ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় কুমিল্লার পুলিশ লাইন্স এলাকায় আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনায় করা মামলায় তাদের কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
Published : 21 Apr 2025, 05:48 PM
কুমিল্লায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলার অভিযোগে করা মামলায় জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ আওয়ামী লীগপন্থি ছয় আইনজীবীকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
সোমবার বেলা ৩টার দিকে কুমিল্লার জ্যেষ্ঠ জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ মাহাবুবুর রহমান তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) কাইমুল হক রিংকু।
কারাগারে যাওয়া আইনজীবীরা হলেন- কুমিল্লা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান লিটন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া, সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া এবং জাকির হোসেন।
এর মধ্যে এ এন এম মঈন এবং জিয়াউল হাসান চৌধুরী সোহাগ আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন।
পিপি রিংকু বলেন, ৩ অগাস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে কুমিল্লার পুলিশ লাইন্স এলাকায় আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ১১ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লা সদর উপজেলার ডুমুরিয়া চান্দপুর গ্রামের মো. আমির হোসেনের ছেলে মো. ইনজামুল হক রানা কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন।
মামলায় কুমিল্লা সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারসহ ২৬১ জনকে আসামি করা হয়। এ ছাড়া এই মামলায় কুমিল্লার আদালতের ২৬ আইনজীবীকে আসামি করা হয়। পরে ২৬ আইনজীবী উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেন।
জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সোমবার ২৪ আইনজীবী নিম্ন আদালতে হাজির হয়ে পুনরায় জামিন আবেদন করলে বিচারক ছয়জনের জামিন নামঞ্জুর করেন বলে জানান পিপি রিংকু।
এ ছাড়া বাকি ১৮ আইনজীবীকে চার্জশিট পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করে তদন্ত কাজে সহযোগিতা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের এই আইনজীবী।
এদিকে মামলার শুনানির সময় আদালতের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মী ও সাধারণ জনতা আসামিদের বিচার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় ৩ অগাস্ট কুমিল্লায় যে নারকীয় তাণ্ডব চালানো হয়েছে, আদালতের মাধ্যমে আসামিদের বিচার নিশ্চিতের দাবি জানান তারা।
সেইসঙ্গে আসামিদের বিচার নিশ্চিত করতে কোনো আইনজীবী যদি অসহযোগিতা করেন; তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া দাবি করেছেন ছাত্র-জনতা।
শুনানি শেষে আসামিদের কারাগারে নিয়ে যাওয়ার সময় বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা তাদের ওপর ডিম ছুড়ে মারেন। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় আসামিদের প্রিজন ভ্যানে করে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।