 PM
নীলফামারী ও সৈয়দপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষের ঘটনায় চারটি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় এক সপ্তাহে ৫৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এর মধ্যে নীলফামারী সদরে একটি এবং সৈয়দপুর উপজেলায় তিনটি মামলা হয়েছে। পুলিশ বাদী হয়ে করা এসব মামলায় ১১৬ জনের নাম উল্লেখ করে অসংখ্য জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
জানা যায়, কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ডাকা ‘কমপ্লিট সাটডাউন’ কর্মসূচি চলাকালে গত ১৮ জুলাই সকাল ১০টার পর বিভিন্ন স্থান থেকে নীলফামারী শহরের পিটিআই মোড়ে জড়ো হয় শিক্ষার্থীরা।
এসময় শহীদ মিনার সড়কে ছয়টি মোটরসাইকেল এবং চৌরঙ্গী মোড়ে পুলিশ বক্স ভাঙচুর করা হয়। পরে আওয়ামী লীগের কার্যালয় লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোঁড়া এবং সেখানে জুয়েলারি সমিতির অনুষ্ঠানে চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করা হয়।
খবর পেয়ে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা রাস্তায় নামলে আন্দোলনকারীরা পিছু হটে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ও বাসভবনের প্রধান ফটক ভাঙচুর করে।
সেখানে পুলিশের বাধা পেয়ে পুনরায় পিটিআই মোড়ে অবস্থান নিয়ে পুলিশ, বিজিবি ও র্যাব সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে আন্দোলনকারীরা। এসময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে তারা।
পরে সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদুনে গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এ সংঘর্ষে ১০ পুলিশ সদস্য ও তিন গণমাধ্যমকর্মীসহ অন্তত ৩০ জন আহত হন।
সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এম আর সাঈদ বলেন, এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই সদর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা করেন সদর থানার এসআই বেলাল হোসেন। মামলায় ১৬ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত দুই হাজার ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. আকতার হোসেন বলেন, গত এক সপ্তাহে মামলার নামীয় ১০ জনসহ মোট ১৫ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকী আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে একই দিনে সৈয়দপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষের ঘটনায় সৈয়দপুর থানায় তিনটি মামলা করেছে পুলিশ। এসব মামলায় ১০০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে অসংখ্য জনকে।
পুলিশ জানায়, ১৮ জুলাই বেলা ১টার দিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা সৈয়দপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহরের পাঁচমাথা মোড়ে উপস্থিত হয়। এক পর্যায়ে আন্দোলনকারীদের মধ্যে থাকা নাশকতাকারী ও সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুঁড়তে থাকে।
তারা সেখানে থাকা পুলিশ বক্স ও দুইটি মোটরসাইকেল এবং জিআরপি মোড়ে দুইটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েক দফা সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদুনে গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এ সংঘর্ষে ট্রাফিক পুলিশের এক পরিদর্শকসহ ১৬ পুলিশ সদস্য আহত হন। এছাড়া আহত হয়েছেন অন্তত অর্ধশতাধিক মানুষ।
সৈয়দপুর থানার পরিদর্শক মো. শাহ আলম জানান, এই ঘটনায় সৈয়দপুর থানায় দায়ের করা তিন মামলায় গত এক সপ্তাহে মোট ৪৪ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।